ছবি: প্রতীকী
রাজা দাস, বালুরঘাট: হায়দরাবাদ গণধর্ষণ কাণ্ডের পুনরাবৃত্তি দক্ষিণ দিনাজপুরে। কিশোরীকে গণধর্ষণের পর পেট্রল জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার মতো নৃশংস ঘটনার সাক্ষী রইল গঙ্গারামপুর থানা এলাকার সাফানগরের বেলঘর। এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে লাগু হয়েছে ভারতীয় সংবিধানের ৩০২ ধারা অর্থাৎ খুনের মামলা। আজ তাদের আদালতে তোলা হবে। ঘটনার প্রতিবাদে আজ সকাল থেকে ফুলবাড়ি এলাকায় ৫১২ নং জাতীয় সড়ক অবরোধ করে এলাকাবাসী থেকে স্কুলপডুয়ারা। দাবি, দ্রুত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
সোমবার বেলঘর এলাকায় ফাঁকা জমির ধারে একটি কালভার্টের নিচ থেকে উদ্ধার হয় অজ্ঞাতপরিচয় মহিলার দগ্ধ মৃতদেহ। ধর্ষণের পর, প্রমাণ লোপাটের জন্য তাকে পুড়িয়ে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করে পুলিশ। মৃতদেহটি শনাক্তকরণের পাশাপাশি দ্রুত তদন্তও শুরু হয়। সোমবার রাতেই এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করা হয়। তাদের নাম মাহাবুর মিঞা, গৌতম বর্মণ এবং পঙ্কজ বর্মণ।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুমারগঞ্জের সাফানগর থেকে গঙ্গারামপুরের অশোক গ্রাম যাওয়ার জন্য রয়েছে একটি রাস্তা। ফাঁকা জমির পাশ দিয়ে
যাওয়া রাস্তার মাঝে বেলঘর এলাকার কালভার্টটির নিচেই পড়ে ছিল দগ্ধ মৃতদেহটি। তা দেখলে বোঝা যায়, ৯০ শতাংশ অগ্নিদগ্ধ সেই মৃতদেহের পা-হাতের অংশ খুবলে খেয়েছে কোনও প্রাণী। কালভার্টের অনেকটা জায়গাজুড়ে রক্তের দাগ।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় কুমারগঞ্জ থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। যান জেলা পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত-সহ অনান্য পুলিশ আধিকারিকরা। থানা ও ঘটনাস্থলে যান বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার থেকে শুরু করে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তোরাফ হোসেন মণ্ডলও। পরে শনাক্ত করা গিয়েছে মৃতের পরিচয়। গঙ্গারামপুর থানার এলাকার উদয় গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চগ্রাম এলাকার বাসিন্দা, বছর সতেরোর স্কুলপড়ুয়া সে। সাধারণ কৃষক পরিবারের মেয়ে। বাড়ি থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে নিয়ে গিয়ে তাকে গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে অনুমান। মৃতদেহটি শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই তার পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায় তদন্তের জন্য আরজি জানানো হয়েছে।
এই ঘটনার প্রতিবাদ আজ সকাল থেকে কুমারগঞ্জের ফুলবাড়িতে ৫১২নং জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শামিল হয় স্কুলের ছাত্রছাত্রীরাও। বিশাল অবরোধের জেরে যানচলাচল ব্যাহত হয়ে পড়ে। এদিন সকালে মৃতের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। যথাযথ তদন্তের আশ্বাস দেওয়ার পাশাপাশি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অভিযোগও তুলেছেন তিনি। পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান অর্পিতা ঘোষও। তিনিও দোষীদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। ধৃত ৩ জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত করছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.