Advertisement
Advertisement

Breaking News

Nadia Villagers to worship teen on Holi

সন্তানই যেন ভগবান! দোলপূর্ণিমায় রাধাকৃষ্ণ জ্ঞানে নদিয়ায় কিশোরদের পুজো করেন গ্রামবাসীরা

গোটা গ্রামই যেন হয়ে ওঠে এক টুকরো বৃন্দাবন।

Nadia Villagers to worship teen on Holi । Sangbad Pratidin
Published by: Sayani Sen
  • Posted:March 17, 2022 2:51 pm
  • Updated:March 17, 2022 2:51 pm  

বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: সন্তানই যেন ভগবান! তাই দোলপূর্ণিমায় সন্তানদেরই পুজো করেন নদিয়ার শান্তিপুরের ফুলিয়ার উমাপুরের বাসিন্দারা। রীতি মেনে বেশ কয়েকজন কিশোর রাধাকৃষ্ণ সেজে গোটা মাস ধরে পালাগান করে বেড়ায়। গ্রামের মানুষের মনে জাগ্রত করে তোলে রাধাকৃষ্ণ প্রেম। আর সেই প্রেমের জোয়ারে গা ভাসিয়েই জীবন্ত রাধা ও কৃষ্ণকে পুজো করেন গ্রামবাসীরা। গোটা গ্রামই যেন হয়ে ওঠে এক টুকরো বৃন্দাবন।

রাত পোহালেই দোল পূর্ণিমা। রংয়ের উৎসবে মেতে উঠতে তৈরি প্রায় সকলেই। আর এই দোল পূর্ণিমা উপলক্ষে অনেক জায়গাতেই বসে নাম সংকীর্তনের আসর। শ্রীচৈতন্যদেব এবং অদ্বৈত আচার্যের স্মৃতি বিজড়িত নদিয়ার নবদ্বীপ, শান্তিপুরের বিভিন্ন মঠ ও মন্দিরে শুরু হয়ে গিয়েছে একাধিক অনুষ্ঠান। রাধাকৃষ্ণের নামগানে মেতে উঠেছেন হাজার হাজার বৈষ্ণব। যদিও শান্তিপুরের কাছেই ফুলিয়ার উমাপুর গ্রামের শিশু থেকে কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা ফাল্গুন মাসের প্রথম রবিবার থেকে চৈত্র মাসের প্রথম রবিবার পর্যন্ত প্রায় একমাসব্যাপী রাধাকৃষ্ণের প্রতি ভক্তিশীল হয়ে কঠোর নিয়মের মধ্যে দিয়ে চলেন।

Advertisement

Nadia's-Dolyatra

[আরও পড়ুন: ভালবাসাকেই স্বীকৃতি, সব বাধা পেরিয়ে আদালতেই চার হাত এক হল দম্পতির]

এই গ্রামের প্রায় দেড়শ পরিবার আমিষ খাবার খান না। টানা একমাস ধরে তাঁরা নিরামিষ খাবার খান। হরেকৃষ্ণ রায় নামে ওই গ্রামের বাসিন্দা জানিয়েছেন,”আমাদের গ্রামের ছোটবড় সকলেই একে অপরে সম্মান দিয়ে থাকেন। ফাল্গুন মাসের প্রথম রবিবার থেকে চৈত্র মাসের প্রথম রবিবার পর্যন্ত গ্রামের ১৮ বছরের কম বয়সি ছেলেরা শুদ্ধ বস্ত্রে রাধাকৃষ্ণ, কংস, পুতনা রাক্ষসী-সহ বিভিন্ন রূপে সেজে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্ম থেকে রাসলীলা, পুতনা রাক্ষসী বধ, বকাসুর বধ, কংস বধ পর্যন্ত বিভিন্ন পালা গান করে থাকে। শেষে কুঞ্জমেলায় রাধাকৃষ্ণের মিলনের মাধ্যমে উৎসবের শেষ হয়। হাজার হাজার মানুষ এই মেলায় যোগ দেন। নিজেদের সন্তানকেই বাবা মায়েরা ভগবানজ্ঞানে পুজো করেন। আমাদের গ্রামে এক অন্যরকম পরিবেশ তৈরি হয়।”

সন্ধে থেকে গভীররাত পর্যন্ত পালা গান, নাম সংকীর্তন চলে। পরদিন ভোর নিজেদের কাজে বেরিয়ে যান গ্রামের পুরুষেরা। যদিও সন্ধের পর গ্রামের সকলে মেতে ওঠেন রাধাকৃষ্ণের বৃন্দাবন লীলা উৎসবে। গ্রামবাসীরা জানান, কুঞ্জমেলার দিন গ্রামের প্রায় প্রতি বাড়িতেই প্রচুর মানুষের খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। যেকোন বাড়িতে গেলেই মিলবে আন্তরিক অতিথি আপ্যায়ণ। কারণ, অতিথিকে তাঁরা নারায়ণ জ্ঞানেই সেবা করেন। শ্রীকৃষ্ণের পরম প্রিয় কচুর শাক, মোচা ঘন্ট, মান কচুর ডাল-সহ বিভিন্ন রকম উপকরণ-সহ খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা থাকে। যদিও শুক্রবার হাটবার থাকায় সেদিন অনুষ্ঠান বন্ধ থাকে।

অবশ্য এই উৎসবের সূচনা ঢাকায়। অভীক রক্ষিত নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, “সুধারাম গোস্বামী নামে এক বৈষ্ণব ভক্ত বৃন্দাবন থেকে কৃষ্ণের স্বপ্নাদেশ পেয়ে ঢাকার শ্রীধামে এই উৎসবের সূচনাা করেছিলেন। দেশভাগের পর সেখান থেকে কিছু মানুষ এই উমাপুর গ্রামে চলে আসেন। এরপর বাংলার ১৩৬৫ সালে এখানকার বাসিন্দা শশীমোহন বর্ধন ও কুঞ্জমোহন দাস এই গ্রামে এই উৎসবের সূচনা করেন। সেই থেকে এখনও চলে আসছে। আমাদের বাইরে থেকে কোন শিল্পীকে ভাড়া করতে হয় না। পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে বংশ পরম্পরায় গ্রামের ছেলেরা শ্রীকৃষ্ণের পালাগান এবং নাম সংকীর্তণ করেন। কুঞ্জমেলার দিন হাজার হাজার মানুষ আসেন। আগাম নিমন্ত্রণ না থাকায় সত্ত্বেও প্রায় সকলেই প্রসাদ পান। আমরা গ্রামের মানুষেরা দুর্গাপুজোর আনন্দের থেকেও বছরের এই একটি মাস রাধাকৃষ্ণের পালাগান ও নাম সংকীর্তণের মাধ্যমে অনেক বেশি আনন্দ করি। সারাবছর আমরা এই উৎসবের অপেক্ষা করি।” পঞ্চবটী গাছের তলায় পালাগান-সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান হত। তবে গত কয়েক বছর আগে গ্রামের মানুষের উদ্যোগেই তৈরি হয়েছে মন্দির। সেই মন্দিরকে ঘিরে নানা অনুষ্ঠান হয়।

[আরও পড়ুন: এ কী কাণ্ড! তারকেশ্বরে প্রতিবেশী যুবকের কান কামড়ে ছিঁড়ে নিল সিভিক ভলান্টিয়ার]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement