বিপ্লব দত্ত, নদিয়া: পারিবারিক অশান্তির জেরে মদ্যপ বাবাকে শাবল দিয়ে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল ছেলের বিরুদ্ধে। মৃত ব্যক্তির নাম বৈদ্যনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় (৬৫)। তিনি দিনমজুরের কাজ করতেন। রাতে তিনি মদ খেয়ে বাড়ি ঢুকে পুত্রবধূকে গালিগালাজ করতে থাকেন। সেই সময় ছেলের সঙ্গে তাঁর বচসা হয়। নেশার ঘোরে উঠোনে থাকা বাঁশ দিয়ে ছেলের মাথায় আঘাত করেন বৈদ্যনাথবাবু। এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ছেলে বিকাশ। বাঁশের পাশে উঠোনেই ছিল শাবল। তিনি সেটিকে তুলে নিয়ে বাবার মাথায় বসিয়ে দেন। রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন মদ্যপ বৈদ্যনাথবাবু। তাঁকে স্থানীয় বগুলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে কৃষ্ণনগর জেলা হাসপাতালে ভরতি করা হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার হাঁসখালি এলাকার হাজরাপুরে।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, বৈদ্যনাথবাবুর মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফেরা নতুন কিছু নয়। বাড়ি ফিরে অশান্তি করাও নিত্যদিনের ব্যাপার। প্রতিবারই বাড়ি ফিরে হয় স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তি করতেন, নাহলে ছেলেকে মারধর করতেন। কিন্তু রবিবার রাতে সব সীমা ছাড়ায়। অভিযোগ, মদ্যপ অবস্থায় বাড়িতে ঢুকেই অশান্তি শুরু করেন বৈদ্যনাথবাবু। পুত্রবধূকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ছেলে বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমেই মদ্যপ বাবার সঙ্গে শুরু হয় বচসা। এক সময় বচসা থেকে হাতাহাতি লেগে যায়। ধস্তাধস্তি শুরু হতেই উঠোনে পড়ে থাকা বাঁশ তুলে নিয়ে ছেলের মাথায় মারেন বৈদ্যনাথবাবু। মাথায় আঘাত পেয়ে কিছুক্ষণের জন্য বসে পড়েন বিকাশ। তারপর রেগে গিয়ে পাশের শাবলটি কুড়িয়ে নেন। সেই শাবল দিয়েই এলোপাথাড়ি বাবাকে কোপাতে শুরু করেন। উঠোনে লুটিয়ে পড়ে ততক্ষণে চিৎকার জুড়ে দিয়েছেন বৈদ্যনাথবাবু। ছুটে এসেছেন বিকাশবাবুর স্ত্রীও। চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরাই রক্তাক্ত বৈদ্যনাথবাবুকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই মৃত্যু হয় তাঁর।
এদিকে মাথায় আঘাত পেয়ে হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিকাশবাবু। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে হাঁসখালি থানার পুলিশ বিকাশবাবুর বিরুদ্ধে স্বতপ্রনোদিত হয়ে মামলা রুজু করে তদন্তে নেমেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.