বিক্রম রায় ও রাজকুমার: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মঞ্চকে পাশে নিয়েই সভা করতে হবে নরেন্দ্র মোদিকে। ফলে মাঠের দখল কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে তুমুল রাজনৈতিক চাপানউতোর কোচবিহারে। রবিবার প্রথম দফার ভোটের শেষ প্রচার। ছুটির দিন বলেই প্রচার তুঙ্গে উঠবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের। কিন্তু তার মধ্যে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে প্রধানমন্ত্রীর সভা। যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর পালটা সভা করার কথা মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেই রেখেছেন, সে কারণে একই মাঠে তড়িঘড়ি প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চের আগেই নিজেদের মঞ্চ বেঁধে ফেলেছে তৃণমূল। এই নিয়েই যত গোলমালের সূত্রপাত।
প্রধানমন্ত্রীর সভা আগে, রবিবার। আর পরেরদিন, অর্থাৎ সোমবার সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী৷ কিন্তু তার আগেই বেঁধে ফেলা হয়েছে তৃণমূলের মঞ্চ। সেই কারণেই ‘ডি জোন’ ও মূল মঞ্চ বাদে দর্শকদের জন্য বাঁধা কাঠামো সরিয়ে নিতে আবেদন করে বিজেপি। মৌখিকভাবে সেই আবেদন মেনে নিলেও, কাজ করতে টালবাহানা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলে বিজেপি। উলটে পুলিশের উর্দি পরা বাহিনী দিয়ে মঞ্চ পাহারা দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলে তারা। এই পরিস্থিতিতে আজ, শনিবার দলীয় প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিককে নিয়ে এলাকা পরিদর্শনে যান বিজেপি নেতারা। অভিযোগ, সেখানেই ক্ষোভ দেখিয়ে পুলিশকে তাড়া করেন নিশীথ। পুলিশের কাছে তাঁর পরিচয়পত্র চান। বিজেপির অভিযোগ, তা দেখাতে না পারায় ওই পুলিশ কর্মীর কোমরের বেল্টে হাত দিয়ে টেনে দেখতে চান নিশীথ। তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়। সেই নিয়েই গন্ডগোল বাঁধে। জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানায় বিজেপি।
যদিও রাজনৈতিক সৌজন্যের কথা বলে শেষ পর্যন্ত নিজেদের মঞ্চের দর্শকদের জন্য বানানো কাঠামো খুলে ফেলার কাজ শুরু করে তৃণমূল। জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ জানিয়েছেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সভার জন্য আগেই আমরা অনুমতি নিয়ে মঞ্চ বেঁধেছিলাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আসছেন, তাই সৌজন্যের খাতিরে আমরা একটা অংশ খুলে নিচ্ছি।” কিন্তু মূল মঞ্চ ও ‘ডি জোন’ খোলা হচ্ছে না। তার পাশেই তৈরি হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চ। বাংলাকে টার্গেট করেছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু সেই পর্বেই মমতার মঞ্চ পাশে নিয়ে সভা করতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে। এখনও পর্যন্ত এমন ঘটনা নজিরবিহীন। যে পরিস্থিতিকে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর দলের কাছে যথেষ্ট অস্বস্তির বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
অন্যদিকে, শেষ রবিবারের প্রচার তুঙ্গে তৃণমূলের। কোচবিহার শহরজুড়ে জেলা সভাপতিকে নিয়ে র্যালি করার কথা প্রার্থী পরেশ অধিকারীর। তার সঙ্গে ফরওয়ার্ড ব্লকের গোবিন্দ রায়ের পথসভা রয়েছে ১০টি। বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে আসছেন প্রধানমন্ত্রী। অন্যদিকে, কংগ্রেস প্রার্থী পিয়া রায়চৌধুরির সভাও রয়েছে জেলাজুড়ে। আলিপুরদুয়ারে দলীয় প্রার্থীর প্রচারে থাকছেন মুখ্যমন্ত্রী। ১১ তারিখ, প্রথম দফার ভোটে রয়েছে এই জেলাও। রবিবার ফালাকাটায় সভা করবেন মমতা। যাকে ঘিরেও তুমুল উৎসাহ রয়েছে জেলায়। এর পাশাপাশি রবিবাসরীয় প্রচারে চা-বাগানকে লক্ষ্য করছে প্রায় সব দলই। তৃণমূলের দশরথ তিরকে, বিজেপির জন বারলা দু’জনেই রবিবাসরীয় প্রচার পর্বে চা-বাগানের শ্রমিকদের টার্গেট করেছেন। দু’জনেই জানিয়েছেন, তাঁরা থাকবেন চা-বাগানে। অন্যদিকে, জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও কাল জেলায় থাকছেন। থাকছেন ওই জেলায় ভোটের দায়িত্বপ্রাপ্ত আরেক মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর সভা ছাড়াও তাঁরা দু’জনেই প্রচারে কাজে লাগাবেন প্রথম দফার আগের শেষ রবিবারকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.