সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীর্ঘদিনের অচলাবস্থায় ইতি। শুক্রবার সকাল থেকেই পাহাড়ে উঠে যাচ্ছে বনধ। ফের স্বাভাবিক হবে জনজীবন। আগামী ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অর্থাৎ ১২ দিনের জন্য উঠে যাচ্ছে বনধ। এরপর মিটিং করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রায় ৮০ দিন পর বনধ উঠছে পাহাড়ে। এমনই ঘোষণা করেছিলেন মোর্চার নয়া নেতা বিনয় তামাং।
যদিও, বনধ প্রত্যাহার নিয়ে কার্যত দু’ভাগ মোর্চা। এবার আরও স্পষ্ট সেই বিভাজনরেখা। সূত্রের খবর, বনধ প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করার জন্য ডানা ছাঁটা হচ্ছে মোর্চা নেতা বিনয় তামাংয়ের। তাঁকে ও অনীক থাপাকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি। সেই সঙ্গে পাহাড়ে গোর্খাল্যান্ডের দাবি না মানা পর্যন্ত বনধ প্রত্যাহারের কোনও সম্ভাবনা নেই বলেও ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়ে দিলেন তিনি। আনুষ্ঠানিকভাবে এই কথা জানানো হবে শুক্রবার।
পাহাড় জট কাটাতে পাহাড়ের সব নেতাদের বৈঠকে আহ্বান করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্নের সেই বৈঠক ফলপ্রসূ হলেও কোনও সঠিক সমাধান সূত্র মেলেনি। গোর্খ্যাল্যান্ডের দাবি থেকে সরেননি পাহাড়ের নেতারা। সে দাবি মেনে নিতে নারাজ রাজ্য। ফলত খানিকটা ধোঁয়াশা ছিল। কিন্তু গত কয়েকমাসের হিংসা জর্জরিত অবস্থা থেকে যেভাবে পাহাড়ের নেতারা আলোচনার দিকে ঝুঁকেছিলেন তাতে আশার আলোই দেখা যাচ্ছিল।
এই আলোচনা থেকেই পাহাড় পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে নতুন নেতা হিসেবে উঠে আসেন বিনয় তামাং। বৈঠক থেকে ফেরার পরেই মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটি নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসে নেওয়া জনমতও। সেখানেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বনধ প্রত্যাহারের পথেই হাঁটলেন মোর্চা নেতারা। তবে গোর্খ্যাল্যান্ডের দাবি থেকে পিছু হটলেন কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। কেননা আপাতত ১২ দিনের জন্যই বনধ তোলার কথা জানানো হয়েছে। এই ১২ দিনে পাহাড়ের মানুষের আবেগ ও রাজনৈতিক সমীকরণ অনুযায়ী যে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা স্পষ্ট। তবে উল্লেখযোগ্য বিষয়, পাহাড়ের এখন নতুন মুখ হয়েছেন বিনয় তামাং। যে গুরুং পাহাড়কে একা হাতে প্রায় অশান্ত করে তুলেছিলেন, মোর্চার মধ্যেই তিনি এখন অনেকটা কোণঠাসা। বদলে দ্রুত উত্থান বিনয়ের। সম্ভবত সে কারণেই গোর্খা নেতাদের একাংশের চোখের বালি হয়ে উঠছিলেন। তাই কি তাঁর উপর অনাস্থা দেখালেন দলেরই একাংশ? নবান্নে তাঁর নেতৃত্বেই পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। তারপরই বনধ প্রত্যাহারের ঘোষণা ও নাটকীয়ভাবে দল থেকে বিতাড়িত।
পাহাড়ে এখন দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা। হিংসা-মারামারির পর অবশেষে কি সূর্যোদয় হবে। জনজীবন আবার স্বাভাবিক হবে? সম্ভবত আগামিকাল থেকেই খুলবে কিছু স্কুল, কলেজ, দোকানপাট। তবে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে মিছিল মিছিল চলবেই জানিয়েছেন মোর্চা নেতারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.