Advertisement
Advertisement

Breaking News

ভাঙন রোধে এখানে দশভুজার সঙ্গে পুজো পান মা গঙ্গাও

এখানে ভাগের মা গঙ্গা পায়।

Murshidabad: Goddess Ganga worshipped along goddess Durga here
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:September 26, 2017 3:18 am
  • Updated:September 27, 2019 6:29 pm  

শাহাজাদ হোসেন, জঙ্গিপুর: এখানে ভাগের মা গঙ্গা পায়। রীতিমতো সসম্মানে। মা গঙ্গা এই এলাকার বাসিন্দাদের কাছে আলাদা শ্রদ্ধার। তাই দুর্গার সঙ্গে পূজিতা হন দেবী গঙ্গাও।  প্রতি মুহূর্তে এই জনপদ ভাঙনের আতঙ্কে থাকে। ভাঙনের উঠোনে পুজোর আয়োজন। মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান কাঞ্চনতলার জমিদার রাঘবেন্দ্র রায়ের বাড়ির পুজো প্রায় ২৫৭ বছরের। এই পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য বাইশ পুতুলের পুজো।

[শহরের বনেদিয়ানায় আজও অটুট সাবর্ণদের ‘আটচালার পুজো’]

Advertisement

রথের দিন  রীতি মেনে শুরু হয় রায়বাড়ির প্রতিমা তৈরির কাজ। রাঘবেন্দ্র রায় মালদহ জেলা দেওনাপুর গ্রামের জমিদারবাড়িতে দুর্গাপুজো শুরু করেন। স্বাধীনতার আগে রাঘব রায় ছিলেন মূলধনী  জমিদার। তৎকালীন বাংলা, বিহার ও ওড়িশায় দুই রকম জমিদারী প্রথা ছিল। পত্তনি জমিদার ও মূলধনী জমিদার। সেই সময় গঙ্গার বাড়তি জলে কখনও বন্যা, কখনও ভাঙনের কবলে পড়ত ওই এলাকা। এর ফলে তৎকালীন জমিদার রাঘবেন্দ্র রায়  মুর্শিদাবাদের কাঞ্চনতলা, অধুনা ধুলিয়ানে ১৮২৫ সালে বর্তমান জমিদার বাড়িটি তৈরি করেন। সেই থেকে বিগত ১৯২ বছরের বেশি সময় ধরে দুর্গাপূজা হয়ে আসছে এই ধুলিয়ান শহরে। কুল-পুরোহিত দিলীপ মিশ্র জানান, “এই রায় বাড়ির পুজোয় এখনও পূর্বপুরুষের রীতি অনুযায়ী পুজো হয়।

[টানা বৃষ্টিতে পচেছে ফুল, পদ্মের দামের কাঁটা বিঁধছে পুজোর বাজারে]

জমিদারবাড়ির এই মাতৃ আরাধনাকে বাইশ পুতুলের পুজো বলা হয়। এগারো জন দেবতা। এগারোজন দেবীর প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে পুজো হয়। সত্যজিৎ রায় ‘জলসাঘর’ ছবিতে জলসাঘরের জন্য দুটি জমিদার বাড়ি বেছে নিয়েছিলেন। তা ছিল নিমতিতার জমিদার বাড়ি ও ধুলিয়ানের জমিদার বাড়ি। ধুলিয়ান জমিদার বাড়ির বাইশ পুতুলের পুজোয় দেবী দুর্গার ডানদিকে তারা, জয়া। বামদিকে বিজয়া ও নরসিংহ। দেবীর মাথার উপর শিব। তার উপরে মা গঙ্গা বিরাজমান। শিবের ডানদিকে ভৃঙ্গি, বামদিকে নন্দী। ডানদিকে রাম, লক্ষ্মণ ও মকর বাহন। অপরদিকে বিষবাহন। সঙ্গে অসুর সিংহ। লক্ষী, সরস্বতী, গণেশ ও কার্তিক বিরাজমান। নবমীর দিন জমিদার বাড়ির রীতি মেনে ২০-৪০ ও ৪০-৬০ বছর বয়সিদের নিয়ে দুটি ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। শুধুমাত্র জমিদার বাড়ির সদস্যরাই এই  খেলায় অংশ নেন। দশমীর দিন জমিদার বাড়ির মূল দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাইরের লোকদের বাড়ির ভিতরে প্রবেশ নিষিদ্ধ। জমিদার বাড়ির পুরুষরা ঢাক বাজান। মহিলারা দেবীকে বরণ করেন। দেবীকে কাঁধে করে নিয়ে যাওয়া হয় ধুলিয়ান গঙ্গাঘাটে। বাইচ প্রতিযোগিতা হয়। জমিদার বাড়ির বাইশ পুতুলের দুর্গাকে ঘিরে গঙ্গা ঘাটে রীতিমতো উন্মাদনা সৃষ্টি হয়। একটা সময় ছিল ধুলিয়ানে এটাই ছিল একমাত্র দুর্গাপুজো। পুজোর সংখ্যা এখন অনেক বাড়লেও নিজস্বতায় এখনও স্বতন্ত্র রায়বাড়ির মহাপুজো।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement