ফাইল ছবি।
দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: পেয়ারা খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এক প্রতিবেশী যুবককে। ঘটনায় ইতিমধ্যেই তার বিরুদ্ধে খুন ও ধর্ষণের মামলা রুজু হয়েছে।
ঘটনা দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুর থানার খেয়াদহ এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত যুবকের নাম আজগর আলি। গত ১৫ জুলাই খেয়াদহ এলাকার বিজয় মুণ্ডার বছর ছয়েকের শিশু নিখোঁজ হয়ে যায়। অনেক খুঁজেও তার কোনও হদিশ পাননি প্রতিবেশীরা। একই সঙ্গে নিখোঁজ হয়ে যায় প্রতিবেশী আজগর আলিও। অভিযুক্ত আজগর পেশায় লরির খালাসি। ঘটনার দিন থেকেই সে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। সেদিনই নিখোঁজ নাবালিকার পিতা বিজয় মুণ্ডা নরেন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরই শিশুর খোঁজে শুরু হয় তল্লাশি। কিন্তু খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না তার। তারই মধ্যে ওই ঘটনায় জড়িতকে গ্রেপ্তার এবং নিখোঁজ শিশুর দেহ উদ্ধারের দাবিতে পথ অবরোধ করেন স্থানীয়রা। দুষ্কৃতীর বাড়িও ভাঙচুর করা হয় বলে খবর।
শিশুর খোঁজে নামানো হয় পুলিশ কুকুর। বিভিন্ন এলাকায় ড্রোনের সাহায্যেও নিখোঁজকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু কোথাও তাকে পাওয়া যায়নি। অভিযুক্ত আজগরকে ধরতেও বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। শুধু জেলায় নয়, হাওড়া, হুগলি ও কলকাতাতেও চলে তল্লাশি। মূলত যেসব এলাকায় আজগরের যোগাযোগ ছিল সেই সমস্ত এলাকাতেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। অবশেষে শনিবার তার খোঁজ মেলে।
এর আগে চুরি-ছিনতাই-সহ বেশ কিছু ঘটনায় আজগরকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। সেই সময় পুলিশ জানতে পারে আজগর মূলত অপরাধ করে রেলস্টেশন চত্বরে ঘোরাফেরা করে। সেই সূত্র ধরে জানা যায়, ঘটনার দিনও আজগর সারারাত সোনারপুর স্টেশনে কাটিয়েছিল। তারপর সে চলে যায় শিয়ালদহে। শনিবার রাতে স্টেশনের কাছ থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করে বারুইপুর জেলা পুলিশের একটি বিশেষ দল। ধৃত আজগরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে খোঁজ পাওয়া যায় নিখোঁজ শিশুরও। একটি ঝোপের মধ্যে থেকে উদ্ধার করা হয় তার দেহ। পুলিশি জেরায় আজগর নিজের অপরাধ স্বীকার করে। জানায়, পেয়ারা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে শিশুকে বাড়ি থেকে বের করে আনে। এরপর বাড়ির পাশের একটি পাঁচিলের কাছে নিয়ে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের খবর জানাজানি হবে এই ভেবেই মুখে কাপড় গুঁজে শ্বাসরোধ করে তাকে খুন করে অভিযুক্ত।
রবিবার দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। করা হবে ডিএনএ টেস্টও। ধৃত আজগরের বিরুদ্ধে ৩৬৫ ও ৩৬৩ নম্বর ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। মামলা হয়েছে পকসো আইনেও। ঘটনায় অভিযুক্তের ফাঁসির দাবি জানান স্থানীয়রা। নরেন্দ্রপুরের মতো শহরতলিতে আদিবাসী পরিবারের শিশুকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা চিন্তায় ফেলেছে পুলিশ প্রশাসনকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.