Advertisement
Advertisement

Breaking News

প্রার্থীতালিকায় নাম থাকবে তো? ভোটের আগে জ্যোতিষীই ভরসা নেতাদের

জ্যোতিষীর কথা মতো অনেকে পরছেন তাবিজ-কবজও৷

Netas seek Astrologer's guidance for LS polls
Published by: Sayani Sen
  • Posted:March 12, 2019 9:36 am
  • Updated:March 12, 2019 9:36 am  

নব্যেন্দু হাজরা: দাদা এবার প্রার্থী হচ্ছেন তো? দেখুন না মঙ্গলবার দাদার দিনটা শুভ কি না! শুনছি ওইদিনই নাকি প্রার্থীদের নাম ঘোষণা হবে। দাদা কোন রংয়ের পাঞ্জাবি পরে এবার প্রচার করবে? মানে কোন রংটা শুভ একটু বলে দিন না। খুব টেনশনে আছি। ক’দিন ধরেই ‘দাদা’-র শরীর খারাপ যাচ্ছে। ডাক্তার দেখিয়েছে। কিন্তু জ্বরটা কমছে না। ভোট প্রচারের তো একটা ধকল আছে না কি! একটা পাথর বলে দিন না, যাতে এই কয়েক মাস দাদার শরীর খারাপ না হয়! প্রার্থী তালিকা এখনও ঘোষণা হয়নি। কে প্রার্থী হবেন তা নিয়ে চলছে দড়ি টানাটানি। তারই মধ্যে অনুগামীদের ভিড় জ্যোতিষীর দপ্তরে। মনের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাটিয়ে কোনওভাবে যদি ‘ভাগ্য বদলে’ দাদার নাম প্রার্থী তালিকায় ঢুকিয়ে দেওয়া যায়! এমনকী দল-বদলাচ্ছে কে? তাঁর সন্ধানেও হানা গণৎকারের চেম্বারে। যদি একটু আগে আভাস পাওয়া যায়!
ডান-বাম-রাম বা হাতের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম তৈরি হয়ে গিয়েছে আগেই। কিন্তু ঘোষণা তো হয়নি। তাই আগেভাগে নাম জানতে একেবারে জ্যোতিষের দরবারে পতাকাধারীরা। সামান্য কিছু তুকতাক করে যদি নামের হেরফের ঘটানো যায় তালিকায়। “কী করব, সারা বছর ধরে দলটা করি। ‘দাদা’র টিকিট পাওয়ার জন্য একটু না হয় জ্যোতিষের কাছেই এলাম।”-সোমবার উত্তর কলকাতার এক জ্যোতিষীর চেম্বার থেকে বেরনোর সময় বলছিলেন শাসক দলের এক অনুগামী। তাবিজ-কবজ কিছু একটা করে ‘দাদা’কে জেতাতে জানপ্রাণ বাজি রাখতে রাজি মেজো-সেজো নেতারা।

[নির্বাচনী আচরণবিধি মানছে না তৃণমূল, কমিশনের কাছে নালিশ বিজেপির]

হরস্কোপের ভাল-মন্দ বা সংখ্যাতত্ত্বের বিচার করে ‘একটু ভাগ্য’ বদলানোর এমন মোক্ষম সুযোগ হাতছাড়াও করতে চান না জ্যোতিষীরা। তাই রাজনৈতিক দলের কর্মীদের সামলাতে একেবারে কম্পিউটার খুলে আগে থেকেই প্রার্থী তালিকায় ‘ভেসে থাকা’ নামের ভাল-মন্দ বিচারে ব্যস্ত তাঁরা। গণৎকার বলেছেন, আগামী ১৬ তারিখটা প্রার্থীর জন্য শুভ। তাই ওই দিন থেকে প্রচার শুরু করলে রেকর্ড ভোটে জিতবেন প্রার্থী। সেই কথা মেনে ওই দিনটাকেই বেছে রেখেছেন উত্তরবঙ্গে বিজেপির এক পদপ্রার্থী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই নেতা বলেন, “পাঞ্জাবির রং তো আমাদের গেরুয়াই। কিন্তু প্রচারে কোনও কোনও দিন বেগুনি পরব। আমি যাঁকে মানি তিনি বলে দিয়েছেন।” রাজ্যের শাসক দলের বহু সেজো-মেজো নেতারাও ছুটেছেন তাবিজ-কবজের সন্ধানে। নিজের না হোক, নিজের নেতাকে সাংসদ দেখতে চেষ্টার কসুর করছেন না। হুগলির এক কংগ্রেস নেতা যেমন নিজের মনের মতো প্রার্থী এবার ভোটে টিকিট পাবেন কি না জানতে মাস দুয়েক আগেই ছুটেছিলেন এক ‘গুরুজি’-র কাছে। তাঁর কথায় আঙুলে ধারণ করেছেন গোমেদ। কানে কানে অনেকেই সিদ্ধমন্ত্রও নিয়ে এসেছেন। রোজ সকালে সময় মেনে জপ করছেন তা। শুধু নেতারাই নন। অনেক সেলিব্রিটিও ইতিমধ্যেই নিজেদের ভাগ্য জানতে ঠিকুজি জমা দিয়েছেন জ্যোতিষের দরবারে। কারণ শাসক-বিরোধী সব দলের প্রার্থী তালিকাতেই রয়েছেন একাধিক সেলিব্রিটি। কী করলে মন জেতা যাবে জনগণের, টোটকা নিতে ব্যস্ত তাঁরা।

Advertisement

[তৃণমূলের প্রার্থীতালিকায় চমক, থাকছেন একাধিক সুপারস্টার]

উত্তর কলকাতার জ্যোতিষ শাস্ত্রী শ্রী ভাস্কর বলেন, “প্রত্যেকেরই একটা দশা থাকে। সেটা বিচার করতে হয়। একটা দলের মূল যে নেতা বা নেত্রী তাঁর ভাগ্যটা একবার দেখিয়ে নিলে ভাল হয়। কারণ তার উপরই অনেক কিছু নির্ভর করে। কোন তারিখে জন্ম সেটা বললে আমরা সংখ্যাতত্ত্ব বিচার করে বলে দেব, কবে মনোনয়ন জমা দিলে তাঁর জয় নিশ্চিত।” দক্ষিণ কলকাতার অন্য জ্যোতিষী শ্যামলী শাস্ত্রীর যেমন দাবি, পুরোটাই সংখ্যাতত্ত্বের খেলা। তিনি বলেন, “যদি কেউ আমায় এসে বলেন তাঁর নাম প্রার্থীতালিকায় আছে কি না, আমি হরস্কোপ দেখে তা বলে দিতে পারি। এমনকী খারাপ সময় কীভাবে কাটাতে পারবেন, তাও বলতে পারব। প্রতিটি গ্রহের একটা শুভ রং থাকে। সেটাও বিচার করে জ্যোতিষী বলতে পারেন কোন রংয়ের পোশাক পরে মনোনয়ন জমা দিলে তিনি জিতবেন। অনেকেই তো আসেন জানতে।” ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে তাই ভোটের অনেক আগে থেকেই জ্যোতিষে বাজি রাজনীতির কেষ্ট-বিষ্টুরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement