নিজস্ব সংবাদদাতা: খুন হওয়ার দু’সপ্তাহ বাদে জীবিত অবস্থায় ফিরে এল ‘মৃত’ কিশোর৷ প্রাথমিকভাবে ভূত বলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে৷ শুক্রবার সকালে সাঁকরাইলের নলপুরে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে৷ গতমাসের ২৮ তারিখ বাড়ি থেকে বেরিয়ে ফিরে আসেনি নলপুর রঘুদেববাটি পশ্চিমপাড়ার বছর পনেরোর কিশোর এনামুল পুরকাইত৷ পরের দিন প্রতিবেশীরা তার বাড়ির লোককে জানায়, স্থানীয় আর এক কিশোর মইন মিদ্দের সঙ্গে তাকে দেখা গিয়েছিল৷ সেই মতো মইনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাড়ির লোকজন৷ মইন ঘটনার কথা স্বীকার করে বলে, একটি মেয়ের সঙ্গে তার ভালবাসার সম্পর্ক রয়েছে৷ সেই মেয়েটিকে নিয়ে ইদানীং এনামুল ঘুরত৷ এনামুলকে মেয়েটির সঙ্গে মেলামেশা করতে নিষেধ করেছিল মইন৷ কিন্তু সে কথা না শোনায় মইন ও তার বন্ধু সঞ্জিত ধঁক এনামুলকে নর্থ মিলের পিছনে গঙ্গার ধারে নিয়ে যায়৷ তারপর থান ইট দিয়ে মেরে গঙ্গায় ফেলে দেয়৷ এই স্বীকারোক্তির পরই এনামুলের মা আরজিনা বেগম থানায় মইনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করেন৷ পুলিশ মইনকে গ্রেফতার করে৷ আদালতের নির্দেশে মইন এখন বাগনানের একটি হোমে বন্দি৷
এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার সকাল ন’টা নাগাদ ‘মৃত’ এনামুলের পিসি মিজানি খাতুন নলপুর স্টেশনের কাছে তাকে দেখতে পান৷ ভূত দেখার মতো চমকে ওঠেন তিনি৷ তিনি দেখতে পান, বিধ্বস্ত প্ল্যাটফর্মের একপাশে প্রায় অচেতন হয়ে পড়ে রয়েছে এনামুল৷ ভূত ভেবে মিজানি যখন মুখ ঘোরাতে উদ্যত ঠিক তখনই এনামুল তাকে হাতের ইশারায় ডাকে৷ কাছে যেতেই এনামুল নাম বলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে৷ এরপর মিজানির চিৎকারে লোকজন আসে৷ তাকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে৷ সেখানে চিকিৎসা করিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বাড়িতে৷
‘মৃত’ কিশোর জীবিত রয়েছে, এই কথা ছড়িয়ে পড়তেই এলাকার মানুষ ভিড় করে তাদের বাড়িতে৷ পুলিশের তদন্তকারী অফিসাররা এসেও কথা বলতে পারেননি৷ তাঁরাও জানতে উদগ্রীব যে এই ঘটনার পিছনে কী রহস্য রয়েছে? হাওড়া জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন বলেন, সমস্ত বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ তবে এনামুলের সঙ্গে যতক্ষণ না কথা বলা যাচ্ছে, ততক্ষণ ঘটনা অধরাই থাকছে৷ স্থানীয় মানুষজন মনে করছেন, গঙ্গায় ডুবে গিয়েও অস্বাভাবিকভাবে সে বেঁচে গিয়েছে৷ এরপর কিছুটা বিস্মৃতির ঘোরে খুঁজে বেড়িয়েছে বাড়িঘর, আপনজনদের৷ তারপর নলপুরে এসে স্টেশনে পড়ে থাকে৷ এদিকে, মইন মিথ্যে গল্প বলেছিল কি না তা নিয়েও রহস্য দেখা দিয়েছে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.