দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: করোনা আবহে (Corona Pandemic) ছেলের কাছে বাড়তি বোঝা হয়ে গিয়েছিলেন বৃদ্ধা মা। আর এই সারমর্মটি বুঝতে পেরে বৃদ্ধা মা আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটে গিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) বালিয়ায় ছোট মেয়ের কাছে। কিন্তু ছোট মেয়ের কাছেও পঁচাত্তর বছরের বৃদ্ধা মায়ের কোন জায়গা ছিল না- সেটা হয়তো বৃদ্ধা বুঝতে পারেন নি। শেষ পর্যন্ত সেখান থেকে ট্রেন ধরে হাজির হন ভারতবর্ষের ব্যস্ততম বাণিজ্যিক নগরী মুম্বইয়ে (Mumbai)। পরে সেখানকারই একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে রবিবার রিষড়ায় বড় মেয়ের কাছে ফিরে আসেন বৃদ্ধা।
ঘটনা সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃদ্ধা সাবিত্রী দেবী শ্রীবাস্তব হাওড়া রামরাজাতলায় বড় ছেলের কাছে থাকতেন। কিন্তু করোনা আবহে গতবছর লকডাউন এর সময় বড় ছেলের সংসার ব্রাত্য হয়ে যান সাবিত্রী দেবী। এরপর নিজে থেকেই ছেলের সংসারে বোঝা হয়ে না থেকে উত্তরপ্রদেশের বালিয়ায় ছোট মেয়ের কাছে চলে যান তিনি। কিন্তু সুগারের পেশেন্ট বৃদ্ধার দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেন ছোট মেয়ে। কয়েক দিন থাকার পর ছোট মেয়ে বৃদ্ধা মাকে নিকটবর্তী একটি প্ল্যাটফর্মে ছেড়ে দিয়ে চলে যায়। সেখান থেকেই দূরপাল্লার একটি গাড়িতে উঠে বসে সোজা পৌঁছে যান বাণিজ্য নগরী মুম্বাইতে। বেশ কিছুদিন অনাহারে থাকার কারণে মুম্বইয়ের একটি ষ্টেশনে অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকেন সাবিত্রী দেবী। মুম্বই পুলিশ ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে ওখানকার বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা শ্রদ্ধা ফাউন্ডেশনের কাছে পৌঁছে যায়। ওই সংস্থার সদস্যরা বৃদ্ধার হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ করে তোলেন।
এদিকে, বড় মেয়ে কল্যাণীদেবী বর্মা মায়ের খোঁজ না পেয়ে ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারপরই তিনি খোঁজ পান মা মুম্বইয়ের ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে রয়েছেন। ওই সংস্থারই হুগলির এক সদস্যের মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত কল্যাণীদেবী মেয়েকে নিয়ে মুম্বই পৌঁছে যান মায়ের কাছে। রবিবার মাকে নিয়ে রিষড়ার বাড়িতে ফিরে আসেন বড় মেয়ে। বাড়িতে এসে মাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙেও পড়েন কল্যাণীদেবী। পাশাপাশি মা’কে ফিরে পাওয়ার জন্য মুম্বইয়ের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে অসংখ্য ধন্যবাদও জানিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.