ফাইল ছবি
দীপঙ্কর মণ্ডল: করোনার সঙ্গে লড়াই নাকি নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়ন নিয়ে মাথা ঘামানো? পশ্চিমবঙ্গ সরকার মনে করছে, মহামারী মোকাবিলা বেশি জরুরি এই মুহূর্তে। তাই রাজ্যে এখনই চালু হচ্ছে না নয়া শিক্ষানীতি। আজ কেন্দ্রের সঙ্গে ভারচুয়াল বৈঠকের পর একথা স্পষ্ট করে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। এর আগে কেন্দ্রের বিরোধিতায় তামিলনাড়ু সরকার স্পষ্ট জানিয়েছিল, নতুন শিক্ষানীতি তাদের রাজ্যে লাগু করা সম্ভব নয়। আর এবার করোনা পরিস্থিতিকে সামনে রেখে আপাতত নতুন শিক্ষাব্যবস্থা চালু পিছিয়ে দিল পশ্চিমবঙ্গ।
নতুন শিক্ষানীতিতে পদ্ধতিতে পড়াশোনার কথা বলা হয়েছে, তার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তুলতে আর্থিক সংস্থান কী? কেন্দ্র-রাজ্যের মধ্যে কার কতটা অংশীদারিত্ব থাকবে? এসব কোনও প্রশ্নের জবাবই মিলল না। তাই আজ জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে রাষ্ট্রপতির ডাকা ভারচুয়াল বৈঠকে যোগ দিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এরপরই সংবাদমাধ্য়মে তিনি জানিয়ে দেন, এখনই এ রাজ্যে নতুন শিক্ষানীতি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।
৩৪ বছর পর দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল বদলে আনতে তৈরি হয়েছে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি (NEP 2020)। কীভাবে তা প্রণয়ন হবে, তার পরামর্শ নিতেই এদিনে সমস্ত রাজ্যের রাজ্যপাল, কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের নিয়ে ভারচুয়াল বৈঠক ডাকেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। দিনের প্রথমার্ধ্বে তাতে যোগ দিয়ে নিজের বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি শিক্ষাব্যবস্থায় ন্যূনতম সরকারি হস্তক্ষেপের পক্ষে সওয়াল করেন।
এরপর শিক্ষাজগতের অন্যান্যরা নিজেদের মতামত পেশ করেন। বৈঠকে হাজির ছিলেন এ রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও শিক্ষাসচিব মনীশ জৈন। সবার শেষে বক্তব্য রাখার সুযোগ পান পার্থ চট্টোপাধ্যায। মিনিট তিনেকের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য তিনি মূলত কয়েকটি প্রশ্ন তুলে ধরেন। জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে রাজ্যের দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাখ্যা করে তিনি জানতে চান যে নয়া পরিকাঠামো গড়ে তুলতে অর্থ কোথা থেকে আসবে? সেখানে রাজ্যের কতটা দায়িত্ব? কেন্দ্রের তরফেই বা কতটা আর্থিক সহযোগিতা মিলবে? নতুন শিক্ষানীতিতে ধ্রুপদী ভাষার তালিকায় বাংলা না থাকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। বাংলা যাতে স্থান পায়, তার আবেদন করা হয়।
তবে এসব নিয়ে কেন্দ্রের মনোভাব নিয়ে কোনও ইঙ্গিত পাননি বলে বৈঠক শেষে অভিযোগ তাঁর। এ নিয়ে লিখিত বিবৃতিও দিয়েছেন তিনি। শিক্ষামন্ত্রীর মতে, ভারতের মতো বহু ভাষাভাষির দেশে যে নমনীয়তা প্রয়োজন, কেন্দ্র তা দেখাচ্ছে না। শিক্ষাকে বাণিজ্যিকীকরণের পথে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.