ছবি: প্রতীকী।
বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: প্রেমের সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল পরিবার। যার পরিণতি হল মর্মান্তিক। বাড়ি থেকে কিছুটা দূর থেকে উদ্ধার হয় যুগলের দেহ। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার (Nadia) কোতোয়ালি থানা এলাকায়। ইতিমধ্যেই দেহদুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত কিশোরের নাম দীপু দুর্লভ। বয়স ১৭ বছর। ভাতজাংলা পশ্চিমপাড়া এলাকার বাসিন্দা সে। রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করত দীপু। একই এলাকার বাসিন্দা বছর ১৪-এর বর্ষা দুর্লভ। স্থানীয় স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত সে। একই এলাকার বাসিন্দা হওয়ায় বর্ষা ও দীপুর মাঝে মধ্যেই দেখা হত। যার ফলে দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ধীরে ধীরে সেই সম্পর্ক আরও গভীর হয়। মাঝেমধ্যেই তারা পরস্পরের সঙ্গে দেখা করত। বেশিদিন তা প্রতিবেশীদের নজর এড়ায়নি। ফলে দুই পরিবারও বিষয়টি জানতে পেরে যায়। জানা গিয়েছে, দীপুর সঙ্গে মেলামেশার ব্যাপারে প্রথম থেকেই মত ছিল না বর্ষার পরিবারের। আটমাস আগে দীপুর সঙ্গে বাড়ি ছেড়েছিল বর্ষা। পাঁচদিন পর বাড়ি ফেরে যুগল। এদিকে নাবালিকা মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় দীপু ও তার বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করে বর্ষার পরিবার। বর্ষার সঙ্গে যাতে কোনওভাবেই দীপু মেলামেশা না করে তা নিশ্চিত করে কিশোরীর পরিবার।
এসবের মাঝে শনিবার বিকেলে দীপু বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। রাত প্রায় দুটো নাগাদ বাথরুমে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় বর্ষা। তাদের বাড়ির লোকজন চারিদিকে খোঁজাখুঁজি করেও দু’জনের কোনও সন্ধান পাননি। কেউই রাতে বাড়ি ঢোকেনি। রবিবার বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে কলাবাগানের মধ্যে দু’জনকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে এলাকার মানুষ। দীপুর জেঠু বলেন, “ভাইপোর সঙ্গে প্রতিবেশী বর্ষা নামে একটি মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আমাদের আপত্তি ছিল না। কিন্তু বর্ষার বাড়ির লোকজন আমার ভাইপো এবং ভাইয়ের নামে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল। ওরা আমাদের ফাঁসানোর জন্য এটা করেছিল। ওই সম্পর্কে বর্ষার বাড়ির লোকজনের মত ছিল না। আমাদের ধারণা, বর্ষার বাড়ির লোকজনের ওই প্রেমের সম্পর্কে মত না থাকার কারণে বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে।”
মৃতার বাবা বলেন, “দীপুর সঙ্গে আমার মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু দীপু পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছিল। ভাল কোন কাজকর্মও করত না। তাই আমাদের আপত্তি ছিল। তা সত্ত্বেও আটমাস আগে দীপু আমার মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। আমরা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। দিন পাঁচেক পরে বাড়ি ফিরে আসার পর মেয়েকে অনেক করে বুঝিয়েছিলাম। গভীর রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে দীপুর সঙ্গে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে আমার মেয়ে।” প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, প্রেমের সম্পর্ক বাড়ির লোকজন মেনে না নেওয়ার কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে ওই দুজন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.