সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: ‘অপরাধ’ একটাই, বিয়ের পর পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চেয়েছিল। প্রতিষ্ঠিত হওয়ার স্বপ্ন বুনেছিল। সেই ‘অপরাধে’ নাবালিকার চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠল স্বামী ও ‘গর্ভধারিণী’ মায়ের বিরুদ্ধে। নদিয়ার কৃষ্ণনগরের এই ঘটনায় ইতিমধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত যুবক ও নাবালিকার মাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নদিয়ার কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানার আইটি পার্ক সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া ওই নাবালিকা। কিছুদিন আগে ধুবুলিয়া থানা এলাকার এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। অভিযোগ, বিয়েতে একদমই রাজি ছিল না নাবালিকা। পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চেয়েছিল। শেষপর্যন্ত বিয়ের পরও পড়াশোনা করতে পারবে, এই শর্তেই সাতে পাকে বাঁধা পড়তে রাজি হয় সে। বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু তারপরেই সমস্যার শুরু। কিছুদিনের মধ্যেই স্কুল, টিউশন সব বন্ধ করে দেওয়া হয় তার। প্রতিবাদ করেও লাভ হয়নি। মেয়েটি ভেবেছিল, কোনওক্রমে পালিয়ে মায়ের কাছে পৌঁছতে পারলেই এই অত্যাচার থেকে মুক্তি মিলবে। ফের মায়ের ভরসার ডানায় ভর করে স্বপ্নের উড়ান দিতে পারবে সে। কিন্তু ভাবনাই সার!
স্ত্রীয়ের বাপের বাড়িতে চলে আসার খবর স্বামীর কাছে পৌঁছে যায় নাবালিকার মা মারফতই। এরপরই শুরু হয় চাপ। স্বামী ও নাবালিকার মা মিলে তাকে শ্বশুরবাড়ি ফেরানোর চাপ দিতে শুরু করে। তবু রাজি হয়নি সে। পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার আর্তি জানাতে থাকে। তার ফলস্বরূপ নাবালিকার চুল কেটে দেয় মা ও স্বামী। এরপরই নাবালিকার প্রতিবেশী পুলিশের দ্বারস্থ হয়ে পুরো বিষয়টি জানায়। নাবালিকা জানিয়েছে, “শুধু পড়তে চেয়েছিলাম বলে, মা আর স্বামী চুল কেটে নিয়েছে। আমার পড়ার ব্যবস্থা করে দিন।”
ঘটনা প্রসঙ্গে কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার অমরনাথ জানিয়েছেন, “অভিযুক্ত স্বামী ও মাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দি নেওয়া হবে। তার ভিত্তিতে সকল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তির সুপারিশ করবে পুলিশ।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.