সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: বেসরকারি বাসে টিকিট কেটে যাত্রীদের পাশে বসে ‘ভোট প্রচার’ করলেন ‘ডাক্তারবাবু’। পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী ডা: মৃগাঙ্ক মাহাতো সোমবার সপ্তাহের প্রথম দিনই একেবারে সাতসকালে পুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ডে হাজির হন। তবে এই ভোট প্রচারে দলীয় কর্মীরা থাকলেও দলের কোন পতাকা-ফেস্টুন বা স্লোগান ছিল না। আসলে প্রার্থী বেসরকারি বাসে চড়ে যাত্রীদের সঙ্গে গল্প-গুজবকে ‘ভোট প্রচার’ বলতে রাজি নন। ‘ডাক্তারবাবু’র কথায় এটা জনসংযোগ! তাই এদিন পুরুলিয়া-রাঁচি রুটে একটি বেসরকারি বাসে দলীয় কর্মীদের নিয়ে টিকিট কেটে উঠে পড়েন। ব্যস, তারপরই একেবারে খোশমেজাজে যাত্রীদের সঙ্গে গল্প জুড়ে দেন তিনি। আসলে তৃণমূল সাংসদ হিসাবে মৃগাঙ্ক মাহাতোকে এই জেলার মানুষ যত না চেনেন তার থেকে তিনি ‘ডাক্তারবাবু’ হিসাবে সকলের কাছে পরিচিত মুখ। তাই বাসে উঠতেই ‘ডাক্তারবাবু’ কেমন আছেন বলে একাধিকজনের প্রশ্ন ভেসে আসে। শুধু তাই নয় তাঁকে এভাবে কাছে পেয়ে সেলফিও তোলেন যাত্রীরা। আসলে এই ‘ডাক্তারবাবু’ দীর্ঘদিন পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো সদর হাসপাতালের চক্ষু চিকিৎসক ছিলেন। ২০১৪ সালে চাকরি ছেড়ে ভোটের ময়দানে নেমে ‘ডাক্তারবাবু’ ইমেজেই তৃণমূলের সাংসদ হন। তাঁর কথায়, “জনপ্রতিনিধি কথার সঙ্গেই জড়িয়ে আছে ‘জনসংযোগ’। তাই এদিন আমি বাসে চড়ে ভোটের আগে একটু ‘জনসংযোগ’টা ঝালিয়ে নিলাম”।
[আরও পড়ুন: আস্থা ভোটে হার, ভাটপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারিত অর্জুন সিং]
দুর্গাপুর থেকে আসা রাঁচিগামী এই বাস সকাল ন’টায় পুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে ছাড়ে। ফলে চাষ মোড়, জয়পুর, কোটশিলা, ঝালদা রুটে যারা স্কুল, কলেজ ও সরকারি কার্যালয়ে কাজ করেন তারা এই বাসটিতে কর্মস্থলে যান। সেটা জেনে বুঝেই নিত্যযাত্রীদের সঙ্গে যাতে মুখোমুখি দেখা হয় তাই রাঁচি রুটের এই বেসরকারি বাসটিকেই বেছে নেন প্রার্থী। ওই বাসের একেবারে পেছনের দিকে বসে যাত্রীদের সঙ্গে গল্প জুড়ে দেন। ওই বাসে ‘ডাক্তারবাবু’–র পরিচিত মুখ না থাকলেও তিনি নিজের পরিচয় দিয়ে তাঁর সঙ্গে আলাপ করে নেন। যেমন কোটশিলার ছোটহনকলের বাসিন্দা বিজয় কালিন্দীর সঙ্গে তার পরিচয় জেনে নিজেই গল্প শুরু করেন। কিছুক্ষন আলাপচারিতার পরেই ‘ডাক্তারবাবু’ বলেন, “আমি তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রের ঘাসফুলের প্রার্থী। আপনাদের ওদিকে সব ঠিক আছে তো?” অজ পাড়াগাঁয়ের যুবক বিজয় পাশে বসা যাত্রীর কাছ থেকে এই কথা শুনে খানিকটা হতবাকই হয়ে যান। তারপর কিছুটা সামলে বলেন, “সব ঠিক আছে ‘ডাক্তারবাবু’। কোন চিন্তা নেই। আমি আসলে ঠিক আপনাকে বুঝতেই পারিনি।” তখন প্রার্থীর মুখেও চওড়া হাসি। এভাবেই এদিন বেসরকারি বাসে চেপে ‘ভোট প্রচার’ থুড়ি ‘ডাক্তারবাবু’–র ভাষায় জনসংযোগ সারেন। পুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রায় ছ’–সাত কিমি বাসে চড়ে পুরুলিয়া এক নম্বর ব্লকের লাগদায় নামেন। সেখানেই দলের নেতা–কর্মীদের ভিড়ে মিশে যান।
ছবি: সুনীতা সিং
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.