দীপঙ্কর মণ্ডল, তমলুক: হলদিয়ার মাটিতে দাঁড়িয়ে ফণী নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ অভিযোগ করলেন, ফণীর ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে রাজ্যের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করতে চেয়েছিলেন তিনি৷ কিন্তু এরাজ্যের মানুষকে নিয়ে রাজনীতি করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাই বৈঠক করতে রাজি হননি তিনি৷
[ আরও পড়ুন: বুথের মধ্যে প্রক্সি ভোটের অভিযোগ, কাঠগড়ায় তৃণমূল যুব নেতা ]
সোমবার হলদিয়ার জনসভায় আসার আগে ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত ওড়িশার বিভিন্ন জায়গার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন প্রধানমন্ত্রী৷ তখন তাঁর সঙ্গে ছিলেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান৷ ওড়িশাকে সব রকমের সাহায্যের আশ্বাস দেন নরেন্দ্র মোদি৷ এরপরই পশ্চিমবঙ্গে ভোটপ্রচারে চলে আসেন তিনি৷ সূত্রের খবর, কলাইকুণ্ডা বিমানঘাঁটিতে নেমে, সেখানেই এরাজ্যের প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী৷সেই মর্মে চিঠি পাঠানো হয়েছিল পিএমও থেকে৷ কিন্তু নবান্নের তরফে তাঁকে জানানো হয়, নির্বাচন চলাকালীন বৈঠক করতে পারবেন না আধিকারিকরা৷
হলদিয়ার জনসভায় এই বিষয়টিকেই শাসকদলের বিরুদ্ধে হাতিয়ার করেন প্রধানমন্ত্রী৷ জানান, ‘‘দিদির খুব অহংকার৷ ফণী নিয়ে দিদির সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু উনি কোনও উত্তর দেননি৷ বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করতে চেয়েছিলাম, জানতে চেয়েছিলাম৷ কিন্তু দিদির প্রশাসন তা করতে চায়নি৷ দিদি পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কথা ভাবেননি৷’’ এখানেই শেষ নয়, চ্যালেঞ্জের সুরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘দিদির এই রাজনীতির মধ্যেও, আমি পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে ভরসা দেব যে, কেন্দ্র সমস্ত শক্তি দিয়ে এরাজ্যের মানুষের পাশে রয়েছে৷ কেন্দ্র সব ধরনের সহযোগিতা করবে৷’’ যদিও প্রধানমন্ত্রীকে পালটা দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমোও৷ গোপীবল্লভপুরের জনসভা থেকে তিনি জানান, ‘‘ফণীর ধাক্কা আমরা নিজেরাই সামলাতে পারি৷ তার জন্য কেন্দ্রের সাহায্যের প্রয়োজন পড়বে না৷ উনি এক্সপায়ারি প্রাইম মিনিস্টার৷ ওনার কথা কেন শুনব৷’’
[ আরও পড়ুন: বুথে ঢুকে চামড়া গুটিয়ে নেওয়ার ‘হুমকি’ লকেটের, কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ]
শনিবার চন্দ্রকোণায় রাস্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় যাওয়ার সময় ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেওয়া নিয়ে সম্প্রতি বিতর্ক তৈরি হয় রাজ্য রাজনীতিতে৷ এদিনের জনসভায় সেই বিষয়টিকেও ইস্যু করেন নরেন্দ্র মোদি৷ মুখ্যমন্ত্রীকে খোঁচা দিয়ে জানান, এখন তো ‘জয় শ্রীরাম’ বললেও দিদি গ্রেপ্তার করছেন৷ এদিনের সভায় মাসুদ ইস্যু তুলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী৷ জানান, ভারতের গর্বের দিনে সকলে খুশী হলেও, এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দুঃখ পেয়েছেন৷ সেই কারণেই কোনও প্রশংসা করেননি তিনি৷ ভোটব্যাংক নষ্টের আতঙ্ক রয়েছে তাঁর মনে৷ এছাড়া প্রত্যেক সভার মতোই এদিনও মাফিয়া রাজ ও সিন্ডিকেট নিয়ে তৃণমূলকে তুলোধনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী৷ কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘‘বাংলায় এখন ট্রিপল টি অর্থাৎ তৃণমূল তোলাবাজি ট্যাক্স চলছে৷’’ তৃণমূলের সঙ্গে একযোগে তিনি আক্রমণ করেছেন বাম-কংগ্রেসকেও৷ হলদিয়ার মানুষের মন জয়ে তুলে ধরেছেন কেন্দ্রের একাধিক প্রকল্পের উদাহরণ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.