নিজস্ব সংবাদদাতা, বহরমপুর: মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার তদন্তে নেমে কংগ্রেস কর্মী অমল গুপ্তকে গ্রেফতার করল সিআইডি৷ রবিবার তদন্তের পর নির্দিষ্ট সূত্র পেয়ে আটক করা হয় বহরমপুর পুরসভার এই কর্মীকে৷ বহরমপুরের সিআইডি অফিসে এনে টানা জেরা করা হয় তাঁকে৷ এডিজি সিআইডি রাজেশ কুমার জানিয়েছেন, “অমলবাবুর বক্তব্যে প্রচুর অসঙ্গতি ছিল৷ ঘটনা ঘটনার সময় তাঁর কাজকর্ম এবং অবস্থান নিয়েও সন্তোষজনক উত্তর অমলবাবু দিতে পারেননি৷ তাই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷”
আজ আদালতে তোলা হবে অমল গুপ্তকে৷ আরও জেরা করার জন্য তাঁকে নিজেদের হেফাজতে চাইবে সিআইডি৷ সূত্রের খবর, অগ্নিসংযোগে মদত দেওয়া এবং হইচই বাধিয়ে রোগীর আত্মীয়দের পালানোর জন্য উসকানি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে অমলবাবুর বিরুদ্ধে৷ রবিবার টানা জেরার পর গ্রেফতার করা হলে অমলবাবু অসুস্থ হয়ে পড়েন৷ তাঁকে তখনই সিআইডি প্রহরায় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷
জানা গিয়েছে, মেডিক্যাল কলেজে অমলবাবু কংগ্রেসের পক্ষ থেকে রোগী সহায়তা কেন্দ্র চালাতেন৷ সেখানে নিয়মিত বসতেন৷ তিনি কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরির খুব ঘনিষ্ঠ অনুগামী৷ তাঁকে গ্রেফতারের পর কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়েছে, মেডিক্যাল কলেজের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কংগ্রেসের নাম জড়াতেই প্রতিহিংসাবশত একজন সাধারণ কংগ্রেস কর্মীকে বিনা দোষে আটক করা হল৷ অধীর চৌধুরি ও কংগ্রেসকে বদনাম করতে চক্রান্ত করে গ্রেফতার করা হয়েছে অমলবাবুকে৷
উল্লেখ্য, শনিবারই মেডিক্যাল কলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ রবিবার সকালেই সিআইডি ডিআইজির নেতৃত্বে হাসপাতালে পৌঁছে যায় সিআইডির দল৷ পাশাপাশি ঘটনার নমুনা সংগ্রহ করে ফরেন্সিক দল৷ এদিন দিনভর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তদন্তের পর বেশ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে তদন্তকারী দল৷ ভিআইপি কেবিনে ২৪ তারিখ থেকে টানা চারদিন কেন এসি চালানো হয়েছিল৷ সেই এসি বন্ধ করার দায়িত্ব কার উপর ছিল? শুধুই গাফিলতি নাকি কোনও ষড়যন্ত্র, সে প্রশ্নেরও উত্তর খুঁজছেন সিআইডি আধিকারিকরা৷
এদিকে শনিবারের পর রবিবার মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল স্বাভাবিক ছন্দে ফিরলেও রাজনৈতিক চাপান-উতোর এদিনও অব্যাহত৷ শনিবারই চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য অভিযোগ করেছিলেন, এই অগ্নিকাণ্ডের পিছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রীকে কালিমালিপ্ত করতেই এই ঘটনা৷ কংগ্রেস সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় সিবিআই তদন্তের দাবি করেন৷ বামফ্রণ্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, “দায় এড়াতেই রাজ্য সরকার অন্তর্ঘাতের তত্ত্ব সামনে আনছে৷” মুর্শিদাবাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত তথা পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, মুর্শিদাবাদের কিছু লোকজন জমি হারাচ্ছেন বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপুল জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত৷ তাঁরা চেষ্টা করছেন ষড়যন্ত্র করার৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.