অর্ণব আইচ: শুধু জাল পাসপোর্ট নয়, অবৈধভাবে সীমান্ত পার করানোর ব্যবসা ছিল সমরেশ বিশ্বাসের। কাঁটাতার টপকে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের এদেশে আনার পর তাদের প্রয়োজনীয় ‘বৈধ’ নথি বানিয়ে দিত সমরেশের চক্র। গোটা প্রক্রিয়া মসৃণভাবে পরিচালনা করতে দুদেশেই সাব এজেন্ট নিয়োগ করেছিল সে। ক্রমেই রহস্যের শিঁকড়ে পৌঁছছেন তদন্তকারীরা।
পিঁয়াজের খোসার মতো ধীর ধীরে জাল পাসপোর্ট রহস্যের জাল ছাড়াচ্ছেন গোয়েন্দারা। আর তাতেই উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তকারীদের দাবি, চক্রের মাস্টার মাইন্ড ‘পাসপোর্ট’ সমরেশ বিশ্বাসের শিঁকড় সীমান্তের ওপারে। সে কাঁটাতার পেরিয়ে এসে এ দেশে এসেছিল। যদিও সে কথা মানতে নারাজ অভিযুক্ত। জেরায় সমরেশ দাবি করেছে, তার বাবা-মা বাংলাদেশের নাগরিক হলেও তার জন্ম এপারে। যা মানতে নারাজ পুলিশ। সীমান্ত পারাপার করানোর ব্যবসা দিয়েই তার হাতেখড়ি!
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, সীমান্তের নজরদারি এড়িয়ে নিরাপদে বাংলাদেশের নাগরিকদের এপারে নিয়ে আসার বন্দোবস্ত করত সমরেশ। বিনিময়ে মোটা টাকার লেনদেন হত। সীমান্ত পেরনোর পর অনুপ্রবেশকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দিতে কাজ করত বিশেষ নেটওয়ার্ক। বসিরহাট, বনগাঁয় সমরেশের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ চার সহযোগীকে নিয়ে তৈরি হয়েছিল এই চতুষ্কোণ জাল। গোটা নেটওয়ার্ক চালাতে দুই দেশেই একাধিক এজেন্ট, সাব এজেন্ট নিয়োগ করেছে সমরেশ। প্রতিটি কাজের জন্য আলাদা-আলাদা লোক ছিল।
একা সমরেশ নয়, তার স্ত্রী রেখা বিশ্বাসও পাসপোর্ট জালিয়াতিতে যুক্ত। তার গতিবিধিও তদন্তকারীদের নজরে। তদন্তকারীরা বলছে, ক্যুরিয়ার হিসেবে কাজ করত রেখা। বসিরহাট, বনগাঁ-সহ একাধিক পাসপোর্ট সেবাকেন্দ্রে অবাধ যাতায়াত ছিল তার। নথি পৌঁছে দেওয়া থেকে পাসপোর্ট ডেলিভারি- সবটাই করত স্বামী সমরেশের নির্দেশ মেনে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.