প্রতীকী ছবি
অমিত সিং দেও, পুরুলিয়া: সংশোধনাগারে বসে গ্যাংয়ের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সোনার দোকানে ডাকাতির ছক! বিহারের স্বর্ণ বিপণি কেন্দ্রে ডাকাতিতে বাংলায় বিচারাধীন বন্দির যোগ! মোবাইলের সূত্র ধরে এমনই তথ্য উঠে এসেছে পুরুলিয়া জেলা পুলিশের হাতে। সংশোধনাগারে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয়েছে একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ও ব্লুটুথ ইয়ার ফোন। সরঞ্জামগুলি কী করে ভিতরে এল তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। তদন্তে পুলিশ।
এই ঘটনায় বিহারের বাসিন্দা তথা পুরুলিয়া জেলা সংশোধনাগারে বিচারাধীন বন্দি চন্দন কুমার ওরফে প্রিন্সের বিরুদ্ধে পুরুলিয়া সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সুপার স্বপনকুমার দাস বলেন, “জেলা পুলিশ সুপারের কাছ থেকে খবর পাওয়ার পর আমরা তল্লাশি চালিয়ে একটি চটের ব্যাগ থেকে মোবাইল এবং ইয়ার ফোন উদ্ধার করেছি। উদ্ধার হওয়া বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।”
২০২৩ সালের ৩০ আগস্ট শহর পুরুলিয়ায় সেনকো লুটে বিহার জেলে থাকা বন্দিদের যোগ মিলেছিল। আর এবার হল ঠিক তার উলটো। দুটি ক্ষেত্রেই কিনারা করল পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। গত সোমবার সকালে বিহারের আরাতে একটি নামী স্বর্ণ বিপণি কেন্দ্রে সশস্ত্র ৬ জনের একটি ডাকাত দল ঢুকে লুটপাট চালায়। ২৫ কোটি টাকা লুঠ করে তারা। যদিও পালানোর সময় পুলিশ ধাওয়া করে দু’পক্ষের গুলিযুদ্ধ হয়। দুই ডাকাত রক্তাক্ত জখম হয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। উদ্ধার হয় ডাকাতির অলংকার। ধৃতদের জেরা করে বিহার পুলিশ একটি মোবাইল নম্বরের হদিশ পায়। যার টাওয়ার লোকেশন থেকে জানা যায় ওই ফোনটি পুরুলিয়া জেলা সংশোধনাগারে রয়েছে।
বিহার পুলিশ যোগাযোগ করে পুরুলিয়া জেলা পুলিশের সঙ্গে। তারপরই পুলিশ বিষয়টি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষকে জানায়। সংশোধনাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২ নম্বর ওয়ার্ডে তল্লাশি চালিয়ে চটের ব্যাগ থেকে একটি সিমকার্ড লাগানো অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ও একটি ব্লুটুথ ইয়ার ফোন উদ্ধার হয়।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২২ সালে হুড়ার কেশরগড় গ্রামে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে ডাকাতির চেষ্টা হয়। ওই ঘটনায় জেলবন্দি বিহারের চন্দনকুমার-সহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে হুড়া থানার পুলিশ। চন্দন বাঁকুড়ার একটি মামলায় সেখানকার সংশোধনাগারে ছিল। চারমাস আগে তাকে পুরুলিয়া জেলা সংশোধনাগারে নিয়ে আসা হয়।
সংশোধনাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, বিচারাধীন বন্দিদের বিভিন্ন সময় পরিবারের লোকজন শুকনো খাবার, ফল ,জামাকাপড় পৌঁছে দেয়। যদিও সেগুলি ভালো করে যাচাই করে তবেই বন্দিদের হাতে দেওয়া হয়। এই ক্ষেত্রে কীভাবে মোবাইল ফোন জেলের ভেতরে এসেছে সেই বিষয়টি একদিকে যেমন পুলিশ তদন্ত করছে। অন্যদিকে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষও খোঁজ শুরু করেছে।
পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন উদ্ধার হওয়া মোবাইলের আইএমই ও সিম কার্ডের নথি যাচাই করা হচ্ছে। কোথা থেকে ওই মোবাইল ফোনটি কেনা হয়েছে, কার নামে কেনা হয়েছে সেটা দেখা হচ্ছে। পুলিশ প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছে আরার স্বর্ণ বিপণিতে ডাকাতির ঘটনার ষড়যন্ত্রে ওই মোবাইল ব্যবহার করা হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.