সাবির জামান, লালবাগ: প্রশাসনিক এবং নাগরিক পরিষেবা প্রদানের কাজে সুবিধা করে দেওয়ার জন্য রাজ্যে নতুন সাত জেলা তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভাঙা হবে মুর্শিদাবাদ জেলাও (Murshidabad)। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বিরোধিতায় সরব বিজেপি-কংগ্রেস। বিরোধিতায় রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং রাজ্যপালকে চিঠি দিলেন মুর্শিদাবাদের বিজেপি বিধায়ক (BJP MLA) গৌরীশঙ্কর ঘোষ। তাঁর অভিযোগ, বাংলার ইতিহাস থেকে মুর্শিদাবাদের গুরুত্ব মুছে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে। তাই এই জেলাকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবি তুলেছেন তিনি। রাজ্যের সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় সরব অধীর চৌধুরীও। বিরোধীদের এই ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।
মুর্শিদাবাদকে তিনটি জেলায় ভাঙার কথা-বহরমপুর , কান্দি এবং জঙ্গিপুর। বদলে যেতে পারে জেলার নামও। এনিয়েই ঘোর আপত্তি বিজেপি বিধায়কের। চিঠিতে গৌরীশঙ্কর ঘোষ লিখেছেন,”অবিভক্ত বাংলা-বিহার-ওড়িশার রাজধানী ছিল মুর্শিদাবাদ। ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা চলছে। তাই জন্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মুর্শিদাবাদ জেলাকে ভাঙতে চাইছেন।” এরপরই তাঁর আরজি মুর্শিদাবাদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে এই জেলাকে স্বাধীন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা হোক। একইসঙ্গে এভাবে জেলা ভেঙে রাজ্যের উন্নতি হয় না বলেও দাবি করেছেন বিজেপি বিধায়ক। রাজ্যের এই পরিকল্পনা আটকাতে আন্দোলন করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
মুর্শিদাবাদ ” নামে একটি পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি করে আমাদের অবিভক্ত বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার রাজধানী মুর্শিদাবাদের হৃত গৌরব আমাদের ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন জানাচ্ছি।@narendramodi @PMOIndia @rashtrapatibhvn @AmitShahOffice @AmitShah pic.twitter.com/binAtxNhet
— Gouri Sankar Ghosh (@GouriSankarBjp) August 2, 2022
এদিকে রাজ্যের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। তাঁর কথায়, “মুর্শিদাবাদ জেলার নাম মুছে বাংলার ইতিহাসকে মুছে দেওয়ারর চেষ্টা করছেন। এ মুর্শিদাবাদ তথা বাংলার মানুষ কোনওদিন মেনে নেবে না। এর বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলবে, যতদূর যেতে হয় আমরা যাব।”
বিরোধীদের পালটা দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, “বিজেপি তো সস্তার রাজনীতি করছে। আর অধীর চৌধুরী তো বাংলা থেকে কংগ্রেসকে মুছে দিয়েছেন। মুর্শিদাবাদ থেকে মুছে গিয়েছেন। তারপরেও এসব বলবেন। উনি তো ওয়াইপার, সব মুছে দিতে বিশেষজ্ঞ।”
এদিকে নতুন জেলার নামকরণ এবং জেলা ভাগের প্রতিবাদে নদিয়ার বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনে সামিল হয়েছেন অরাজনৈতিকভাবে বিভিন্নস্তরের মানুষ। শান্তিপুরের নাগরিকদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী বলেন, “যারা প্রতিবাদ করছেন, আমি তাদের বিরোধিতা করছি না।এখনও সার্কুলার আসেনি।মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর আগে নবদ্বীপকে হেরিটেজ ঘোষণা করেছেন। তিনি কৃষ্টি সংস্কৃতিকে যথেষ্ট সম্মান দিয়ে থাকেন। আমার বিশ্বাস, নামের বদল হওয়া অস্বাভাবিক নয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.