Advertisement
Advertisement

এইচআইভি পজিটিভ, মাধ্যমিক পাস করেও লেখাপড়া ছাড়ার পথে পাঁচ পড়ুয়া

এদের ভরতির বিশেষ ব্যবস্থার জন্য দাবি উঠেছে।

N 24 Parganas: HIV+ candidates pass WBCHSE exams, stigmatized
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:June 11, 2018 10:52 am
  • Updated:June 11, 2018 10:52 am  

ব্রতদীপ ভট্টাচার্য:  অশিক্ষা, কুসংস্কার আর দারিদ্র্য। জীবনে প্রতিবন্ধকতার শেষ নেই। কিন্তু, সেইসব প্রতিবন্ধকতাকে তুচ্ছ করে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষার সসম্মানে উত্তীর্ণ ওরা। কিন্তু, তারপর? একাদশ শ্রেণিতে কি ভরতি হতে পারবে এইচআইভি আক্রান্ত  মণীষা, ফাতিমা, সঞ্জয়, সোহম ও পূজা (নাম পরিবর্তিত)?  মারণ রোগের কারণে কারও বাবা-মা কর্মহীন, কেউ আবার হারিয়ে ফেলেছেন বাবা-মাকেই। চরম দ্রারিদ্রে দিন কাটে উত্তর চব্বিশ পরগনার জেলার পাঁচ এইচআইভি আক্রান্ত পড়ুয়ার। সুস্থ থাকতে দু’বেলা পেটভরে খাবার জোগাড় করতেই হিমশিম অবস্থা। কোনওমতে মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেছে তারা। কিন্তু, একাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনার খরচ জোগাবে কে? ভে্বে কুলকিনারা করতে পারছে না ওই কিশোর-কিশোরীরা। তাই মাঝপথেই পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।

[উচ্চমাধ্যমিকে মার্কশিট বিভ্রাট, ৪০-এর মধ্যে ৪১ নম্বর পেয়ে বিপাকে ছাত্রী]

Advertisement

বাবা-মা দু’জনেই এইচআইভি পজিটিভি। শরীরে মারণ ব্যাধি নিয়েই জন্মেছে উত্তর চব্বিশ পরগনার বিড়ার বাসিন্দা ফতিমা। রোগের কথা জানাজানি হতেই কাজ হারিয়েছেন তার বাবা। কোনওমতে দিন চলে। ৩১১ নম্বর পেয়ে মাধ্যমিক পাস করেছে ফতিমা। একাদশ শ্রেণিতে ভরতি হওয়ার জন্য প্রয়োজন মাত্র ৯০০ টাকা। কিন্তু, মেয়ের পড়াশোনার জন্য সেটুকু টাকা দেওয়ারও সামর্থ্য নেই হতদরিদ্র পরিবারটির। বনগাঁর সোহম ও ব্যারাকপুরের পুজার অবস্থা তথৈবচ। এইচআইভি তাদের বাবাকে কেড়ে নিয়েছে। সোহমের মা-ও এইচআইভি-তে আক্রান্ত। কোথাও কাজ পাননি তিনি। স্থানীয় একটি চপের দোকানে কাজ করে কোনওমতে নিজের ও মেয়ের মুখে খাবার জোগাচ্ছেন। পড়াশোনা শিখিয়ে ছেলেকে স্বাবলম্বী করতে চান। কিন্তু, স্বপ্নপূরণে অন্তরায় দারিদ্র্য। সোহমের মা জানালেন, ‘ছেলে মাধ্যমিক পাস করেছে। কিন্তু এগারো ক্লাসে ভরতির টাকা কোথায় পাব? ভেবেছিলাম আমাদের মতো ওর ভবিষ্যৎ হবে না। কিন্তু কোনও উপায় নেই।‘ পূজারও পরিস্থিতি একই।এইডসে আক্রান্ত হয়ে যখন বাবা-মা মারা যান, তখন নেহাতই শিশু বিরাটির মণীষা। বোঝার মতোও বয়স ছিল না তার। দিদার কাছে মানুষ হয়েছে মণীষা। এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেছে সে-ও।

জেলার পাঁচ এইচআইভি পজিটিভ পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত এইডস আক্রান্তদের সংগঠন এনএনপি প্লাসের সদস্যরাও। সংগঠনের সদস্য সমীর দাসের বক্তব্য, ‘বিভিন্ন জায়গা থেকে অনুদান নিয়ে জেলার প্রায় ৮১ এইচআইভি শিশুর খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। এই অনুদানেই কোনওমতে সংগঠন চলে। তাই সংগঠনের তরফেও মাধ্যমিক পাস এই ছাত্র-ছাত্রীদের ভরতির খরচ জোগানো সম্ভব হচ্ছে না। সরকার এগিয়ে না এলে, মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যাবে পড়াশোনা।’

[জাতীয় সড়কের পাশে পথনির্দেশে ব্রাত্য বাংলা ভাষা, অসন্তোষ দুর্গাপুরে]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement