ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: কোথাও ২৭-২৮ টাকা, কোথাও বা ৩০ টাকা প্রতি কেজিতে বিক্রি হচ্ছে আলু। এই বাড়তি দাম আর নয়। খুচরো বাজারে আলুর দাম এক সপ্তাহের মধ্যে ২৫ টাকায় নামিয়ে আনতে হবে। জরুরি ভিত্তিতে আলু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে এই নির্দেশ দিল নবান্ন।
শুধু আলু নয়, গত কয়েক সপ্তাহে একাধিক সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। কারণ হিসেবে লকডাউন (Lockdown), জ্বালানির বর্ধিত মূল্যর সঙ্গে টানা বর্ষণকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। খুচরো বাজারে চন্দ্রমুখী আলুর দাম এই মুহূর্তে কেজি প্রতি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। এক কেজি জ্যোতি আলু বিকোচ্ছে ২৮ থেকে ৩০ টাকায়। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে পটল, ঝিঙে, ভেন্ডি, বেগুন, টমেটো, লঙ্কার দাম। সব সবজিই প্রায় ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিকোচ্ছে। লঙ্কা ১৫০ টাকায়। অর্থাৎ লকডাউন আর জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির যুক্তি দেখিয়ে নিত্যদিনের বাজার এখন অগ্নিমূল্য। সূত্রের খবর, বাজারের এই অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Mamata Banerjee)। তিনিই পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনার নির্দেশ দিয়েছেন।
রাজ্যে সপ্তাহে দু’দিন লকডাউন ঘোষণার মুখে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। একদিকে আতঙ্কে জিনিসপত্রের বাড়তি চাহিদা। তার মধ্যে জোগান কম থাকার যুক্তি দিচ্ছেন বিক্রেতারা। ফলে বাড়তি দামেই আলু বা সবজি কিনতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার নবান্নে হিমঘর মালিকদের সংগঠন, আলু ব্যবসায়ী সমিতির কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন সুফল বাংলা ও রাজ্যের কৃষি অধিকর্তারা। সেখানেই আলুর দাম কেজিতে ১০ টাকা কমিয়ে আনার নির্দেশ দিল নবান্ন। সূত্রের খবর, পাঁচদিন সময় দেওয়া হয়েছে আলু ব্যবসায়ী ও হিমঘর মালিকদের। জানানো হয়েছে, সুফল বাংলাকে প্রতি কেজি আলু ২২টাকায় দিতে হবে। সেই আলু খুচরো বাজারে ২৪-২৫ টাকায় বিক্রি করা যাবে। এই মুহূর্তে কলকাতার পাইকারি বাজারে আলু বিকোচ্ছে ২৫ টাকায়। জেলায় সেই দামটাই ২৩ টাকা। কলকাতার পাইকারি বাজারে হুগলির সিঙ্গুর থেকে আলু আসে। বিক্রি হয় কেজি প্রতি ২৫-২৬ টাকায়। অথচ খুচরো বাজারে তার দাম উঠে যাচ্ছে ৩৫ টাকা। নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্যে আলুর জোগান যথেষ্ঠ। তারপরও কেন দামের এই বিরাট ফারাক, তারই কারণ জানতে এদিন বৈঠকে বসা হয়।
ব্যবসায়ী সমিতি ও হিমঘরের মালিকদের সংগঠন জানিয়েছে, এই মুহূর্তে মোট মজুতের ৬৫% আলু আছে। এপ্রিল, মে, জুন এই তিন মাসে ৩৫% আলু বেরিয়ে গিয়েছে। ডিসেম্বর পর্যন্ত ওই ৬৫% দিয়ে চালাতে হবে। তাঁদের যুক্তি, গতবার উৎপাদন কম হয়েছে। অন্যান্যবারের উৎপাদন ১.২০ কোটি টন। এবার তা কিছুটা কমেছে, মোট উৎপাদিত আলু এবার ১ কোটি টন। তাতে উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড বা পাঞ্জাবে আলুর উৎপাদন কম হয়েছে। কিন্তু তারপরও হিসেব অনুযায়ী আলু যথেষ্ট মজুত রয়েছে হিমঘরে। তার পরও দাম এতটা বাড়ার পিছনে ফাটকাবাজিই দায়ী বলে মনে করছে নবান্ন। নজরদারি চালাতে তাই হিমঘরে চাষি বা ব্যাবসায়িরা কী পরিমাণ আলু মজুত রাখছেন, তা জানতে তালিকা চেয়েছে নবান্ন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.