ছবি: প্রতীকী
রাজা দাস ও কল্যাণ চন্দ্র : নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAB)-এর প্রতিবাদে বিজেপি ছাড়ছেন সংখ্যালঘু নেতারা। সংসদে এই বিতর্কিত বিল পাশ হতেই দল ঠারেঠোরে দল ছাড়ার কথা জানিয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী হুমায়ন কবীর। এদিকে, শুক্রবারই রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপি ছাড়ার ঘোষণা করেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের সদস্য তথা পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মফিজুদ্দিন মিঁঞা৷ তাঁদের অভিযোগ, দেশ জুড়ে সংখ্যালঘু মানুষের অধিকার খর্ব করতে চাইছে বিজেপি নেতৃত্ব। গেরুয়া শিবিরের এই অ্যাজেন্ডার বিরোধিতা করেই দল ছাড়তে চাইছেন ওই সংখ্যালঘু নেতারা।
১৮ মাস আগে বিজেপিতে গিয়েছেন হুমায়ন কবীর। কিন্তু এই বিতর্কিত বিলের প্রতিবাদে দল ছাড়ার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। শুক্রবার হুমায়ুন কবীর বলেন, “বিজেপির কাশ্মীর নিয়ে ৩৭০ ধারা, বাবরি মসজিদ রায় এবং এনআরসির সিদ্ধান্ত অনুগামীরা মেনে নিতে পারছেন না। অনুগামীদের কথা মাথায় রেখে বিজেপি ছাড়ছি।” তবে এখনও পদত্যাগ পত্র দেননি তিনি। তবে কি তৃণমূলে যোগ দেবেন তিনি? এই প্রশ্নের জবাবে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী বলেন, “তৃণমূল ডাকলে নিশ্চই যাব।” এ বিষয়ে বিজেপির মুর্শিদাবাদের জেলা সভাপতি গৌরীশংকর ঘোষ বলেন, “উনি এখানে কোনও পদত্যাগপত্র জমা করেননি। তবে অনেকের মুখে শুনেছি উনি নাকি দল ছাড়ছেন।”
তবে শুক্রবার নিজের নির্বাচনী এলাকা কুমারগঞ্জে সাংবাদিক বৈঠকে করে মফিজুদ্দিন মিঁঞা জানান, “তৃণমূলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকায় তাঁরা কয়েকজন বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলাম। কিন্ত এখন বিজেপির জন্য সারা দেশে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের নামে সারা ভারতে যে পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তাতে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে।” মফিজুদ্দিন মিঁঞা জানান, দেশ জুড়ে তৈরি হওয়া অশান্তির প্রতিবাদে বিজেপির সদস্যপদ ত্যাগ করলেন তিনি। সদ্য দলত্যাগী মফিজুদ্দিন মিঁঞার কথায়,“মানুষকে এখন রুটিরুজি, জীবিকা, পড়াশোনা নিয়ে চিন্তা না করে নাগরিকত্ব নিয়ে ভাবতে হচ্ছে।” তবে এদিন তৃণমূলে যোগ দেননি তিনি। জানান, আপাতত নির্দল সদস্য হয়েই কাজ করবেন। কিন্তু পরে তৃণমূলের তরফে প্রস্তাব এলে সমস্ত দিক বিচার করে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান মফিজুদ্দিন।
জানা গিয়েছে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের ১৮ সদস্যর মধ্যে ১৩ জনই তৃণমূলের সদস্য। সভাধিপতি-সহ মোট পাঁচজন বিজেপিতে ছিলেন। তাঁদের মধ্যে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মফিজুদ্দিন মিঁঞা শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপি ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন। এদিন জেলা পরিষদে আরও একজন সদস্য কমল বিজেপির। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে অসম-সহ গোটা দেশে বহু নেতা-কর্মী বিজেপি ছেড়েছেন বলে খবর। তবে এই রাজ্যে সেরকম নজির নেই। মফিজুদ্দিনই প্রথম এই বিতর্কিত আইনের প্রতিবাদে বিজেপি ছাড়লেন বলে খবর।
বুধবারই সংসদের দুই কক্ষে পাশ হয়েছে বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিল। এই বিলকে সাম্প্রদায়িক ও সংবিধান পরিপন্থী বলেও সরব হয়েছেন বিরোধীরা। বিলের বিরোধিতার অগ্নিগর্ভ উত্তর-পূর্ব ভারত। অশান্তিতে ইতিমধ্যে অসমে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচজন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.