রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: ব্যবসার সূত্রে ফোনে আলাপ। সেখান থেকে প্রেম। দেড় বছর ধরে সম্পর্কের পর মন্দিরে নিয়ে গিয়ে যুবতীকে বিয়ে করেন পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরের বাসিন্দা দিলীপ সাঁতরা। কিন্তু নতুন বউ নিয়ে বাড়ি ফিরতেই পুত্রবধূকে গ্রহণ করতে নারাজ পরিবারের লোকজন। এদিকে শ্বশুরবাড়িতে প্রবেশ করার জেদে অনড় মহিলাও। সেই জেদের বশে তিনি ধরনা শুরু করেন। শেষমেশ পুলিশ ও স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে নতুন বউকে মেনে নিতে বাধ্য হয়েছেন শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। ঘটনা ঘিরে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত উত্তপ্ত হয়ে রইল পটাশপুরের দাইতলা বাজার এলাকা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পটাশপুর থানার দাইতলাবাজারে নিশিকান্ত সাঁতরা পেশায় ফল ব্যবসায়ী। তাঁর ছোট ছেলে দিলীপের স্ত্রী এবং দুই সন্তান রয়েছে। ব্যবসায়িক সূত্রে নদিয়ার মুরুটিয়া থানার শিকারপুর গ্রামের এক বিবাহিত যুবতীর সঙ্গে দিলীপের আলাপ হয় ফোনে। ওই যুবতীর নাম মণিকা ঘোষ। তাঁর অভিযোগ, সেই থেকে একাধিক তাঁদের মধ্যে দেখাসাক্ষাৎ হয়েছে। দিলীপ মনিকাকে জানিয়েছিলেন যে তাঁর প্রথম পক্ষের স্ত্রীর সঙ্গে মনোমালিন্য এবং সে অর্থে নিজেদের মধ্যে প্রায় কোনও সম্পর্কই নেই। মণিকাকে তিনি বিয়ের প্রস্তাবও দেন। রাজি হন মণিকা। গত শনিবার দিলীপ নদিয়ার করিমপুর কালীমন্দিরে ওই যুবতীকে বিয়ে করেন।
বিয়ের পরে গত বুধবার রাতে নববিবাহিত স্বামী-স্ত্রী পটাশপুর দাইতলাবাজারের বাড়িতে পৌঁছন। অভিযোগ, বাড়িতে তাঁদের দেখে দিলীপের পরিবারের লোকজন এবং তাঁর প্রথম স্ত্রী মণিকাকে মেনে নিতে চান না। শুরু হয় বাকবিতন্ডা। বুধবার রাতে দীর্ঘক্ষণ বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন মণিকা ঘোষ। খবর পৌঁছয় পটাশপুর থানায়। নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ তাঁকে রাতে থানায় নিয়ে আসে। সকালে মণিকা বাড়ি যাবেন বলে থানা থেকে বেরিয়ে শ্বশুরবাড়ির সামনে ধরনায় বসেন।
মণিকা ঘোষের অভিযোগ, ‘আমাকে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে এসে এখন দিলীপ আমাকে রেখে পালিয়ে গেছে। শ্বশুরবাড়ির লোকেরা আমাকে বাড়িতে ঢুকতে দিচ্ছে না। যতক্ষণ না বাড়িতে ঢুকতে দেবে, এখানে ধরনা দেব।’ এ বিষয়ে অভিযুক্ত যুবক দিলীপ সাঁতরা জানান ‘ফোনে মণিকার সঙ্গে আলাপ, পরে প্রেম হয়। ও-ই বিয়ের জন্য চাপ দিয়েছিল। তাই আমি শনিবার নদিয়ার করিমপুরে মন্দিরে গিয়ে ওকে বিয়ে করি। এখন পরিবারের লোকেরা তাঁকে মানতে চাইছে না। কী করব জানি না।’
পটাশপুর থানার পুলিশ জানায়, ‘ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোনও অভিযোগ আসেনি। আমরা খবর পেয়ে যুবকের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছি।’ পরে অবশ্য পুলিশের হস্তক্ষেপেই জট কাটে। এলাকাবাসীর চাপে নতুন বউয়ের জন্য দরজা খুলে দিতে বাধ্য হন শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.