অতুলচন্দ্র নাগ, ডোমকল: জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। হাত-পা কিছুই ঠিক নেই। দুটি হাত ও ডান পা অসাড়। বাঁ পায়েই যা, সামান্য একটু শক্তি আছে। কিন্তু, চরম শারীরিক প্রতিবন্ধকতাও দমাতে পারেনি মুর্শিদাবাদের রানিনগরের হাসিবুল ইসলামকে। অনুলেখক সাহায্যে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে সে।
[যে হাত থেকে গুলি ছুটেছিল, সে হাতেই এখন পরীক্ষার কলম]
বাড়িতে বোনেদের বই দেখেই অক্ষরের সঙ্গে পরিচয়। ছোটবেলা থেকে কলম না ধরে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে হাসিবুল। এমনকী, স্কুলেও কোনওদিন লিখে পরীক্ষা দিতে হয়নি। মৌখিক পরীক্ষায় হাসিবুলের মেধা বিচার করেছেন শিক্ষকরা। এভাবেই দশম শ্রেণিতে উঠেছে হাসিবুল। কিন্তু, মাধ্যমিক পরীক্ষায় যে না লিখে উপায় নেই! মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী হাসিবুল ইসলাম জানিয়েছে, ‘ স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পরামর্শে বোর্ডের কাছে অনুলেখকের জন্য আবেদন করেছিলাম। আমার আবেদন মঞ্জুর করেছে বোর্ড। অনুলেখকের সাহায্যে পরীক্ষা দিচ্ছি।’ কিন্তু, তাতেও যে সমস্যা পুরোপুরি মিটেছে, এমন নয়। মুর্শিদাবাদের এই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী বলেন, ‘মাধ্যমিক পরীক্ষায় অনুলেখক হিসেবে পেয়েছি অষ্টম শ্রেণির ছাত্রকে। বলে দিলেও তার কাছে মাধ্যমিকের প্রশ্নের উত্তর লেখা কঠিন।’ হাসিবুলের অনুলেখক তাঁর পাড়ারই ছেলে রামিজ রাজা।
[সকালে আত্মহত্যার চেষ্টা, বিকেলে নতুন জীবন পেলেন যুগল]
জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় হাসিবুল ইসলামে সিট পড়েছে কাতলামারি উচ্চ বিদ্যালয়ে। পড়াশোনায় তার উৎসাহ দেখে মুগ্ধ ওই স্কুলের শিক্ষকরাও। কাতলামারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মনোজকুমার দাস বলেন, ‘ছেলেটার অদম্য ইচ্ছা দেখে অবাক হয়েছি। হাতের সমস্যায় লিখতেই পারছে না ঠিকই। কিন্তু, অনুলেখককে মুখে বলে পরীক্ষা দিচ্ছে। ওর প্রয়াস সফল হোক এটাই কামনা করি।’
[বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে সহবাস, ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিতে আত্মঘাতী ছাত্রী]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.