নিজস্ব সংবাদদাতা: সাংসদ হওয়া ইস্তক তাঁকে বিরোধীদের অনেক কটাক্ষ শুনতে হয়েছে৷ সংসদে মুখ খোলেন না, এলাকায় তাঁকে দেখা যায় না প্রভৃতি অভিযোগ ছিল ঘাটালের সাংসদ দেবের বিরুদ্ধে৷ গত লোকসভা অধিবেশনেই সংসদে মুখ খুলে সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন দেব৷ এবার তাঁর লোকসভা কেন্দ্রেই বাম আমলে তৈরি হওয়া জমি জট কাটাতে আসরে নামছেন দীপক অধিকারী ওরফে দেব৷ ডেবরায় একটি সেতু তৈরি হয়েছিল ন’বছর আগে৷ কিন্তু অ্যাপ্রোচ রোড তৈরি না হওয়ায় সাধারণ মানুষের দুর্দশা ঘোচেনি৷ এবার এই রাস্তার জন্য জমি জট কাটাতে জমির মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন সাংসদ দেব৷
২০০৭ সালে ডেবরা ব্লকে লোয়াদা সড়কে কাঁসাই নদীর উপরে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়৷ নাবার্ডের আট কোটি টাকার অর্থ সাহায্যে বাম আমলে এই সেতুটি তৈরি করা হয়৷ কিন্তু অ্যাপ্রোচ রোড তৈরি না করায় এতদিনেও পুরোমাত্রায় এই সেতুটি চালু করা যায়নি৷ জমি জটে থমকে রয়েছে কাজ৷ এই জট কাটাতে এবার উদ্যোগী হয়েছেন সাংসদ দেব৷ এই সেতুটি তাঁর ঘাটাল লোকসভার মধ্যেই পড়ে৷ নভেম্বরের পাঁচ তারিখ ডেবরা সাংসদ কার্যালয়ে এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে৷ এ সম্পর্কে ডেবারায় সাংসদের প্রতিনিধি জেলা তৃণমূল কোর কমিটির সদস্য অলোক আচার্য বলেন, “দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে অ্যাপ্রোচ রোড তৈরির কাজ জমি জটে থমকে রয়েছে৷ আশা করছি, দেবের সঙ্গে জমির মালিকদের বৈঠকের পর সমস্যার সমাধান হবে৷”
স্থানীয় বাসিন্দারাও দেবের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন৷ তবে দীর্ঘ কয়েক বছরের অভিজ্ঞতায় বিষয়টি নিয়ে এখনই খুব একটা আশাবাদী হতে পারছেন না তাঁরা৷ অ্যাপ্রোচ রোড নিয়ে তৎপর হয়েছে জেলা পরিষদও৷ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি বলেন, “জমি জট অনেকটাই কেটে গিয়েছে৷ সামান্য যা কিছু আছে, তা-ও কেটে যাবে৷” অ্যাপ্রোচ রোড তৈরি হলে ডেবরার সঙ্গে ঘাটাল, কেশপুর ও দাসপুরের একাংশের যোগাযোগ ব্যবস্থা মসৃণ হবে৷
সেতুর একপ্রান্তে লোয়াদা-ষাঁড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ফতেপুর ও নরহরিপুর মৌজা৷ অন্যপ্রান্তে গোলগ্রাম অঞ্চলের নন্দবাড়ি মৌজা৷ রাস্তা তৈরি না হওয়ায় দুই প্রান্তের মানুষদের এখনও নদী পারাপার করতে হয়৷ প্রস্তাবিত অ্যাপ্রোচ রোডে প্রায় ১০০ জনের জমি, বসতভিটা ও দোকানপাট রয়েছে৷ মোট জমির পরিমাণ দুই একর পাঁচ ডেসিমল৷ এই তিন মৌজার মধ্যে কেবলমাত্র নরহরিপুরেই সমস্যা রয়েছে৷ এখানকার জমি মালিকরা পর্যাপ্ত দাম পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ৷ দেব এই নরহরিপুরের জমির মালিকদের সঙ্গেই বৈঠক করবেন৷ সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া বাংলা ছবি ‘জুলফিকার’-এ স্টারডম ছেড়ে নিজেকে ভেঙেচুরে অভিনেতা হিসাবে অন্যমাত্রায় নিয়ে গিয়েছেন দেব৷ ছবিতে তাঁর বোবা চরিত্র প্রশংসিত হয়েছে৷ এখন দেখা যাচ্ছে সাংসদ দেবও নিজেকে পাল্টে ফেলে একেবারে তৃণমূলস্তরে গিয়ে বৈঠক করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন৷ বড় পর্দায় অনেক সমস্যার সমাধান করেছেন অভিনেতা দেব৷ এবার বাস্তবে সাংসদ দেব জমি জট আদৌ কাটাতে পারেন কি না, তা দেখার৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.