রাজকুমার কর্মকার, আলিপুরদুয়ার: পাহাড়ের অশান্তির আঁচ এবার সমতলে। মোর্চার বনধের ফাঁসে আটকে গেল ডুয়ার্স। গুরং বাহিনীর ফতোয়ায় ঝাঁপ পড়ল চা বাগানে। জয়গাঁয় মোর্চার অবরোধে ভুটানের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন হল। কালচিনি, জয়গাঁ, নাগরাকাটায় বনধ বোঝা গেলেও, শহরে ঢুকতেই সব উধাও। আলিপুরদুয়ার একেবারে স্বাভাবিক। আচমকা বনধে কোথাও কোথাও সমস্যায় পড়েছেন পর্যটকরা।
পাহাড়ে শনিবার বেনজির উত্তেজনা। পুলিশের গুলিতে চার দলীয় সমর্থকের মৃত্যুর দাবি করে মোর্চা নেতৃত্ব। মৃতদেহ নিয়ে রাজনীতি শুরু হতে সময় লাগেনি। রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে তারা যে যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন তা শনিবার আরও একবার জানান বিমল গুরুং। দলের শীর্ষ নেতার বার্তা পেয়ে তৎপর হয় মোর্চা। পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগে ডুয়ার্সে আচমকা ১২ ঘণ্টার বনধ ডাকে মোর্চার ডুয়ার্স শাখা। আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলার একাংশ ডুয়ার্সের মধ্যে পড়ে। পাহাড় লাগোয়া আলিপুরদুয়ারের কালচিনি, জয়গাঁ, বীরপাড়া, মাদারিহাট, জলপাইগুড়ির চার্মুচি, নাগরকাটা, বানারহাট এবং মালবাজারের বাগরাকোটে মোর্চার ভালই প্রভাব রয়েছে। সেই জোরে নিজেদের গড় মোর্চা অচল করে দেয়। সকাল হতেই মোর্চা সমর্থকরা পিকেটিং শুরু করে। ডুয়ার্সের অধিকাংশ চা বাগানের রয়েছে ওইসমস্ত এলাকায়। এদিন বেশিরভাগ বাগানে কাজ হয়নি। মোর্চার গা জোয়ারি বন্ধ হয়ে যায় বাংলার সঙ্গে ভুটানের যোগাযোগ। জয়গাঁয় মোর্চার অবরোধে সকাল ৯টা থেকে আন্তর্জাতিক সীমান্তে কোনও গাড়ি চলাচল করেনি।
ডুয়ার্সের অন্যত্র প্রভাব পড়লেও, শহর এলাকায় বনধের তেমন ছাপ পড়েনি। আলিপুরদুয়ার শহরের জনজীবন প্রায় স্বাভাবিক। তবে বনধের বিরোধিতায় কোথাও তৃণমূলকে পথে নামতে দেখা যায়নি। পুলিশও ধীরে চলো নীতি নিয়েছে। বনধ তুলতে কোথাও তেমন কোনও বলপ্রয়োগ করেনি। আলিপুরদুয়ারের এসপি আভারু রবীন্দ্রনাথ জানিয়েছেন, পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ। প্রশাসন পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে। তবে মোর্চার বনধে খানিকটা সমস্যায় পড়েন পর্যটকরা। যারা পাহাড় ছেড়ে ডুয়ার্সে গিয়েছেন বনধের মুখে পড়ায় তারা বেজায় বিরক্ত। হোটেলে বসেই তাদের সময় কাটাতে হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.