Advertisement
Advertisement

Breaking News

ঘরে বসেই ভ্যাটিকানের অনুষ্ঠানের সাক্ষী থাকবেন মণিকা

তাঁর ‘অলৌকিক’ ভাবে সুস্থ হয়ে ওঠার কারণেই আজ ‘সেন্ট’ হচ্ছেন মাদার টেরিজা৷ এটা ভেবেই বেশ উত্তেজিত মণিকা৷

Monica Besra Will Celebrate Mother Teresa’s Sainthood at home
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:September 4, 2016 8:57 am
  • Updated:September 4, 2016 10:05 am  

রাজা দাস, বালুরঘাট: ভ্যাটিকান সিটিতে ডাক পাননি৷ কিন্তু আজ সারাদিন তাঁর মন পড়ে থাকবে সুদূর রোমেই৷ চোখ থাকবে টিভিতে৷ তিনি মণিকা বেসরা৷ যাঁর ‘অলৌকিক’ ভাবে সুস্থ হয়ে ওঠার কারণেই আজ ‘সেইন্ট’ হচ্ছেন মাদার টেরিজা৷ মূল অনুষ্ঠানে ডাক না পেলেও তাঁর নাম হয়তো উচ্চারিত হতে পারে ভ্যাটিকান সিটিতে, এটা ভেবেই বেশ উত্তেজিত মণিকা৷

দক্ষিণ দিনাজপুরের প্রত্যন্ত গ্রাম নাকোর৷ এখানকারই ছাপোষা গৃহবধূ মণিকা বেসরা রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে ওঠেন একেবারে আন্তর্জাতিকস্তরে৷ আজ ভ্যাটিকানে মাদার টেরিজাকে যে সেইন্টহুড উপাধি দেওয়া হচ্ছে, তাঁর সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে মণিকার নাম৷ ভ্যাটিকান সিটির নিয়ম অনুসারে কাউকে ‘সেইন্ট’ ঘোষণার আগে তাঁর অলৌকিক ক্ষমতার প্রমাণ দিতে হবে৷ মাদারের ক্ষেত্রে সেই প্রমাণ মণিকা নিজেই৷

Advertisement

দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি৷ বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে মণিকা ভর্তি হলে তাঁর টিবি ও ওভারিতে টিউমার ধরা পড়ে৷ ছ’মাস কোর্সের ওষুধ দিয়ে মণিকাকে পতিরামে মিশনারিজ অফ চ্যারিটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়৷ ১৯৯৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর মাদারের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে মিশনারিজ অফ চ্যারিটিজের প্রার্থনায় অংশ নেন মণিকা৷ তাঁর দাবি, প্রার্থনা চলাকালীন মাদারের প্রতিকৃতি থেকে এক আলোকরশ্মি তাঁর শরীরে ঢুকে যায়৷ আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি৷ সিস্টাররা মণিকাকে সেখান থেকে তাঁকে নিজের বিছানায় নিয়ে যান৷ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন তিনি৷ মাঝরাতে আচমকা ঘুম ভেঙে মণিকার মনে হতে থাকে তাঁর আর পেটে ব্যথা নেই৷ টিউমারের অস্তিত্বও আর নেই৷ দিব্যি সুস্থ৷ এই খবর চাউর হতে সময় নেয়নি৷ এর পর বাকিটা ইতিহাস৷

২০০৩ সালে মণিকাকে নিয়ে যাওয়া হয় ভ্যাটিকান সিটিতে৷ সেখানে তাঁর সুস্থ হওয়ার কাহিনি শোনা হয়৷ যা পরে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরা হয়৷ মণিকার ‘অলৌকিক’ সুস্থতার কারণেই আজ মাদারকে সেইন্টহুড উপাধি দিচ্ছে ভ্যাটিকান সিটি৷ অবশ্য দক্ষিণ দিনাজপুরের এই গৃহবধূর সুস্থতা নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি৷ বালুরঘাট সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসাকরা আজও দাবি করেন, তাঁদের ছ’মাসের ওষুধের কোর্স করেই সুস্থ হয়েছেন মণিকা৷

সেই সময়ে মণিকাকে চিকিৎসা করা ডা: রঞ্জন মুস্তাফি বলেন, “কোনও অলৌকিক ঘটনা নয়, আমাদের ওষুধেই রোগ নিরাময় হয়েছে মণিকার৷” মণিকা নিজেও জানেন এই বিতর্কের কথা৷ তবু এখনও নিজের বিশ্বাসে অটল তিনি৷ মাদারের সেইন্টহুড পাওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেও জোর গলায় তিনি বলেছেন, “কোনও ওষুধে নয়, মাদারের আশীর্বাদেই আজ আমি সুস্থ৷ ওই দিনের পর থেকে একদিনের জন্যও আমি অসুস্থ হইনি৷”

ভ্যাটিকান থেকে ডাক পাননি বলে আক্ষেপ নেই মণিকার৷ তবে অভিমান রয়েছে স্থানীয় চার্চের উপর৷ কারণ, এতবড় একটা খবর তাঁকে সংবাদ মাধ্যমের কাছ থেকে জানতে হয়েছিল৷ তবু সেই চার্চেই গিয়ে মাদারের জন্য আরও একবার প্রার্থনায় অংশ নেবেন৷ চোখের জল ফেলবেন৷ ১৮ বছর আগের সেই প্রার্থনার ঘটনার অনুভব, নতুন করে ফিরে আসবে মণিকার মনে৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement