নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: সড়কের পাশে একটি ভ্যানের ওপরে নামাবলি জড়ানো একটি মৃত হনুমান। পথচলতি মানুষের কাছে হাতজোড় করে তার সৎকারের জন্য সহযোগিতার আবেদন জানাচ্ছেন জনা কয়েক ব্যক্তি। প্রণাম করে মৃত পবনপুত্রের পায়ের কাছে টাকা রাখছেন বহু মানুষ। কেউ রাখছেন কাপড়, কেউ দিচ্ছেন কলা, কেউ বা ধূপকাঠি৷ এভাবেই পথের ধারে পবনপুত্রের শেষকৃত্যের আয়োজন চলল বনগাঁর গোপালনগরে। এতেও আবার রাজনীতির রং দেখছেন কেউ কেউ।
শুক্রবার সকালে গোপালনগর থানার চালকি এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে একটি হনুমানের। রামভক্ত হনুমানের মৃত্যুতে এলাকায় অমঙ্গলের ছায়া নেমে আসতে পারে, এই আশঙ্কায় হনুমানের পুজো দিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করে শ্রাদ্ধশান্তি করতে উদ্যোগী হয়েছেন এলাকার মানুষজন। রাম ভক্তের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে এলাকায় গিয়ে শেষকৃত্যের ব্যবস্থাপনায় হাত লাগাতে দেখা গেল গেরুয়া শিবিরের সদস্যদের। আর তা নিয়েই উসকে উঠল বিতর্ক। শুক্রবার দুপুরে বনগাঁ ত্রিকোণ পার্ক এলাকায় হনুমানটি সৎকার করবার জন্য তদারকি করতে হাজির হলেন বিজেপির বনগাঁ উত্তর পৌর মণ্ডলের যুব সভাপতি রাজীব রায় ও তাঁর দলবল। হনুমানকে মালা পরিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের হনুমানের মাহাত্ম্য বোঝানো শুরু করেন তিনি।
রাজীব রায় বলেন, “ভগবান রামচন্দ্রের পরম ভক্ত পবন পুত্র। ভগবান হনুমানের হিন্দু শাস্ত্রে প্রভাব রয়েছে। একজন হিন্দু হয়ে ভগবানের শেষকৃত্যে শামিল হওয়া পুণ্যের কাজ।” বনগাঁ-চাকদা সড়ক দিয়ে যাবার পথে গাড়ি থামিয়ে বহু মানুষকে দেখা গেল পবনপুত্রকে প্রণাম জানাতে। রতন গোঁসাই নামে এক বৃদ্ধা মৃত হনুমানের পা জড়িয়ে চোখের জল ফেললেন। স্থানীয় যুবক নয়ন হাজরার কথায়, “বিভিন্ন রাস্তায় বিপজ্জনকভাবে বিদ্যুতের তারগুলি ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছে। সেই তারে মাঝেমধ্যেই মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে হনুমানের।”
বিদ্যুতের তার নিয়ে প্রশাসনের উপরে ক্ষোভ জানিয়েছেন একাধিক বিজেপি নেতারাও। তবে আজ তাঁদের উদ্যোগে কোনও রাজনৈতিক রং লাগুক, তা মোটেই বরদাস্ত করতে চান না বিজেপি নেতারা। এখন তাঁদের একটাই লক্ষ্য, হিন্দু শাস্ত্রমতে মৃত ভগবানের শেষকৃত্য সম্পন্ন, শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.