ব্রতদীপ ভট্টাচার্য: তিন বছরের শিশুর সামনে তার মা’কে চেয়ারে বেঁধে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর খুনের বিচার চেয়ে জামাই-সহ পরিবারের অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন ওই বধূর বাবা। তবে আদালত থেকে জামিন পেয়ে ওই বধূর বাপের বাড়ির লোকেদের ক্রমাগত চাপ দিতে থাকে অভিযুক্তরা। গত এক সপ্তাহ ধরে মামলা প্রত্যাহার করার জন্য বাড়ি এসে হুমকি দিয়ে যায় তারা। সেই হুমকির জেরে অবশেষে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হলেন ওই প্রৌঢ়। শনিবার ভোরে আর জি কর হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। তবে শেষ নিশ্বাস ফেলার আগে পুলিশের কাছে মৃত্যুকালীন জবানবন্দি দিয়ে যান তিনি। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
বছর দু’য়েক আগে বারাসত থানা এলাকার হৃদয়পুরে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় নিতা পাল নামে ওই গৃহবধূর। তাঁর স্বামী প্রবীর পাল ও পরিবারের অন্যরা ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে দাবি করে। তবে গোটা ঘটনা মোড় নেয় ওই বধূর সাড়ে তিন বছরের শিশুর বয়ানে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই শিশু বলে, ঘটনার দিন রাতে মায়ের গোঙানিতে তার ঘুম ভাঙে। সে দেখে তার বাবা, কাকা, জ্যাঠা, ঠাকুরদা ও ঠাকুমা মিলে তার মাকে মারতে মারতে অন্য ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে একটি চেয়ারের সঙ্গে তাঁকে বেধে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। এমনকী ওই শিশুটিকেও তাঁর সঙ্গে জ্বালিয়ে দেওয়ার জন্য উদ্যত হয় তার ঠাকুরমা। যদিও অন্যদের আপত্তিতে তার প্রাণ রক্ষা পায়। মেয়ের খুনের সুবিচার চেয়ে বারাসত থানায় মামলা দায়ের করেন ওই বধূর বাবা খোকন সাহা। নিতাদেবীকে খুনের অভিযোগে, তাঁর স্বামী প্রবীর, দেওর তন্ময়, ভাসুর সুবীর, শ্বশুর গৌতম ও শাশুড়ি গীতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে মাস সাতেক পর হাই কোর্ট থেকে জামিনে পেয়ে যায় তারা।
তবে বিচারক নির্দেশ দেন, থানায় হাজিরা দেওয়া ছাড়া উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় ঢুকতে পারবে না অভিযুক্তরা। ওই বধূর মা রুবি সাহার অভিযোগ, জামিন পাওয়ার পর থেকেই মামলা প্রত্যাহার করার জন্য চাপ দিতে থাকে প্রবীর ও তার পরিবারের লোকেরা। এবিষয়ে মধ্যমগ্রাম থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করেন তিনি। তবে তাতে কোনও কাজ হয়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.