স্টাফ রিপোর্টার: একইদিনে রাজ্যে নির্বাচনী প্রচার শুরু করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গে দুই পৃথক নির্বাচনী কেন্দ্রে নিজেদের দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে জনসভা করবেন দুই শীর্ষ নেতা-নেত্রী। কোচবিহার দিয়ে ৪ এপ্রিল রাজ্যে প্রচার অভিযান শুরু করার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর।
কিন্তু, সোমবার বেলায় তৃণমল সূত্রে জানানো হয়েছে, একদিন আগেই অর্থাৎ ৩ এপ্রিল কোচবিহার দিয়ে লোকসভা ভোটে বাংলায় নির্বাচনী প্রচার শুরু করছেন তৃণমূলনেত্রী। এদিকে ওইদিনই শিলিগুড়ির মাটিগাড়ায় বিজেপি প্রার্থীদের সমর্থনে জনসভা করবেন নরেন্দ্র মোদি। বিকেলে দক্ষিণবঙ্গের প্রার্থীদের সমর্থনে সভা করবেন কলকাতার ব্রিগেডে। অবশ্য এবছর বিশাখাপত্তনমে চন্দ্রবাবু নাইডুর সমর্থনে জনসভা দিয়ে ইতিমধ্যে নির্বাচনী প্রচার অভিযান শুরু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার বুধবার কোচবিহার দিয়ে বাংলায় দলীয় ৪২ প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে ঝড় তুলতে নেমে পড়ছেন মা-মাটি-মানুষের নেত্রী।
তৃণমূল সূত্রে খবর, প্রতিটি লোকসভা কেন্দ্রে অন্তত দুটি করে নির্বাচনী সভা করবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়া হাওড়া এবং কলকাতায় একাধিক পদযাত্রাও করতে পারেন তিনি। আর উত্তরবঙ্গে দলের প্রচার অভিযান শুরু করছেন কোচবিহারের মাথাভাঙা কলেজ মোড়ের জনসভা দিয়ে। বিশাখাপত্তনম থেকে সোমবারই সকালে কলকাতায় ফিরেছেন তৃণমূল নেত্রী। তার আগে সকালে টুইট করে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে কর্মীদের অভিনন্দন জানান। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার গত পাঁচ বছরে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মূল্যায়ন খারাপ করে দিয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। অন্ধ্রপ্রদেশে চন্দ্রবাবুর সভায় হাজির থেকে তিনি উন্নয়ন ইস্যুতে মুখোমুখি বিতর্কে বসার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে। আর তারপর শহরে ফিরে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে একদিন আগেই কোচবিহার থেকে প্রচার শুরুর কথা জানিয়ে দেন মমতা। সেইমতো কোচবিহারে জনসভার প্রস্তুতি জোরকদমে শুরু করে দেন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও অন্য নেতৃত্ব। কোচবিহারের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের অন্য সমস্ত কেন্দ্রেও প্রচারে যাবেন মমতা। পাহাড়েও করবেন জনসভা। এই প্রথম পাহাড়ের ভূমিপুত্রকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল।
এদিকে এরাজ্যে প্রচারে ঝড় তুলতে মরিয়া বিজেপি। ব্রিগেড ও শিলিগুড়ির সভার পর ফের রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে সভা করবেন কোচবিহারেও। ইতিমধ্যে শিলিগুড়ির সভা নিয়ে জটিলতা কেটে গিয়েছে। ব্রিগেডের সভার জন্য প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। সমর্থকদের বসার জন্য তৈরি হচ্ছে বিশাল জার্মান তাঁবু। উল্লেখ্য, ঠাকুরনগর ও মেদিনীপুরে তিক্ত অভিজ্ঞতা হওয়ার পর এখন আরও সতর্ক বিজেপি। কারণ ৩ এপ্রিলই মোদির প্রথম ব্রিগেড। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় এসপিজির সঙ্গে তৎপর পুলিশও। রবিবার এসপিজি, সেনা, রাজ্য পুলিশ ও রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের মধ্যে একটি বৈঠক হয়। সেখানে ঠিক হয়ে যায় কোথায় কত মানুষ বসবেন। কোন তাঁবুতে কত মানুষ বসানো হবে। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা নেওয়া হয়। সেটাই নেওয়া হচ্ছে। ব্রিগেডে মোদির মূল মঞ্চ ছাড়াও আরও দুটি ছোট মঞ্চ থাকছে। কোন মঞ্চে কারা বসবেন, কোন দিক দিয়ে কারা ঢুকবেন, ছাউনির জন্য যে হ্যাঙ্গার লাগানো হচ্ছে সেগুলিও দেখে এসপিজি ও পুলিশ।
জানা গিয়েছে, তিনটি রো-তে মোট চারটি করে ১২টি হ্যাঙার থাকছে। কিছুটা ফাঁক দিয়ে ছাউনি হচ্ছে। যেটা জানা গিয়েছে, মূল মঞ্চে মোদির সঙ্গে দলের দক্ষিণবঙ্গের লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থীরা থাকবেন। মূল মঞ্চের দুপাশের দুটি মঞ্চে একটিতে রাজ্য নেতারা। অন্যটিতে জেলা সভাপতি ও জেলা নেতৃত্ব বসবেন। মূল মঞ্চের সামনে ডি জোন। তারপর শুরু হচ্ছে ছাউনি। যেখানে দর্শকাসন থাকছে। মূল মঞ্চ তৈরির কাজ জোরকদমে চলছে। ক্রেনের সাহায্যে অ্যালুমিনিয়ামের রেলিং তোলা হচ্ছে উপরে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.