চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: পোড়ামুখ আর ড্যাবড্যাবে চোখ নিয়ে সুচিত্রা-কন্যার কোলে বসে আদর খেয়েছিল ‘বাদশা’। অণ্ডালের সভায় মুনমুন সেন তার মাথায় হাত বুলিয়ে চুমুও খেয়েছিলেন। রবিবার রাতে অণ্ডালে নির্বাচনী সভা চলাকালীন বাদশার প্রেমে মুনমুনের মজে থাকা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। বিরোধীরা জোরালো সমালোচনা করেন। তাতেও বাদশার প্রতি প্রেমে ভাটা পড়েনি মহানায়িকা কন্যার। এবার দুই মেয়ে রাইমা রিয়াকে আলাপ করানোর জন্য আবারও বাদশাকে হোটেলে ডেকে পাঠান। মা-মেয়েরা মিলে চটকে আদর করেন বাদশাকে। মুনমুন সেনের ‘দুষ্টু’ হনুছানা রিয়ার কাছে ‘কিউট ইনফ্যান্ট’।
ছ’মাসের দুষ্টু হনুশাবক ‘বাদশা’ এখন খবরের শিরোনামে। মুনমুন সেন কোলে তুলে নেওয়ার পর থেকেই ফেমাস বাদশা। রাস্তাঘাটে বাদশাকে চিনতে পারলেই ছবি তুলছেন স্থানীয়রা। সেলিফিও তুলে ফেসবুকে পোস্ট করছেন অনেকে। সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্যা বৃন্দা কারাটও নির্বাচনী জনসভায় ছোট্ট হনুর প্রসঙ্গ তুলেছেন। বিজেপির নেতারাও বাদশার প্রসঙ্গ তুলে কটাক্ষ করছেন। বলছেন, ‘যাঁরা আমাদেরকে হনুমানের দল বলত তাঁদেরই প্রার্থী হনুশাবক নিয়ে প্রচারে ঘুরছেন।’ হনুছানাকে পালন করছেন অণ্ডাল গ্রামের বাঘা পাণ্ডে। দুর্গাপুর থার্মাল পাওয়ারের ঠিকাকর্মী। দুর্গাপুজোর নবমীর দিন তাঁদের বাগানের গাছে উঠে এক মা হনুমান বাচ্চাপ্রসব করতে গিয়ে পড়ে মারা যায়। তখন থেকেই এই শিশুটিকে উদ্ধার করে তিনি পালন করছেন। বাঘা পাণ্ডে বলেন, সেই সময় বনদপ্তরকে খবর দিয়েছিলেন। কেউ কোনও সাড়া দেননি। তারপর থেকে তাঁর কাছেই আছে সে।
[আরও পড়ুন: রাস্তার পাশের দোকান থেকে সিঙাড়া কিনে কটাক্ষের মুখে নুসরত]
মুনমুন সেন কীভাবে দেখলেন বাদশাকে? বাঘা বলেন, রোড শো চলাকালীন তিনি তাঁর কাঁধে বসে থাকতে দেখেছিলেন। তখন শো থামিয়ে আদর করেন হনুছানাটিকে। এরপর দক্ষিণখণ্ডে কর্মিসভায় তাঁকে ব্লক সভাপতি মারফত ডেকে পাঠানো হয়। তখনও তিনি মঞ্চে দীর্ঘক্ষণ নিয়ে বসেছিলেন। আদর করেছিলেন। সেই ঘটনার তিনদিন পর আবারও ফোন আসে। আসানসোলের সিটি রেসিডেন্সি হোটেলে তাঁকে ডেকে পাঠানো হয় বাদশার সঙ্গে রিয়া-রাইমার আলাপ করানোর জন্য। তিনি বলেন, ‘আমি একজন সাধারণ মানুষ। কিন্তু মুনমুনদি এতটাই ভালবেসে ফেলেছেন যে সারপ্রাইজ দিতে বাদশাকে রিয়া-রাইমার বেডরুম পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছেন। এরপর রিয়া-রাইমা বেশ করে আদর করেছেন।’
ছোট্ট হনুমান শাবককে রাস্তাঘাটে যাঁরা দেখছেন তাঁরাই চিনতে পেরে ছবি তুলছেন। হোটেলকর্মী, পুলিশকর্মী থেকে পার্টিকর্মীরা ছবি তুলেছেন। তিনি জানান, শাবকটি এখন শুধু দুধ খায়। তাকে প্রতিদিন সুদল দিয়ে স্নান করানো হয়। ধারালো নখগুলি ফাইল করে দেওয়া হয়। যত্ন আত্তিতেই আছে সে। তবে মহানায়িকার মেয়ে ও নাতনিদের আদর পেয়ে সেও সেলিব্রিটি হয়ে গিয়েছে। তবে বিরোধীরা যাই বলুক, আসানসোলবাসী বেশ উপভোগ করছেন মুনমুনের বাদশা-প্রেম। আসলে ভোটের গুরুগম্ভীর প্রচারে এ যেন একটা হালকা বাতাসের মতো।
[আরও পড়ুন: রেললাইনে আটকে গেল হুডখোলা জিপ, দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেলেন মিমি]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.