ছবি: প্রতীকী
অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া এবার শিবপুরে (Shibpur)। টানা ১০ দিন মেয়ের মৃত দেহ আগলে রইলেন মা। অবশেষে রবিবার সকালে দুর্গন্ধে অতিষ্ট হয়ে পুলিশকে খবর দেয় এলাকাবাসী। তারা এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। আর মৃতের মায়ের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে এই ঘটনায় শিবপুর এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
কাসুন্দিয়া মল্লিক পাড়া শিবপুর থানার অন্তর্গত এলাকার বাসিন্দা শ্যামলী মল্লিক (৪৫)। মা দীপ্তি মল্লিকের সঙ্গে থাকতেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরেই শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন শ্যামলী। দীপ্তিদেবীরও হাঁটাচলার ক্ষমতা ছিল না। বাড়ির আশপাশে কয়েকজন আত্মীয় থাকলেও তাঁদের খবর কেউ নিত না বলে অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে খবর, ১০ দিন আগে শ্যামলীর মৃত্যু হয়। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর খবর কাউকে দেননি দীপ্তিদেবী। উলটে মেয়ের দেহ আগলে বসেছিলেন তিনি।
শ্যামলীদেবীর বাবা মারা গিয়েছেন ২০১৭ সালে। তার পর থেকে কার্যত ঘরবন্দী তিনি ও তাঁর মা। আশপাশে আত্মীয়স্বজন থাকলেও তাঁরা ফিরে তাকাত না বলেই দাবি স্থানীয়দের। প্রতি সপ্তাহে দীপ্তিদেবীর ভাইয়ের ছেলে শুভজিৎ পাল এসে শুকনো খাবার দিয়ে যেতেন। খোঁজখবর নিতেন। কিন্তু গত সপ্তাহে তাঁর সন্তান হওয়ায় পিসি ও দিদির খোঁজ নিতে আসতে পারনেনি শুভজিৎ। এদিন অর্থাৎ রবিবার এসেছিলেন খাবার দিতে।
শুভজিতের কথায়, “এদিন বাড়িতে এসেছিলাম। দেখি, দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। পিসি দরজা খুলতে দেখি দিদি মারা গিয়েছে। দেহে পচন ধরেছে। সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবেশীদের খবর দিই। ওঁরা পুলিশকে খবর দিতে বলে।” তিনি আরও জানান, শ্যামলী অনেকদিন ধরেই অসুস্থ। বিছানায় শুয়ে খাওয়া-দাওয়া করত। বহুবার বললেও ডাক্তার দেখাননি তাঁরা। পরিবারের অন্য কোনও সদস্য বা প্রতিবেশীরা কেউ তাদের দেখাশোনা করত না। আর তাই ঘরে মৃতদেহ পড়ে থাকলেও কেউ খোঁজ পাননি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.