নিজস্ব সংবাদদাতা: এক ঘণ্টার মধ্যে হারিয়ে যাওয়া মেয়েকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিল সোশ্যাল মিডিয়া৷ বালুরঘাট থানায় মেয়েটিকে তার মায়ের হাতে তুলে দেয় পুলিশ৷ চার বছরের মেয়েকে ফিরে পাওয়ার আনন্দে কান্না চেপে রাখতে পারেননি মা৷ ধন্যবাদ জানিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়া ও বালুরঘাট থানার পুলিশকে৷
সোমবার দুপুরে বালুরঘাট জেলাশাসকের ভবনের সামনে একা এক শিশুকে কান্নাকাটি করতে করতে ঘোরাঘুরি করতে দেখেন স্থানীয়রা৷ বছর চারেকের শিশুকন্যাটিকে উদ্ধার করে পুলিশের হাতে তুলে দেন তাঁরা৷ কিন্তু মেয়েটি নিজের নাম রূপালি হালদার ছাড়া আর কিছুই বলতে পারছিল না৷ এরপর পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর করতে থাকে৷ পাশাপাশি ছবি-সহ ফেসবুকে পোস্ট করা হয় পুলিশের পক্ষ থেকে৷ বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপেও তা দেওয়া হয়৷ তার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই থানায় হাজির হন মেয়েটির মা৷ পুলিশ তাঁর হাতে মেয়েটিকে তুলে দেয়৷ মেয়েকে বুকে জড়িয়ে কান্নায় ভিজে ওঠে মায়ের চোখ৷
কিছুক্ষণ পরে তিনি জানান, তাঁর নাম দীপালি হালদার৷ মেয়ে রূপালি হালদার৷ স্বামী অধীর হালদার পেশায় রিকশাচালক৷ তাঁদের বাড়ি বালুরঘাট পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের খিদিরপুর এলাকায়৷ তিনি জানান, সোমবার সকালে বালুরঘাট পুরসভার লাগোয়া স্টেট ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলতে এসেছিলেন৷ লাইনে প্রচণ্ড ভিড় হওয়ায় মেয়েকে কোল থেকে নামিয়ে এক জায়গায় দাঁড়াতে বলেন৷ কিন্তু টাকা তোলার পর বাইরে বেরিয়ে দেখেন, মেয়ে সেখানে নেই৷ ফের ব্যাঙ্কের ভিতর গিয়ে খোঁজাখুঁজি করেন৷ ইতিমধ্যে ব্যাঙ্কের কর্মীরা তাঁকে ভিতরে নিয়ে গিয়ে বসান৷ সব কিছু শোনার পর মাইকে নিখোঁজের ঘোষণা করেন৷ ততক্ষণে অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে ওই মেয়েটিকে উদ্ধারের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে মোবাইলে-মোবাইলে৷ মাইকে ঘোষণার কিছুক্ষণ আগেই লাইনে দাঁড়ানো এক ব্যক্তিও রূপালির উদ্ধারের পোস্ট দেখেছিলেন৷ তিনিই দীপালিদেবীকে ছবি দেখান৷ এরপর বালুরঘাট থানায় গেলে রূপালিকে দীপালিদেবীর হাতে তুলে দেওয়া হয়৷
দীপালিদেবী বলেন, “মেয়েকে হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছিলাম৷ কোথায় যাব, কী করব ভেবে পাচ্ছিলাম না৷ এভাবে এক ঘণ্টার মধ্যে যে মেয়েকে ফিরে পাব, ভাবতে পারিনি৷ সবাইকে ধন্যবাদ৷” বালুরঘাটের ডিএসপি হেড কোয়ার্টার সৌম্যজিৎ বড়ুয়া বলেন, “আমরা বিভিন্ন জায়গায় নিজেদের সূত্রের মাধ্যমে মেয়েটির পরিচয় জানার চেষ্টা করেছিলাম৷ পুলিশ ও উদ্ধারকারীদের ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপেও ছবি-সহ খবর ছড়িয়ে দেওয়া হয়৷ তাতে যে এত তাড়াতাড়ি কাজ হবে, আমরাও ভাবতে পারিনি৷”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.