Advertisement
Advertisement
BJP Leader Arrested

Nadia: কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার BJP’র প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান

গত বিধানসভা নির্বাচনে তিনি বিজেপি প্রার্থীর নির্বাচনী কনভেনার ছিলেন।

Nadia: BJP Leader arrested for scam in 100 days work scheme | Sangbad Pratidin

কৃষ্ণনগর জেলা আদালতে তোলা হচ্ছে বিজেপির প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান রামচন্দ্র সরকারকে। ছবি: দেবব্রত মালাকার।

Published by: Abhisek Rakshit
  • Posted:August 11, 2021 7:44 pm
  • Updated:August 11, 2021 7:44 pm  

বিপ্লব দত্ত, কৃষ্ণনগর: একাধিক ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে ১০০ দিনের কাজে কোটি টাকার দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে বিজেপির (BJP) একজন প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধানকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। নদিয়ার নাকাশিপাড়া থানার গাছা বাজার এলাকা থেকে মঙ্গলবার রাতে প্রাক্তন ওই পঞ্চায়েত প্রধানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ওই প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধানের নাম রামচন্দ্র সরকার। তিনি মুড়াগাছা গ্রাম পঞ্চায়েতে ২০১৩ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিজেপির প্রধান ছিলেন। এলাকায় একজন প্রভাবশালী নেতা হিসেবে তিনি পরিচিত। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রধান থাকাকালীন তাঁরই নির্দেশে ওই পঞ্চায়েত এলাকায় ১০০দিনের কাজের প্রকল্পে প্রায় ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকার আর্থিক তছরুপ করা হয়েছে। ওই এলাকার ব্যাংকের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে খোলা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ১০০ অ্যাকাউন্ট। যার মধ্যে অধিকাংশই ভুয়ো। যাঁদের নামে খোলা হয়েছে অ্যাকাউন্ট, তারা অনেকে জানতেনই না। তাঁদের অনেকের কাগজপত্রের জেরক্স জমা দিয়ে অন্য কারও আঙ্গুলের টিপ ছাপ ব্যবহার করা হয়েছে অ্যাকাউন্ট। ১০০ দিনের যেসব কাজ করা হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে, তা আদৌ করা হয়নি। অথচ কাজ হয়েছে দেখিয়ে ভুয়ো অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে টাকা।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ফোনে মিলছে না সাড়া, Corona Vaccine-এর প্রথম ডোজ নেওয়ার পর নিখোঁজ ৫ লক্ষ মানুষ]

দুর্নীতির সঙ্গে ওই পঞ্চায়েতের কয়েকজন সরকারি কর্মীও জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ। এছাড়া ব্যাংকের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের কয়েকজন কর্মীরও ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তছরূপ করার তাগিদে ১০০ দিনের কাজ দেওয়ার জন্য নকল স্কীম তৈরি করা হয়েছে। অথচ সেই সকল স্কীমে কোন কাজই হয়নি। যাঁদের নামে খোলা হয়েছে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট, তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ ব্যাংকে নিজেদের উদ্যোগে অ্যাকাউন্ট করতে গিয়ে জানতে পারেন যে, আগে থেকেই তাঁদের নামে অ্যাকাউন্ট খোলা রয়েছে। বিষয়টি জানার পর কার্যত হতবাক হয়ে যান তাঁরা। নাকাশিপাড়া ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষয়টি নজরে আসার পর তৎকালীন ব্লক উন্নয়ন আধিকারিকের উদ্যোগে প্রশাসনিক তদন্ত শুরু হয়। তদন্তে দুর্নীতির প্রাথমিক অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর তৎকালীন ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দুর্নীতির ও আর্থিক তছরুপের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

তৎকালীন বিজেপির প্রধান রামচন্দ্র সরকার-সহ মোট ২২ জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে ওই পঞ্চায়েত অফিসের কর্মীদের নামও রয়েছে। আর্থিক ওই দুর্নীতির ঘটনায় পরিকল্পিতভাবে বেশ বড় আকারের জাল বিস্তার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা চলতে থাকে। যদিও আগাম জামিন নেওয়ার জন্য প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান রামচন্দ্র সরকার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে তার আগাম জামিন না-মঞ্জুর হয়ে যায়। এরপরেই নাকাশীপাড়া থানার পুলিশ মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর মূল অভিযুক্ত রামচন্দ্র সরকারকে গ্রেপ্তার করে। বুধবার তাকে কৃষ্ণনগর জেলা আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে ১৪দিনের জন্য জেল হেপাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, নাকাশিপাড়া বিধানসভা এলাকায় একজন প্রভাবশালী বিজেপি নেতা হিসাবে পরিচিত রামচন্দ্র সরকার। গত বিধানসভা নির্বাচনে তিনি বিজেপি প্রার্থীর নির্বাচনী কনভেনার ছিলেন। যদিও ওই কেন্দ্রে জয়লাভ করে তৃণমূল কংগ্রেস।

[আরও পড়ুন: আত্মহত্যা নাকি খুন? বর্ধমান মেডিক্যালের জুনিয়র চিকিৎসকের মৃত্যু ঘিরে ধোঁয়াশা]

রামচন্দ্র সরকারকে গ্রেপ্তার করা নিয়ে অবশ্য তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছে বিজেপি। বিজেপি নেতা মহাদেব সরকার, নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার মুখপাত্র সন্দীপ মজুমদারের অভিযোগ, ‘অভিযুক্ত অন্য কাউকে গ্রেপ্তার না করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের দলের নেতা রামচন্দ্র সরকারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তৃণমূল বিধায়কের অঙ্গুলিহেলনেই এই গ্রেপ্তার। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত সরকারি অফিসারদেরও গ্রেপ্তার করা হয়নি। বিজেপিকে চমকাতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু কোন লাভ হবে না। আইনের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। ‘ যদিও এ বিষয়ে নাকাশিপাড়ার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক কল্লোল খাঁ বলেছেন, ‘বিজেপির ওই প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের আমি বা তৃণমূল কংগ্রেসের কেউ করেননি। করেছেন সেই সময়ের ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক। তাই বিজেপি ফালতু কথা বলে বাজার গরম করতে চাইছে। এই গ্রেপ্তার অনেক আগেই হওয়া উচিত ছিল। দুর্নীতির সঙ্গে যারা যুক্ত,তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা দাবি আমরা আগাগোড়াই করছি। আমরা চাই, আইন আইনের পথে চলুক। ‘

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement