রিন্টু ব্রহ্ম, বর্ধমান: মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে গুটখা-পানের পিকের দাগে অপরিষ্কার হয়ে গেল বর্ধমানের নবনির্মিত রেল উড়ালপুল। সাদা রংয়ের দেওয়ালের উপর লালের এই প্রলেপ বুঝিয়ে দিয়েছে, সচেতন হওয়া দূরের কথা, সুন্দরকে রক্ষা করতেও অনীহা রয়েছে অনেকের। সেতু পুরোদমে চালু হলে সৌন্দর্য কতটা বজায় রাখা যাবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
গত মঙ্গলবার রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় উদ্বোধন করেন এই রেল উড়ালপুলের। রেলের তরফেও এই সেতুর উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। সেই কারণে সেতুতে ওঠার পথগুলিতে ব্যারিকেড করে রাখা হয়। বুধবার বিকেলে তৃণমূল কর্মীরা রেলের ওই ব্যারিকেড সরিয়ে যান চালচল চালু করে দেয়। বাস, গাড়ি, মোটর বাইক, টোটো চলাচলও শুরু করে। সেতুর দু’ধারের মোটা রেলিং সাদা রং করা হয়েছে। উপরের মোজাইক করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে আধুনিক ডিজাইন। অনেকেই বাইক নিয়ে গিয়ে সেতুর উপরে সেলফিও তুলেছেন। আর তারই ফাঁকে পিক ফেলে সেতুর সৌন্দর্যকে নষ্ট করেছেন কেউ কেউ। একবারও সৌন্দর্যের না ভেবে কাটোয়ার বা দুর্গাপুরের দিকে দেওয়াল ভরতি করে ফেলা হয়েছে পানের পিক। গোটা উড়ালপুল ঘুরে দেখলে সেঞ্চুরি করবে সেই দাগ।
নবনির্মিত উড়ালপুলের সৌন্দর্য এইভাবে নোংরা করায় ক্ষোভপ্রকাশ করছেন
প্রশাসনিক আধিকারিক থেকে শহরের সাধারণ মানুষ প্রায় সকলেই। কিছুদিন আগে এমনই ছবি দেখা গিয়েছিল বর্ধমান স্টেশনে তৈরি হওয়া চলমান সিঁড়িতেও। বর্ধমান রাজ কলেজের ছাত্র মহম্মদ রোহিত বলেন, “আমার মনে হয় এই ঝুলন্ত সেতু আমাদের বর্ধমান শহরের গর্ব। তাই এর সৌন্দর্য ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা আমাদেরই কর্তব্য।” বর্ধমান শহরের বাণীপীঠ হাইস্কুলের শিক্ষক অনুপকুমার ভট্টাচার্য বলেন, “সরকার কিছু বানিয়ে দিলে তা আমাদেরই পরিষ্কার রাখতে হবে। কিন্তু মানুষই তা নষ্ট করছে। সবাইকেই সচেতন হতে হবে। অন্যদেরও সচেতন করতে হবে।” বর্ধমান পুরসভার আধিকারিক জয়রঞ্জন সেন বলেন, “বর্ধমান শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে আমরা নানা কর্মসূচি নিচ্ছি। মানুষদের সচেতন করছি। যেখানে সেখানে পান ও গুটখার পিক না ফেলারও অনুরোধ করা হচ্ছে।”
এর আগে উদ্বোধনের মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে পানের পিকে ভরে গিয়েছিল দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াক। যা নিয়ে উঠেছিল নিন্দার ঝড়। জরিমানা করারও ভাবনাচিন্তা করেছিল প্রশাসন। সাধারণ মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি যে এতটুকুও হয়নি তারই প্রমাণ নবনির্মিত উড়ালপুলে গুটখার দাগ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.