সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: বাঘমুন্ডির ‘বাঘ’ হতে পারলেন না নেপাল মাহাতো৷ পুরুলিয়া কেন্দ্রের বাঘমুন্ডি আসনে লিড তো পেলেনই না, পিছিয়ে চলে গেলেন একেবারে তিন নম্বরে। বিজেপির জয়ী প্রার্থী জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর থেকে তিনি পিছিয়ে ৭০,৭৯৪ ভোটে। নিজের বিধানসভা কেন্দ্রেই পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেসের সভাপতি তথা বিধানসভায় কংগ্রেসের ডেপুটি লিডার নেপাল মাহাতোর এহেন বিপর্যয়ে মাথায় হাত জেলার কংগ্রেস কর্মীদের।
কোন রাজনৈতিক কৌশলে আগামী বিধানসভা ভোটে নেপাল মাহাতো এই বাঘমুন্ডিতেই আবার ঘুরে দাঁড়াবেন, তা বুঝে উঠতে পারছেন না কংগ্রেসের কর্মী থেকে সমর্থকরা। সদ্য সমাপ্ত লোকসভায় শুধুমাত্র বাঘমুন্ডি বিধানসভা থেকে তাঁর প্রাপ্ত ভোট ২৯,৫১৮। অথচ তিন বছর আগে ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে তিনি পেয়েছিলেন ৮৮,৭০৭। তবে সেটা ছিল বাম-কংগ্রেস জোটের ভোট। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও তিনি প্রার্থী হয়েছিলেন। সেইবার এই বাঘমুন্ডি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ভোট পেয়েছিলেন ৬৯,৬৫৯টি। ওই ভোটে সামগ্রিকভাবে নেপাল মাহাতো তিন নম্বরে থাকলেও এই বিধানসভায় তিনিই ছিলেন শীর্ষে। এবার তিনি বামেদেরও পিছনে ফেলে এই কেন্দ্রে সামগ্রিকভাবে তৃতীয় স্থান দখল করলেও একদা ‘গড়’ ভেঙে খানখান। জামানতও জব্দ হল তাঁর।
অথচ একসময় এই বাঘমুন্ডি কংগ্রেসের গড় ছিল। ২০১১ সালে ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থীকে পরাস্ত করে নেপাল মাহাতোই হয়েছিলেন বাঘমুন্ডির ‘বাঘ’। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে এই কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রবল হাওয়া থাকলেও তিনি ‘গড়’ ধরে রাখেন। কিন্তু এবার গেরুয়া ঝড় আর সামাল দিতে পারলেন না চারবারের বিধায়ক নেপাল মাহাতো। পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রের তিন প্রার্থী কংগ্রেসের নেপাল মাহাতো, বামফ্রন্টের বীর সিং মাহাতো ও বিজেপির জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো এই বিধানসভা এলাকারই বাসিন্দা। তাই পুরুলিয়া কেন্দ্রে জয়ের পাশাপাশি বাঘমুন্ডির ‘বাঘ’ কে হবেন, তা নিয়ে গোটা ভোটপর্বেই বাঘমুন্ডিতে ছিল টানটান উত্তেজনা৷ আর তাতে শেষ হাসি হাসলেন এই বিধানসভার ঝালদা এক নম্বর ব্লকের পুস্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের পাতরাডি গ্রামের বাসিন্দা বিজেপি প্রার্থী জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোই।
এই পারফরম্যান্সকে অবশ্য খুব বেশি গুরুত্ব দিতে চাইছেন না বাঘমুন্ডির বিধায়ক৷ নেপাল মাহাতো বলেন, ‘ধর্মের ভিত্তিতে ভোট ভাগাভাগি হয়েছে৷ তবে বাঘমুন্ডি জুড়ে হাওয়া ছিল, লোকসভায় সকলে মোদিকে ভোট দিচ্ছেন৷ তাঁরা বলছেন, বিধানসভায় নেপালবাবুকেই ভোট দেব৷’ এখন জনগণের কথায় আর কাজে কতটা মিল থাকবে, তা পরবর্তী বিধানসভাতেই বোঝা যাবে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.