দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: আঠারো শতকের মাঝামাঝি দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাটের বেণীপুর ছিল ঘন জঙ্গল। সেই সময় সুভাষগ্রাম কোদালিয়া মাহিনগরের জমিদারি ছেড়ে মগরাহাটের বেণীপুরের জঙ্গল সাফ করে বসতি স্থাপন করেছিলেন জমিদার বিজয়রাম বসু। নির্মাণ করেছিলেন প্রাসাদ। শুরু করেছিলেন দুর্গাপুজো। তার পর বহু দিন পেরিয়েছে। তবে আজও বেণীপুরের বসু বাড়িতে ধূমধাম করে পালিত হয় দুর্গাপুজো। পুজোর জন্য আলাদা করে তৈরি করা হয়েছিল বিশাল দালান। ঐতিহ্যবাহী সেই বোসবাড়ির পুজো এবার ২৮৮ বছরে পা দিল।
কালের নিয়মে জমিদারি আজ আর নেই। কিন্তু পরিবারের নতুন প্রজন্মের সদস্যরা পুজোয় (Durga Puja 2021) কখনও ভাঁটা পড়তে দেননি। সাড়ম্বরে বংশপরম্পরায় চলে আসছে দেবী আরাধনা। আগের মতোই ঐতিহ্যকেও ধরে রেখেছেন পরিবারের বর্তমান সদস্যরা। নিয়ম মেনে আজও একচালা প্রতিমার পুজো হয় বোসবাড়িতে। বংশপরম্পরায় একটি পরিবারই প্রতিমা তৈরি করে ওই পুজোর। এবারও তার অন্যথা হয়নি। ডাক পরেছে পুরোনো ঢাকিদের। পুরোহিতের ক্ষেত্রেও একই প্রথা চালু রয়েছে।
বছরের বাকি সময় যে যেখানেই থাকুক পুজোর ক’টা দিন বোসবাড়ির সকলেই গ্রামের বাড়িতে যান। এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে মিলেমিশে হইহুল্লোরে মেতে ওঠেন পরিবারের সদস্যরা। পুজোর প্রায় মাসখানেক আগে থেকেই পরিবারের তরফে তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে। পরিবারের প্রবীণ সদস্যরা বলেন, “আগে এই দালানে পুজোর সময় পরিবারের সদস্যদের ভিড়ে গমগম করত। এখন অবশিষ্ট দালানের ভগ্ন কিছু অংশ ছাড়া বাকি সব ইতিহাস। গ্রামে কয়েকজন মাত্র থাকি আমরা। পরিবারের বাকি সবাই বাইরে থাকে। তবে পুজোর সময়ে সকলেই গ্রামে চলে আসেন।”
প্রথা মেনেই বোস পারিবারের মহিলা সদস্যরাই দশমীতে দেবী বরণ করেন। তারপর চিরাচরিত নিয়ম মেনে সিঁদুর খেলায় মেতে উঠেন। পারিবারের এক সদস্যের কথায়, “প্রতি বছর এই দিনটার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করি। গত বছরের ন্যায় এবছরও করোনা বিধিনিষেধ রাখা হয়েছে। প্রত্যেকে যেমন মাস্ক পরে পুজা মণ্ডপে ঢুকবে। যাদের মুখে মাস্ক থাকবে না তাদেরকে তৎক্ষণাৎ মাস্ক দেওয়া হবে পুজো কমিটির তরফ থেকে। পাশপাশি থাকবে স্যানিটাইজার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.