জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: কলকাতায় CAB-এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ তাঁদের ব্যানারে, আর দু’দিন পর নিজেদের সমাজে এই বিল নিয়েই হইহুল্লোড়ে মাতলেন মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষজন। বোঝা গেল, মঙ্গলবার কলকাতায় মতুয়া মহাসংঘের ব্যানারে আসলে প্রতিবাদ ছিল পুরোপুরি তৃণমূলের। আর সেই ক্ষোভে আজ ঠাকুরনগরে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কুশপুতুল পোড়ালেন মতুয়া সম্প্রদায়ের সদস্যরা।
সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, ২০১৯ পাশ হওয়ায় সবচেয়ে খুশি মতুয়া সমাজ। আনন্দে মাতলেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দলে দলে মতুয়া ভক্তরা ঠাকুরবাড়িতে এসে জড়ো হন৷ দুপুরে হতেই ঠাকুরবাড়ি থেকে তাঁরা মিছিল বের করেন। সঙ্গে ছিল ডঙ্কা, কাশি, নিশান ও মুখে ‘হরিবোল’ ধ্বনি। প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ওই মিছিল থেকে ধন্যবাদ জানানো হয়। মিছিল শেষে ঠাকুরনগর স্টেশনে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন তাঁরা।
মহাসংঘের এক সদস্য বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই নাগরিকত্বের দাবি জানিয়ে আসছি। অবশেষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আমাদের দাবি মেনে নিয়ে নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। আমাদের আজ ঐতিহাসিক একটি দিন।” সারা ভারত মতুয়া মহাসংঘের মুখপাত্র অরবিন্দ বিশ্বাস বলেন, “শুধু জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক নন, যারা এই বিলের বিরোধিতা করছে সেই সমস্ত দেশদ্রোহীদের কুশপুত্তলিকা দাহ করলাম। কারণ, এটি আমাদের নাগরিকত্বহীন জীবনের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিয়েছন।”
বিলটি পাশের পর বিজেপি নেতৃত্ব বনগাঁ মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় মিছিল করেন। মিছিল হয় বনগাঁ শহর, গোপালনগর, চাঁদপাড়া এলাকায়। সেখান থেকেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বলেন “স্বাধীনতার পর থেকে উদ্বাস্তুরা নাগরিকত্বের দাবি করে আসছিলেন সেই দাবি অবশেষে পূরণ হলো জন্যই মিছিল করে আমরা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানালাম।” আজকের এই ছবি থেকেই স্পষ্ট যে মঙ্গলবার এনআরসি এবং সিএবি’র প্রতিবাদে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নেতৃত্বে রানি রাসমনির সমাবেশ স্রেফ তৃণমূলের চাপে, মতুয়ার অন্তরের কথা মোটেই সিএবি বিরোধিতা নয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.