ফাইল ফটো
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ঝাড়খণ্ড লাগোয়া পুরুলিয়ায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে গৃহ পর্যবেক্ষণের সংখ্যা। কিন্তু এই জেলা খুঁজেও করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে চিকিৎসকদের পরামর্শমত N-95 মাস্ক পর্যাপ্ত মিলছে না। ফলে তিরিশ-চল্লিশ থেকে দেড়শ টাকায় সার্জারি ও সাধারণ মাস্কই ভরসা। কিন্তু সেই মাস্কে সংক্রমণ ঠেকবে তো? মাস্ক না পাওয়ায় করোনা ভীতি যেন আরও বাড়ছে ঝাড়খণ্ড লাগোয়া এই জেলায়।
সেই সঙ্গে মাস্কের বিপুল চাহিদায় যাতে এই জেলায় কালোবাজারির পরিস্থিতি না হয় তাই আগেভাগেই মাঠে নামল পুরুলিয়া জেলা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ। বৃহস্পতিবার এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ শহর পুরুলিয়ার বিভিন্ন ওষুধ দোকানে গিয়ে হানা দেয়। একাধিক ওষুধ দোকান পরিদর্শন করে মাস্কের চাহিদার টের পেলেও এই মাস্ক বিক্রিকে ঘিরে কোন বেনিয়ম হচ্ছে না বলেই এদিন পুরুলিয়া জেলা পুলিশ থেকে জানানো হয়। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস সেলভামরুগুন বলেন, “তবে পুরুলিয়া শহরে মাস্কের বিপুল চাহিদা মেটাতে পুরুলিয়া পুরসভা প্রায় তিরিশ হাজার মাস্কের জন্য পুর ও নগরোন্নয়ন বিভাগকে বলেছে। এই পুরসভার প্রত্যেকটি ওয়ার্ডকে আপাতত এক হাজার করে মাস্ক দেবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাকি মাস্ক পুরপ্রধান পরিস্থিতি বিচার করে বিভিন্নজনকে দেবেন বলে পুরুলিয়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে।
শহর পুরুলিয়া ও রঘুনাথপুরে কিছু মাস্ক থাকলেও ঝালদা পুর শহরে কোন মাস্ক মিলছে না। ফলে ক্ষুব্ধ মানুষজন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। ঝালদা পুর শহরের বাসিন্দা তথা ঝালদা অচ্ছ্রুরাম কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ইন্দ্রজিৎ দাস বলেন, “ঝালদা পুর শহরে কোন মাস্ক নেই। পুরুলিয়ায় টিউশন পড়তে গিয়ে সেখানেও পাইনি।” একই অভিজ্ঞতা ঝালদা এক নম্বর ব্লকের দঁড়দা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা তথা ঝালদা পুরসভার গাড়ির চালক সুশান্ত মাহাতোর। তাঁর কথায়, “আমাকে পুরসভার কাজে বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। কিন্তু ঝালদা শহরে মাস্ক পাচ্ছি না। এভাবে খালি মুখে বার হতে এবার সত্যিই ভয় লাগছে।” ব্লকের পরিস্থিতি আরও খারাপ। তবে মাস্কের জন্য ব্লক প্রশাসনও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের কাছে জানিয়েছে। কিন্তু এই মাস্ক কবে আসবে তা বলতে পারছে না জেলা প্রশাসনও।
পুরুলিয়ার পুরপ্রধান শামিম দাদ খান বলেন, “আমরা পুরসভার তরফে এই শহরের জন্য প্রায় তিরিশ হাজার মাস্ক নিয়ে আসছি। আপাতত ভেবেছি প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে এক হাজার করে দেব। ইতিমধ্যেই করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে আমরা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সচেতনতার প্রচার শুরু করে দিয়েছি।” তবে সচেতনতার প্রচার চললেও সেই প্রচার যেন ধাক্কা খাচ্ছে মাস্ক না মেলায়। তাই এই পুরসভার শাসকদলের কাউন্সিলররা নিজ উদ্যোগেই মাস্কের ব্যবস্থা করছেন। বুধ ও বৃহস্পতিবার দু’দিন ধরে পুরুলিয়া পুরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বিভাসরঞ্জন দাস বাসস্ট্যান্ড সহ তাঁর ওয়ার্ডে মাস্ক বিলি করেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.