রিংকি দাস ভট্টাচার্য: আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বৃষ্টি নামবে দক্ষিণবঙ্গে। বৃহস্পতিবার এমন ইঙ্গিত দিল আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। সমুদ্রে মৎস্যজীবীদের জন্য সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের জেরে রাজ্যে বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এই বৃষ্টিকে বর্ষা বলতে নারাজ আবহাওয়া দপ্তর। তবে, আগামী সপ্তাহে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বর্ষা নামার সম্ভাবনা আছে।
বর্ষা ইতিমধ্যে কেরলের মাটি ছুঁয়েছে। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে প্রাক বর্ষার বৃষ্টি শুরু হয়েছে। দিনভর মেঘলা আকাশ। চলতি মাসের শুরুতে কখনও অবিরাম কখনও টিপটিপ বৃষ্টি পেয়েছে কলকাতা। বৃষ্টি হলেই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নিম্নমুখী হয়। প্যাচপ্যাচে গরম থেকে স্বস্তি মেলে। এদিনও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া অফিস। গত সপ্তাহেই উত্তর-পূর্ব ভারতে ঢুকে পড়েছে মৌসুমি বাতাস। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিম্নচাপের জেরে রাজ্যে বর্ষা ঢুকে পড়বে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস৷
মৌসম ভবন আগেই জানিয়েছে, জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরুতে পশ্চিমবঙ্গ লাগোয়া উপকূলে নিম্নচাপ হাজির হতে পারে। পূর্বাভাস শেষমেশ সত্যি হলে নির্ধারিত সময়েই বর্ষা-প্রাপ্তি হতে পারে বাংলার। রাজস্থান থেকে দক্ষিণ বিহার হয়ে ঝাড়খণ্ড পর্যন্ত রয়েছে একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা। কিন্তু প্রাকবৃষ্টির কারিগর হচ্ছে দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে আসা মৌসুমি বায়ুর অফুরান জোগান। প্রাক বর্ষার মতো স্থানীয়ভাবে বজ্রগর্ভ মেঘ সৃষ্টি হয়েছে। তবে, প্রাক বর্ষার বৃষ্টির স্থায়িত্ব কম। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ প্রবল বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা আছে হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব বর্ধমান ও নদিয়া জেলায়।
আগামী সপ্তাহেই পশ্চিমবঙ্গে বর্ষা ঢোকার প্রবল সম্ভাবনা। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে মঙ্গলবার এমনটাই জানানো হয়েছে। ৮ জুন উত্তর বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ হতে পারে। যার জেরে বর্ষা ঢোকার অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশা রয়েছে। স্বাভাবিক নিয়ম মানলে উত্তরবঙ্গে বর্ষার পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল চলতি সপ্তাহে। কিন্তু দু’দিন অসমে ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে মৌসুমি বায়ু। সেই অচলাবস্থা কাটার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আর তার জেরেই আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে উত্তরবঙ্গে বর্ষা ঢুকতে চলেছে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, কেরল দিয়ে বর্ষার মূল শাখাটি নির্ধারিত তারিখের তিনদিন আগে অর্থাৎ ২৯ মে মূল ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকেছে। বর্ষার ওই শাখা আরবসাগর ও বঙ্গোপসাগর হয়ে ক্রমে উপরের দিকে উঠতে থাকে। এই সময়ে আরবসাগরে নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হলে পশ্চিম ভারতে অতি-সক্রিয় হয়ে ওঠে বর্ষা। উলটোদিকে মৌসুমি বায়ু দুর্বল হয়ে পড়ে পূর্ব ভারতে। আবার বঙ্গোপসাগরে কোনও নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড় হলে পূর্ব ভারতের বর্ষাভাগ্য প্রসন্ন হয়৷ ফলে, নতুন নিম্নচাপ বর্ষার আকর্ষণে অনুঘটকের কাজ করবে৷ সাধারণভাবে ৮ জুন দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা এসে যায়৷
আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, কেরলে নির্দিষ্ট সময়ের তিনদিন আগে বর্ষা ঢুকেছে৷ দক্ষিণবঙ্গে স্বাভাবিক নিয়মে বর্ষা ঢুকে পড়ার কথা। নিম্নচাপের হাত ধরে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা ১১ তারিখের মধ্যে ঢুকে পড়তে পারে বলে আশা করা যায়। বস্তুত, ৮ জুনের দু-চারদিন পরে এলেও সেটা স্বাভাবিক হিসাবেই গণ্য হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.