চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোলে: আসানসোল কেন্দ্রে এবার দুই তারকার লড়াই। একজন গায়ক, একজন অভিনেত্রী। প্রচারে কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে রাজি নয়। পরস্পরকে টেক্কা দিয়ে ভোটারদের কাছে টানতে নানা পন্থা অবলম্বন করছেন দুই শিল্পীই। কিন্তু এদিন, মুনমুন সেন যা বললেন, তাতে কিছুটা বিতর্ক সৃষ্টি হতে পারে।
আসানসোলের তারকা তৃণমূল প্রার্থী বললেন, “এই সময় বাইরে থেকে আসবে অন্য পার্টি। তোমাদের অনেক লোভ দেখাবে। টাকা হয়তো দেবে, নিয়ে নিও। কিন্তু ভোটটা দিদিকে দিও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিও। এটা কালকে কাগজে বেরোবে, আমাকে গালাগালি দেবে। তবে, যায় হোক, তোমরা দিদিকে ভুলো না।” রবিবার রানিগঞ্জের অমৃতনগর কোলিয়ারি এলাকায় কর্মীসভায় মুনমুন সেনের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা সভাধিপতি সুভদ্রা বাউরি, তৃণমূল জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন, রানিগঞ্জ গ্রামীণ ব্লকের সভাপতি বাবু রায়-সহ অন্যরা। প্রতিপক্ষ বিজেপির প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়কে কটাক্ষ করে এদিন মুনমুন বলেন, “মানুষ আপনার হিন্দি গান শুনতে ভালবাসেন। আমি গাইতে জানি না, নইলে শুনিয়ে দিতাম। কিন্তু শুধু গান শুনিয়ে উন্নয়নের কাজ হয় না।” এদিনের কর্মিসভায় মুনমুন সেনকে দেখা যায় অন্য ভূমিকায়। বহু রাজনৈতিক গুরুগম্ভীর বিষয়কে তিনি সহজ সরলভাবে বক্তব্যের মধ্যে আনেন। হিন্দিভাষী এলাকা হওয়ায় তিনি হিন্দিতে বেশিরভাগ বক্তব্য রাখেন। আবার মজার ছলে প্রতিপক্ষদের বিদ্ধও করেন।
শনিবার আসানসোলে এসে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র দাবি করেছিলেন, মুনমুন সেনকে প্রার্থী করে বিজেপিকে আসানসোলে সুবিধা পাইয়ে দিয়েছে তৃণমূল। রবিবার মুনমুন সেন প্রথমবার তাঁর বক্তব্যে সিপিএমের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। তিনি বলেন, “কাউকে গালিগালাজ করবেন না। কাউকে আক্রমন করবেন না। সিপিএম বেচারাতো এখন মৃতপ্রায়। তাঁদেরও ভাই বন্ধু ডেকে পার্টিতে যোগদান করিয়ে নিন। তৃণমূলের হয়ে কাজে লাগান তাঁদের। বিজেপির থেকেও অনেক আসতে চাইছেন। গত পাঁচ বছরে কোনও কাজ হয়নি। যাঁরা আসতে চাইছেন তাঁদের ডেকে নিন। সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করুন।”
এদিন মুনমুনের বক্তব্যে স্পষ্ট, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবমূর্তিই তাঁর প্রচারের মূল হাতিয়ার। তিনি বলেন, “আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাজ করার সুযোগ দিন। আমি থাকি বা না থাকি, পাঁচ বছর পরেও দিদিকে মানুষ ভোট দেবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনাদের সাথেই থাকবেন।’ এদিন তিনি বলেন, ‘আসানসোলে এত গর্ত। আমার প্রায় কান্নাকাটি লাগে গাড়ির কথাটা ভেবে। গাড়িটা আমার লক্ষ্মী, অনেক কাজ আছে ওর। অনেক জায়গায় নিয়ে যেতে হবে ওকে। কলকাতার পরেই আসানসোলের নাম আসে। তবু, এখানকার রাস্তা খুব খারাপ। বিগত পাঁচ বছরে এখানকার রাস্তা ঠিক হওয়া উচিত ছিল।”
ছবি: মৈনাক মুখোপাধ্যায়
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.