ব্রতীন দাস, শিলিগুড়ি: বনধ শেষ। অশান্তিও কার্যত শেষ। চকবাজারে গরম পোশাকের পসরা নিয়ে হাজির দোকানি। ম্যালে ঘোড়ার মালিক হাঁক ছাড়ছেন। উৎসাহীরা কাঞ্চনজঙ্ঘার ছবি তুলতে ব্যস্ত। ছুটছে টয় ট্রেন। চুম্বকে এটাই এখন পাহাড়ের বদলের ছবি। পাহাড়ের এই স্বস্তির খবর পৌঁছেছে সমতলে। যারা দার্জিলিংয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলেন তারাও পাহাড়মুখী। যাঁরা পাহাড় ছেড়ে নিজেদের গন্তব্যের দিকে যাচ্ছেন তাঁদের জন্যও প্রশাসনিক সহযোগিতা একইরকম রয়েছে। শনিবারও বিনামূল্যে বাসে কলকাতা যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমনকী শিলিগুড়ি থেকেও নিখরচায় দার্জিলিংয়ে যেতে পারছেন পর্যটকরা।
[জিটিএ নিয়ে পরস্পরবিরোধী মন্তব্য, দলেই প্রশ্নের মুখে গুরুং]
বৃহস্পতিবারের বারবেলা থেকে শুক্রবার বিকেল। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাহাড়ের আবহাওয়ার মতো বদলে গেল অনেক কিছু। বনধ শেষ হতেই পাহাড়ের প্রায় সমস্ত দোকান খুলেছে। শনিবার সকালে ম্যালের পরিস্থিতি দেখলে বোঝার উপায় নেই তার আগের দিন কতটা ঝড় বয়েছিল। কেউ কেউ সূর্যোদয়ের টানে কাকভোরে পৌঁছেছেন ম্যালে। হকারদের মধ্যে দেখা গিয়েছে চেনা ব্যস্ততা। ঘোড়ায় চড়ে কচিকাঁচারা এদিনও পাহাড়ের আমেজ নিয়েছে। দু দিনের বিরতির পর শনিবার দৌড়েছে টয়ট্রেন। সব একইরকম। পাহাড়ের এই ফিল গুড পরিবেশের খবরে স্বস্তি পেয়েছেন সমতলের পর্যটকরা। যাদের অনেকেই শেষ মুহূর্তে পাহাড়ের বদলে ডুয়ার্স, সিকিম বা ভুটানে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। পাহাড়ের আকাশ ফরসা হতেই তারা দার্জিলিংমুখো হচ্ছেন। পর্যটকদের এই মানসিকতা বদলের পিছনে রয়েছে প্রশাসনের একাধিক পদক্ষেপ। সারারাত পাহাড় থেকে শিলিগুড়ির বাস চালানো হয়েছে। উল্টোদিকে পর্যটকদের নিয়ে শিলিগুড়ি থেকে বাস গিয়েছে পাহাড়ে। এনবিএসটিসি শনিবারও বিনামূল্যে বাস পরিষেবা চালু রেখেছে। এদিন শিলিগুড়ি থেকে পাহাড়ে ১০টি বাস গিয়েছে। সকাল ১০ টার মধ্যেই তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাস থেকে কলকাতার উদ্দেশে ৫টি বাস রওনা দিয়েছে। ২-৩ ঘণ্টা অন্তর কলকাতামুখী বাস চলছে। প্রয়োজনে শনিবার সারা রাত কলকাতার দিকে বাস চালানো হবে জানিয়েছেন এনবিএসটিসির আধিকারিক বিকাশ দাস।
[রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে রেজিস্ট্রেশন নেই ডক্টর সূর্যকান্ত মিশ্রর!]
সড়কের মতো সচল রেল, আকাশপথও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেল শুক্রবার রাতে ১৪ কোচের স্পেশ্যাল ট্রেন চালায়। শনিবার বেলার দিকে এনজেপি থেকে ট্রেনটি কলকাতা স্টেশনে পৌঁছয়। বাগডোগরা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষও দুটি বিশেষ বিমানের ব্যবস্থা করে। একটি এয়ার ইন্ডিয়ার উড়ান ও অপরটি স্পাইসজেটের। গোটা কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখতে শুক্রবারের মতো এদিনও তৎপর ছিলেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। শিলিগুড়ি বাস টার্মিনাসে গিয়ে যাত্রীদের থেকে খোঁজখবর নেন পর্যটনমন্ত্রী। প্রশাসনের নির্দেশে শনিবারও হেল্প ডেস্ক চালু থাকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.