বিক্রম রায়, কোচবিহার: নাগরিক পঞ্জি, নাগরিত্ব বিল, নারদা-সারদা থেকে চৌকিদার, ‘মোদি হঠো’ স্লোগান – সব কিছুকে হাতিয়ার করেই কোচবিহারের রাসমেলার মাঠ থেকে মমতা সরকারের বিরোধিতায় মুখর হলেন বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ রবিবার রাজ্যে দ্বিতীয় নির্বাচনী প্রচার সভা থেকে প্রতিশ্রুতি দিলেন, ক্ষমতায় ফিরলে উন্নত বাংলা তৈরি করবেন৷ এদিন কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকের প্রচারে মোদির প্রায় আধঘণ্টার বক্তব্যের সিংহভাগই ছিল মমতা সরকারের সমালোচনা৷
রবিবার নরেন্দ্র মোদি এবং সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা একই জায়গায় – কোচবিহারের রাসমেলা ময়দানে৷ আগে থেকে তৃণমূল সভার প্রস্তুতি সেরে ফেলায় এনিয়ে বিজেপি-তৃণমূলের মধ্যে টানাপোড়েন তৈরি হয়৷ শেষে এসপিজি-র মধ্যস্থতায় জট কাটে৷ এদিন সভায় বক্তব্য রাখতে উঠেই বিদায়ী প্রধানমন্ত্রীর গলায় এনিয়ে কটাক্ষ শোনা গেল৷ তাঁর কথায়, ‘সভার মাঠ নিয়ে তৃণমূল নেত্রী যা করলেন, তা স্রেফ ছেলেমানুষি৷ স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটির সঙ্গে তুলনীয়৷ কিন্তু এসব করে ভোটে জেতা যায় না৷’ এদিন মোদির সভায় তুলনায় ভিড় বেশি ছিল৷ আর তাতেই আপ্লুত মোদি বলেন, ‘এত ভিড় আমার দায়িত্ব আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে৷ আপনারা সকলেই চলে এসেছেন৷ আপনারা আমাকে ভোটে জিতিয়েছেন বলেই সব কিছু সম্ভব হচ্ছে৷’ এ প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তিনি৷ বললেন, ‘‘ভিড় যত বাড়ছে, দিদির ঘুম তত উড়ে যাচ্ছে৷ এই ভিড়ই দিদির পরাজয়ের ইঙ্গিত৷ এখন দিনরাত তিনি ‘মোদি হঠো’ মন্ত্র জপছেন৷ কিন্তু আপনাদের আশীর্বাদ যতক্ষণ সঙ্গে আছে, ততক্ষণ কেউ হঠাতে পারবে না৷ দিল্লিতে আপনারা চৌকিদারকে বসিয়েছেন, সুরক্ষিত থাকবেন৷’’
পশ্চিমবঙ্গবাসী তৃণমূলের উপর ভরসা রেখেছিলেন, কিন্তু সেই ভরসা ভাঙা হয়েছে বলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধেছেন নরেন্দ্র মোদি৷ এপ্রসঙ্গে উল্লেখ করেছেন তোলাবাজি, অনুপ্রবেশ, গুণ্ডাগিরির কথাও৷ তাঁর কটাক্ষ, মমতার জমানায় রাজ্যজুড়ে এসবের বাড়বাড়ন্ত৷ মোদির আক্রমণ থেকে বাদ গেল না নারদা-সারদা প্রসঙ্গও৷ পুলওয়ামার পালটায় পাকিস্তানে ঢুকে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক এবং মিশন শক্তির সাফল্য নিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়াকেও সমালোচনায় টেনে আনলেন মোদি৷ তাঁর দাবি, সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে কষ্ট হয়েছে মমতার৷ মিশন শক্তির মতো মহৎ সাফল্যকেও তিনি সহজে স্বীকৃতি দিতে চাইছেন না৷ কোচবিহারের মাটিতে দাঁড়িয়ে ছিটমহল সমস্যার সমাধানে নিজের কৃতিত্ব নেওয়ার চেষ্টার কোনও কসুর করলেন না মোদি৷
এদিনের সভায় একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতিও শোনা গেল বিদায়ী প্রধানমন্ত্রীর গলায়৷ বললেন, ২০২২ সালের মধ্যে সকলের মাথায় উপর ছাদ নিশ্চিত করা হবে৷ নিখরচায় টেলিফোন পরিষেবা মিলবে৷ ফের উত্তরবঙ্গে নির্বাচনী প্রচার করতে আসবেন বলে জানিয়ে গেলেন মোদি৷ তবে বিজেপির প্রধান কমান্ডারের এই ভোকাল টনিক কোচবিহারে প্রার্থীর ভোটবাক্সে কতটা প্রতিফলন ঘটাবে, তা বুঝতে আরও কিছুদিনের অপেক্ষা৷
#WATCH West Bengal: Prime Minister Narendra Modi urges people to stay wherever they are at BJP’s public rally in Cooch Behar, as the crowd swells. pic.twitter.com/5IF4qI0p93
— ANI (@ANI) April 7, 2019
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.