জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: লকডাউনের আগে উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরে ঠাকুরবাড়ির ধর্মীয় মহামেলায় যোগ দিতে এসে আটকে পড়েছিলেন মতুয়া ভক্তরা। হন্যে হয়ে বাড়ি ফেরার উপায় খুঁজছিলেন। এতদিন পর সপ্তাহান্তে গাইঘাটা ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে সরকারি বাসে চেপে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিলেন ৬৩ জন মতুয়া ভক্ত। রাজস্থানে ফিরতে পেরে তাঁরা বেশ খুশি। রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তবে এই পরিস্থিতিতেও ঠাকুরবাড়ির অন্দরে রাজনৈতিক চাপানউতোর জারি রয়েছে পুরোদমেই। বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর রাজ্য সরকারের সমালোচনা করতে ছাড়লেন না। পালটা জবাব দিলেন বনগাঁর প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা ঠাকুরবাড়ির আরেক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য মমতাবালা ঠাকুর।
রবিবার গাইঘাটার বিডিও বিব্রত বিশ্বাস বলেন, ”রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের নির্দেশে লকডাউনে ঠাকুরবাড়িতে আটকে থাকা রাজস্থানের মতুয়া ভক্তদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে সুস্থভাবে বাড়ি ফিরতে সাহায্য করেছি আমরা।” আর বাড়ি ফিরে খুশি পরিযায়ী মতুয়াদের বক্তব্য, “প্রায় দু’মাস ঠাকুরবাড়িতে আটকে ছিলাম। বাড়ি ফিরছি ভেবে খুব ভাল লাগছে।”
সারা ভারত মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি তথা বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর আবার অভিযোগের সুর চড়িয়ে বলছেন, “দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম, ভক্তদের দ্রুত তাঁদের রাজ্যে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য। জেলাশাসক কোনও ব্যবস্থা করছিলেন না। রাজস্থান সরকারকে জানাতেই তাঁদের চাপে মতুয়া ভক্তদের রাজস্থানে ফেরাতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার।” তাঁর অভিযাগ খারিজ করে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি মমতা ঠাকুর বলেন, “ভিন রাজ্যের মতুয়া ভক্তদের রাজ্য সরকার উদ্যোগ নিয়ে বাড়ি ফেরাল। এই অবস্থায়ও মতুয়া ভক্তদের নিয়ে কেউ কেউ রাজনীতি করার চেষ্টা করছে ৷”
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ঠাকুরনগর থেকে তাঁদের বাসে প্রথমে শালিমার রেল স্টেশানে পৌঁছে দেয়া হবে। সেখান থেকে ট্রেনে তারা পৌঁছাবেন রাজস্থান।এদিন ওই ভক্তদের শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। খাইয়ে-দাইয়ে সমস্ত প্রশাসনিক নিয়ম মেনে তাঁদের বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়। কয়েক মাস আগে রাজস্থানের কোটা থেকে ৬৩ জন মতুয়া ভক্ত মতুয়া ধর্ম মেলায় যোগ দিতে ঠাকুর বাড়িতে এসেছিলেন। মেলা শুরুর কয়েকদিন আগে তাঁরা ঠাকুরবাড়িতে পৌঁছন। এরপরেই করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে দেশজুড়ে লকডাউন হওয়ায় আটকে পড়েন। রবিবার গাইঘাটা ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে তাঁদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করা হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.