সন্দীপ চক্রবর্তী: করোনা পরিস্থিতিতে এলাকা উন্নয়ন তহবিলের টাকা পাচ্ছেন না এ রাজ্যের বিধায়করা। চলতি আর্থিক বছরে এখনও পর্যন্ত দেওয়া হয়নি বিধায়ক তহবিলের (MLA Lad) কোনও টাকা। অর্থ জোগান বন্ধের ব্যাপারে স্পষ্ট লিখিত নির্দেশিকা জারি করা না হলেও মৌখিকভাবে বিধায়কদের আপাতত টাকা খরচ না করার কথা জানানো হচ্ছে। রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, অন্তত চলতি বছরে বিধায়ক তহবিলে পুরো টাকা বরাদ্দ করা হবে না।
সাংসদ তহবিলের টাকা খরচের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী করোনার প্রথম পর্যায়েই দু’বছর স্থগিত রাখার কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন। তবে এ কথা এখনও সরাসরি জানায়নি নবান্ন। কিন্তু নবান্নের এক পদস্থ আধিকারিকের বক্তব্য, করোনা মোকাবিলায় ব্যাপক খরচের পর এখনই যে সাধারণ উন্নয়নমূলক কাজ করা সম্ভব নয়, সেটা নিশ্চয়ই বিধায়করা সকলে বুঝতে পারবেন। খুব দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরলে, বিধায়ক তহবিলের টাকায় উন্নয়নমূলক কাজ শুরু করা যেতে পারে বলে প্রশাসনের বড় অংশ মনে করছে। সেই কারণেই এখনই কোনও তারিখ বা মেয়াদ জানানো হয়নি।
বিরোধী দলের বিধায়করা অবশ্য দ্রুত টাকা দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য বলেছেন, “এপ্রিল থেকে বারবার চেয়েও কোনও টাকা পাইনি। নির্দিষ্ট কারণও দেখানো হচ্ছে না। বলা হচ্ছে, অর্থের কিছু ঘাটতি রয়েছে।” এ ব্যাপারে মন্ত্রী তাপস রায়ের সঙ্গেও তিনি কথা বলেছেন বলে অশোকবাবুর বক্তব্য। তবে মার্চ পর্যন্ত সময়েও পুরো টাকা তিনি পাননি বলে অভিযোগ করেছেন। বিরোধী দলের পাশাপাশি শাসকদলের গ্রামীণ এলাকার বিধায়করাও টাকা না পাওয়ায় উন্নয়নের কাজ করতে পারছেন না বলে আক্ষেপ। পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতিতে যে রাজ্য প্রশাসনের পক্ষে তহবিলের টাকা দেওয়া কার্যত অসম্ভব, সেটাও স্বীকার করছেন।
প্রতি অর্থবর্ষে এপ্রিল থেকে মার্চ পর্যন্ত রাজ্যের বিধায়কদের বিধানসভা এলাকার উন্নয়ন তহবিলে ৬০ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়। তথ্য বলছে, মূলত গ্রামের বিধায়কদের এই টাকা খুব কাজে লাগে। রাজ্য পুরসভা ও কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, স্কুলে টিউবওয়েল তৈরিতেও অনেকে খরচ করেছেন। রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বালিগঞ্জে একটি স্কুলের সামনে ঠান্ডা জলের মেশিন বসিয়েছেন। অনেকেই কাজটির প্রশংসা করেছেন। বহু সদস্য বিধানসভায় প্রায় প্রতি অধিবেশনে তহবিলের পরিমাণ বাড়ানোর দাবি জানিয়ে থাকেন। আগের থেকে কিছুটা বাড়লেও এলাকার ‘সামান্য’ কাজ করা যায় বলে বক্তব্য বিধায়কদের অনেকের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.