Advertisement
Advertisement

Breaking News

Durga Puja 2021

Durga Puja 2021: মায়ের পুজোয় মেয়েরাই ব্রাত্য! এ কেমন প্রথা ঘাটালের রাজবাড়ির

মা এখানে একাই পূজিত হন। লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ তাঁর সঙ্গে থাকেন না।

Narajole Raj Bari Durga Puja of Ghatal has a bizarre ritual | Sangbad Pratidin
Published by: Suparna Majumder
  • Posted:September 16, 2021 7:26 pm
  • Updated:September 16, 2021 8:49 pm  

শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: মায়ের পুজো, আর সেখানে মেয়েরাই ব্রাত্য! ৬০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এমনটাই হচ্ছে দাসপুরের নাড়াজোল রাজবাড়ির দুর্গা পুজোয় (Durga Puja 2021)। মহিলারা পুজো থেকে শতহস্ত দূরে থাকেন। এটাই রাজবাড়ির প্রথা। আজও এই প্রথা ভাঙার সাহস দেখাতে পারেননি রাজ পরিবারের অন্তঃপুরবাসিনীরা। অঞ্জলি কিংবা মায়ের প্রসাদ তো দূরের কথা, সামান্য বেলপাতাটুকুও ছোঁয়ার অধিকার কারও নেই। কেন এমন প্রথা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে রাজবাড়িতে?

Narajole Raj Bari Puja

Advertisement

রাজপরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমানরাজের নায়েব ছিলেন উদয়নারায়ণ ঘোষ। তিনি রাজার অনুমতি নিয়ে মেদিনীপুর জেলায় শিকার করতে যান। দাসপুরের নাড়াজোল জঙ্গলে শিকার করে ফেরার পথে হঠাৎ দেখেন একটি বক তাড়া করছে একটি বাজপাখিকে। এমন অভিনব দৃশ্য দেখে থমকে গিয়েছিলেন নায়েব মশাই। বাড়ি ফিরে সেই রাতেই তিনি স্বপ্ন দেখেন, ওই জঙ্গলেই রয়েছে মা দুর্গার অষ্টধাতুর মূর্তি। মায়ের নির্দেশে সেই মূর্তি জঙ্গল থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন তিনি। ৮২০ বঙ্গাব্দে জঙ্গল সাফ করে তৈরি করেন বাড়ি। সে বছরই তিনি ওই অষ্টধাতুর দুর্গা মূর্তির পুজো শুরু হয় বলে জানা গিয়েছে রাজ পরিবার সূত্রে। এই হিসেবে নাড়াজোল রাজবাড়ির দুর্গা পূজা এ বছর ৬০৯ বছরে পা দিল।

Narajole Raj Bari Puja

[আরও পড়ুন: Durga Puja 2021: এবারও কোভিডবিধি মেনেই হবে দুর্গা পুজো, কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে?]

পরবর্তীকালে উদয়নারায়ণ ঘোষই নাড়াজোল রাজবাড়ির প্রতিষ্ঠা করেন। দুর্গা পূজার যাবতীয় বিধিনিষেধ তিনিই চালু করে যান। তাঁর প্রচলিত প্রথা আজও মেনে চলেন রাজবাড়ির বর্তমান প্রজন্ম। মা এখানে একাই পূজিত হন। লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ তাঁর সঙ্গে থাকেন না।
বৃহৎনন্দীকিশোর মতে দুর্গার পুজো হয় রাজবাড়িতে। পুজোর ১৫ দিন আগে থেকে রাজবাড়িতে মায়ের কল্পারম্ভ শুরু হয়ে যায়। রাজবাড়ির মা নিরামিষাশী। বিশাল কাঁসার থালায় ২৫ কেজির নৈবেদ্য, ২৫ কেজি চালের মোয়া দিতে হয় মাকে। এ সবই তৈরি করেন রাজবাড়ির মহিলারা। কিন্তু পুজোয় তাঁরা আজও ব্রাত্য।

Narajole Raj Bari

রাজা নেই। রাজপ্রথা তো আছে! সেই রাজ প্রথা মেনে রাজবাড়ির পদ্মদীঘিতে মায়ের ঘট নিয়ে যেতে হয়। দুই রাজ প্রহরী হাতে তলোয়ার নিয়ে পাহারা দিয়ে নিয়ে যান ঘট। সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত জ্বলে হোমগ্নি। পুজো চলাকালীন কিন্তু মহিলাদের অংশগ্রহণ নিষেধ। রাজবাড়ির জয়দুর্গা মন্দির হেরিটেজ বলে ঘোষিত। মায়ের পুষ্পাঞ্জলি দিতে পারবেন না রাজপরিবারের মহিলারা। এমনকী নিতে পারবেন না কোনও প্রসাদ। মায়ের প্রসাদ ছুঁতে পারবেন না রাজ পুরোহিতও। এটাই রাজবাড়ির প্রথা।

Narajole Raj Bari

এই প্রথা ভাঙতে গিয়ে হোঁচট খেয়েছেন রাজবাড়ির মহিলারা। রাজ পরিবারের সদস্যা অরুণিমা খান বলেন, “আমরা তো মায়ের পুষ্পাঞ্জলি দিতে চাই। কিন্তু রাজপ্রথা ভাঙতে পারছি না। এটাই আমাদের আক্ষেপ।” রাজ পরিবারের সদস্য পেশায় শিক্ষক সন্দীপ খান বলেন, “এই প্রথা আছে বলেই নাড়াজোল রাজবাড়ির দুর্গা বিশেষ বৈশিষ্ট্যর অধিকারী। রাজবাড়ির প্রথা হল মহিলারা পুষ্পাঞ্জলি দিতে পারবেন না, নিতে পারবেন না প্রসাদও। যে পুরোহিত পুজো করেন তিনিও নিতে পারবেন না মায়ের প্রসাদ। এই প্রথা মেনে আজও আমরা পুজোয় যোগ দিই।” রাজবাড়ির মায়ের বিসর্জন হয় না, নিরঞ্জন হয়। তাও রাজপ্রথা মেনেই।

[আরও পড়ুন: Durga Puja 2021: প্রতিমা তৈরি থেকে পুজো, নিজের হাতে দুর্গা আরাধনায় মগ্ন সিউড়ির নবম শ্রেণির ছাত্র]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement