সুব্রত বিশ্বাস: রেলের উদাসীনতায় পুড়ল ফলকনামা এক্সপ্রেস। প্রাথমিক তদন্তে এমনই বিষয় উঠে আসছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেল স্পষ্ট করেছে, সাঁতরাগাছি কারশেডে দাঁড়িয়ে থাকা ফলকনামা এক্সপ্রেসে আগুন লাগার নেপথ্যে রয়েছে দুষ্কৃতীদের কার্যকলাপ। ওই শাখার সিপিআরও সঞ্জয় ঘোষ জানান, কামরা থেকে একজনকে ধরা হয়েছে। তবে ধৃত ব্যক্তিই যে আগুন লাগিয়েছে, সে বিষয়ে এখনও তাঁরা নিশ্চিত নন৷
আরপিএফ সূত্রে খবর, ধৃত ব্যক্তির নাম সন্তু রায়। গুয়াহাটির বাসিন্দা সে৷ মুম্বই থেকে হাওড়া এসেছিল সন্তু৷ ট্রেন না থাকায় ঘোরাঘুরি করে ফাঁকা ফলকনামায় উঠে পড়ে। চলে যায় কারশেডে। যদিও হোটেল কর্মী সন্তুর বক্তব্যে তেমন গরমিল পায়নি আরপিএফ। তাই তদন্ত সম্পূর্ণ হওয়ার পরই বোঝা যাবে সে-ই দোষী কি না। যদিও তদন্তকারীরা রেলের উদাসীনতা সম্পর্কে নিশ্চিত। কারণ, তাঁরা দেখেছেন, ট্রেনটি কারশেডে আসার সময় কামরার দরজা বন্ধ ছিল না। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন তদন্তকারীরা। যাত্রীরা হাওড়া স্টেশনে নেমে যাওয়ার পর ট্রেনের দরজা-জানলা বন্ধ করার জন্য রয়েছে এজেন্সি। সেই এজেন্সির কর্মীদের উদাসীনতায় এই ঘটনা বলেই প্রাথমিক অনুমান৷ তবে সিপিআরও শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগার আশঙ্কা উড়িয়ে বলেন, ট্রেন দাঁড়ানো অবস্থায় কেনাওরকম বিদ্যুৎ সংযোগ থাকে না। তাহলে শর্ট সার্কিট হবে কোথা থেকে? ট্রেনটি সারারাত সাঁতরাগাছি কারশেডে ছিল। তাই দরজা বন্ধটা একেবারে আইনগত জরুরি। এদিন দরজা বন্ধ না থাকায় দুষ্কৃতীরা সহজেই ট্রেনে চড়তে পারে বলে মনে করেছেন তদন্তকারী অফিসাররা। তাদের খাওয়া বিড়ি, সিগারেটের আগুন থেকে ট্রেনের কামরার ভিতরের ময়লাতে আগুন লাগার সম্ভাবনা তীব্র।
এমনিতেই হোলির দিন, ফলে এই সম্ভাবনা একেবারেই অমূলক নয়। তার উপর ফলকনামা অনেক দূর থেকে হাওড়া আসে। ফলে যাত্রীদের ফেলা আবর্জনা বেশি জমে কামরায়। সেই আবর্জনা হাওড়া আসার পর পরিষ্কারও হয়নি বলে মনে করেছেন তদন্তকারীরা। তাতে বিড়ি, সিগারেট ফেলায় এই বিপত্তি। আগুনের ব্যপ্তি এতটাই ছিল যে চলন্ত অবস্থায় আগুন লাগলে, পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াত তা স্পষ্ট। তবে যাত্রী না থাকায় তেমন বিপত্তি ঘটেনি। বিপত্তি না হলেও উদাসীনতায় যে কতটা ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে গেল সে সম্পর্কে নিশ্চিত কর্তারা। আগে এমন ঘটনা ঘটেছে পাটনা, রাজেন্দ্রনগর কারশেডে৷ তবুও সেখান থেকে শিক্ষা নেয়নি রেল। ফের এমন ঘটনা ঘটায় রেলের নিরাপত্তা নিয়ে উঠে যাচ্ছে প্রশ্ন৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.