ছবি প্রতীকী
সুরজিৎ দেব: সোমবার থেকে খুলে যাচ্ছে এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম পাইকারি মাছবাজার ডায়মন্ডহারবারের নগেন্দ্রবাজার মাছের আড়ত।
লকডাউন আর সমুদ্রে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার জেরে টানা ৮২ দিন বন্ধ থাকার পর এই পাইকারি মাছবাজার খুলছে। এই খবরে শুধু এ রাজ্য নয়, আন্তঃরাজ্য এমনকী বিদেশেও মাছ রপ্তানির সঙ্গে যুক্ত শতাধিক ব্যবসায়ী এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত হাজার হাজার কর্মীর মনে এখন খুশির হাওয়া। ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন সময়টুকু নদী ও সমুদ্রে মাছ ধরার উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকে। এই সময়টুকু বাদ দিলে বছরের বাকি সব দিনই গড়ে প্রায় চার কোটি টাকার ব্যবসা হয় এই মাছবাজারে।
মূলত সামুদ্রিক মাছেরই কেনা-বেচা হয়। প্রতিদিন এখান থেকে কলকাতা-সহ রাজ্যের বড় বড় মাছবাজারে পৌঁছে যায় পমফ্রেট, ইলিশ, ম্যাকরেল, ভোলা, ঢেলা, দুম্বা, চিংড়ির মতো নানা রকমের মাছ। শুধু এ রাজ্য বললে ভুল হবে। অসম, ত্রিপুরা, মহারাষ্ট্র, কেরল-সহ বিভিন্ন রাজ্যেই সামুদ্রিক মাছ যায় নগেন্দ্রবাজারের মাছের আড়ত থেকে। তবে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, এখান থেকে প্রসেসিংয়ের পর প্যাকেটজাত চিংড়ি, পমফ্রেট, স্কুইড ইত্যাদি রপ্তানি করা হয় চীন, আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলিতেও। কিন্তু করোনা মোকাবিলায় জারি লকডাউনে জেরে গত ২৪ মার্চ থেকে তালাবন্ধ ছিস আড়তের ষাটটি স্টল। সর্বভারতীয় এবং আন্তজার্তিক ব্যবসা সম্পূর্ণ বন্ধ থাকায় শতাধিক কারবারী পড়েছিলেন মহা বিপদে। রুটিরুজিও বন্ধ হয়েছিল প্রায় দেড়হাজার শ্রমিকের। আবার প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছিল মাছপ্রেমী বাঙালিদেরও।
রাজ্য মৎস্যদপ্তর সোমবার থেকে এই পাইকারি মাছবাজার ফের খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছে শ্রমিক পরিবারগুলি।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সহ-মৎস্য অধিকর্তা (মেরিন) জয়ন্ত কুমার প্রধান জানিয়েছেন, সোমবার আড়ত খোলার পর প্রথমেই হবে জীবাণুমুক্ত করার কাজ। তবে সেদিন থেকেই ট্রলার নিয়ে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে বেরচ্ছেন মৎস্যজীবীরা। তাই তাঁদের ফেরার জন্য আরও তিন-চারটে দিন অপেক্ষা করতে হবে। তারপরই পুরোদমে চালু হবে পাইকারি মাছবাজার।
নগেন্দ্রবাজার মৎস্য আড়তদার সমিতির সম্পাদক জগন্নাথ সরকারের কথায়, এই পাইকারি মাছবাজারে দৈনিক গড়ে ২০০-২৫০ মেট্রিকটন ইলিশ-সহ বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ আসে। লেনদেনের পরিমাণ দৈনিক প্রায় চার কোটি টাকার মতো। তাই বাজার খোলায় খুশি ব্যবসায়ী মহল। তবে করোনা আবহে বাজার শুরুর সময় কিছু বদল ঘটবে। যেমন, নদীর ঘাটে ভেড়া ট্রলার থেকে আড়তে মাছ নামানোর সময় দুপুর ১টার পরিবর্তে ১২টা থেকে করা হল। বাজারে বিক্রি-বাটা শুরু হবে বিকেল ৫টার বদলে তিনটে থেকে। পাশাপাশি বাজারে আসা সমস্ত শ্রমিক, ক্রেতা ও বিক্রেতাকে মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা-সহ সরকারি নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.