শাহজাদ হোসেন, জঙ্গিপুর: বাবা রাজমিস্ত্রি। আয় খুবই সামান্য। নুন আনতে পান্তা ফুরনোর সংসারে খাবার ঠিক মতো জোটে না। তার উপর পড়াশোনার খরচ সামাল দেওয়া মুশকিল। তবু জেদ কখনও ছাড়েনি মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের ছোট কালিয়ার বাসিন্দা নসিফা। আর্থিক অনটন সত্ত্বেও শুধুমাত্র জেদ এবং অধ্যাবসায়কে পুঁজি করেই হাইমাদ্রাসা (High Madrasah) পরীক্ষায় রাজ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে সে।
ছোট থেকে পড়াশোনা বড্ড প্রিয় মেয়েটার। বই পেলে যেন আর কিছু চায় না সে। নাওয়া খাওয়া ভুলে মেয়ের পড়াশোনা মন ছুঁত বাবা-মা। এভাবে পড়তে পড়তে হাইমাদ্রাসার পরীক্ষা চলে আসে। শিক্ষকও ছিল না। তা সত্ত্বেও প্রথম হয়ে সকলকে তাক লাগিয়েছে সে। স্থানীয় জঙ্গিপুর মুনিরিয়া হাইমাদ্রাসা থেকে পরীক্ষা দিয়ে রাজ্যে প্রথম হয়েছে কিশোরী। তার প্রাপ্ত নম্বর ৭৭১। ছাত্রী বলে, “খুব কষ্ট করে পড়াশুনা করে আজ এই সাফল্য এসেছে। আমি খুব খুশি। আগামী দিনে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করতে চাইছি।”
রাজমিস্ত্রি তোয়াব শেখ ও বিড়ি শ্রমিক মা জোসেনূর বিবির মেয়ে নসিফা। এক ভাই ও দুই বোনও রয়েছে তার। ঘরের মেয়ের সাফল্যে বেজায় খুশি পরিজনেরা। মেয়ের রেজাল্ট দেখে খুশিতে চোখে জল বাবা-মায়েরও। উচ্চশিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ কে দেবে মেয়েকে? মেয়ের সাফল্যে উজ্জ্বল মুখ দু’টোকে সেই চিন্তাই যেন তাড়া করে বেড়াচ্ছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবারই প্রকাশিত হয় হাইমাদ্রাসা, আলিম এবং ফাজিলের ফলাফল। গত বছরের তুলনায় তিনটি ক্ষেত্রেই বেড়েছে পাশের হার। হাইমাদ্রাসায় পাশ করেছে ৮৬.১৫ শতাংশ, আলিমে পাশ করেছে ৮৮.৫৬ শতাংশ, ফাজিলে পাশ করেছে ৮৯.৫৬ শতাংশ পড়ুয়া। তবে মাধ্যমিকের মতো হাইমাদ্রাসা, আলিম এবং ফাজিলেও জেলার জয়জয়কার। মেধাতালিকায় নেই কলকাতার কোনও পড়ুয়া।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.