স্টাফ রিপোর্টার: ডেঙ্গুর মশা নিধনে এবার অসাধ্য সাধন করার লক্ষ্যে কলকাতা পুরসভা৷ কীভাবে? অনেকটা কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার মতো করে৷ এবার ‘মশাখেকো’ মশাকেই অস্ত্র বানিয়ে এডিস মশার লার্ভার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের চিন্তাভাবনা করছে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ৷ এই অসাধ্য সাধন করা গেলে কলকাতা থেকে নির্মূল হতে পারে ডেঙ্গু!
‘টক্সোরিঙ্কাইটিস’ নামে এই বিরল প্রজাতির এক মশার লার্ভার সন্ধান মিলেছে কলকাতার অন্দরেই৷ যার পরিচয় ‘বন্ধু মশা’৷ সোমবার রাজভবনে ডেঙ্গুর মশা নিয়ে সচেতনতা অভিযানে গিয়ে এই মশার লার্ভার সন্ধান পান স্বাস্থ্য বিভাগের পতঙ্গবিদরা৷ রাজভবনের ন’নম্বর গেটের বাঁদিকের বাঁশঝাড়ে এই মশার লার্ভার উপস্থিতি লক্ষ্য করেন কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাস৷ তিনিই মেয়র পারিষদকে বিষয়টি জানান৷ এডিস মশার লার্ভাও ছিল সেখানে৷ শুধুমাত্র ‘টক্সোরিঙ্কাইটিস’-এর প্রভাবে বাড়তে পারেনি ডেঙ্গু৷
এদিন ‘টক্সোরিঙ্কাইটিস’ মশার লার্ভাকে এডিস মশার লার্ভা থাকা পাত্রে ছাড়া হয়৷ দেখা যায় কয়েক মুহূর্তে এডিস মশার লার্ভা খেয়ে সাফ করে দিয়েছে ‘টক্সোরিঙ্কাইটিস’ মশার লার্ভা৷ এরপরই সিদ্ধান্ত হয় ‘টক্সোরিঙ্কাইটিস’ মশার কিছু লার্ভা সংগ্রহ করে নিয়ে যাওয়া হবে পুরসভার মশা গবেষণাগারে৷ এই বিষয়ে পুরসভার পতঙ্গবিদ দেবাশিসবাবু জানান, “টক্সোরিঙ্কাইটিস মশার লার্ভা গবেষণাগারে তৈরি করা যায় না৷ এরা মানুষকে কামড়ায় না৷ এদের প্রবোসিস ৯০ ডিগ্রি কোণে নিচের দিকে থাকে৷ কোনও রক্ত না খেয়েই এই লার্ভা পরিপুষ্ট হতে পারে৷ বদলে অন্য মশার লার্ভা খায় এরা৷”
তবে সমস্যা হল, গবেষণাগারে এই মশার লার্ভা চাষ সম্ভব নয়৷ কারণ এই মশার লার্ভা তৈরি করতে গেলে তার আগে ডেঙ্গুর মশার লার্ভা তৈরি করতে হবে৷ যা বিপজ্জনক৷ এই ‘টক্সোরিঙ্কাইটিস’ মশার লার্ভা অন্য মশার লার্ভা, গাছের পচা অংশ, জলজ পতঙ্গ খায়৷ এই মশার লার্ভা তৈরির উপযুক্ত পরিবেশও প্রয়োজন৷ প্রায় ৯০ রকমের প্রজাতির বন্ধুমশা রয়েছে৷ তাদের অবস্থান খুঁজে পাওয়া অবশ্য বেশ কঠিন৷ পুর স্বাস্থ্যকর্তা জানিয়েছেন, এতদিন ধরে শহরের নানা জায়গায় ডেঙ্গুর অভিযানে গিয়ে এই প্রথমবার রাজভবন থেকে ‘টক্সোরিঙ্কাইটিস’ বন্ধুমশার খোঁজ মিলল৷ এই মশার লার্ভা প্রতিদিন ৪০-৫০টি এডিস মশার লার্ভা খেতে পারে৷ ‘টক্সোরিঙ্কাইটিস’ মশার লার্ভা বেঁচে থাকে ২৮ দিন পর্যন্ত৷ হাওয়াই দ্বীপে ‘টক্সোরিঙ্কাইটিস’ মশার লার্ভা প্রজননের চেষ্টা করেছিল আমেরিকা৷ তবে সাফল্য আসেনি৷ কোনওভাবে সেই অসাধ্যসাধন হলে ডেঙ্গু নিয়ে দুশ্চিন্তা ঘুচবে সাধারণ মানুষের৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.